তছনছ খড়ের পালুই। নিজস্ব চিত্র।
বাড়ির বারান্দায় রাখা ছিল একটি হাঁড়ি। মাঝরাতে তাতে ঢুকে পড়েছিল একটি বিড়াল। তার শব্দে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল গৃহকর্তার। তার পরেই দরজায় কান পেতে শোনেন, কেউ যেন উঠোনে থাকা খড়ের পালুই ভাঙার চেষ্টা করছে। বাড়িতে চোর-ডাকাত পড়ল না কি! দৌড়ে ছাদে উঠে বড়জোড়ার ফুলবেড়িয়ার বাসিন্দা বাপি ঘোষ যা দেখলেন, চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। সীমানা প্রাচীর ভেঙে আস্ত দুই দাঁতাল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাড়ির উঠোনে।
রবিবার সকালে রাতের অভিজ্ঞতা শোনানোর সময়ে চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট তাঁর। বাপ্পা জানান, একটি হাতি তখন শুঁড়ের আঘাতে খড়ের পালুই ভাঙার চেষ্টা চালাচ্ছে। আর অন্যটি বাড়ির উঠোন লাগোয়া কাঁচাবাড়ির ছাউনির টালি ভাঙছে। ওই বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন বাপ্পার কাকা। বাপ্পা ফোন করে তাঁদের সতর্ক করেন, কোনও ভাবেই যেন বাড়ি থেকে না বেরোন তাঁরা। তার পরে প্রায় দু’ঘণ্টা স্ত্রী মামণি ও বছর চারেকের শিশুকে নিয়ে শীতের রাতে ছাদেই কাটান বাপ্পা। তিনি বলেন, “হাতিগুলির মেজাজ খুবই আক্রমণাত্মক ছিল। যে কোনও মুহূর্তে বাড়ির কাঠের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়তে পারে ভেবে ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলাম।”
বাপ্পা জানাচ্ছিলেন, বাড়ির উঠোনে তাণ্ডব চালানোর পরে হাতিগুলি পড়শি বাউল ঘোষের বাড়িতে গিয়ে ধানের পালুই নষ্ট করে। পরে ভোররাতে গ্রাম ছেড়ে জঙ্গলের দিকে চলে যায়। বাপ্পার কাকা সুধাময় ঘোষ, বাউলেরা বলেন, “চাষাবাদের উপরে আমরা নির্ভরশীল। হাতিতে সব ধান নষ্ট করে দিয়েছে। খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল।” বাপ্পার কথায়, “ক্ষয়ক্ষতি তো হয়েইছে, কিন্তু যে ভাবে গোটা রাত আতঙ্কে কেটেছে, তা ভোলার নয়। ছেলেটা পর্যন্ত ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে।”
বন দফতর সূত্রে খবর, বড়জোড়ার জঙ্গলে এ মুহূর্তে প্রায় ৬৯টি হাতি রয়েছে। তার মধ্যে আটটি হাতি জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লাগোয়া গ্রামে ঢুকে পড়ছে। ডিএফও (উত্তর) উমর ইমাম বলেন, “হাতিগুলিকে জঙ্গলে পাঠানোর চেষ্টা চলছে। ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়মমতো ক্ষতিপূরণ
দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy