—নিজস্ব চিত্র।
ফসল ওঠার মুখে ভারী বৃষ্টি ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র কারণে। তার জেরে এমনিতেই মাথায় হাত চাষিদের। এ বার দোসর হাতির তাণ্ডব। এই দু’য়ের জোড়া ফলায় ফসলের দফারফা অবস্থা বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর বনাঞ্চলের বাঁকাদহ রেঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ইতিমধ্যেই এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে আমন ধান থেকে শুরু করে শীতকালীন সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এখন মরিয়া হয়ে দিনরাত হাতি তাড়িয়ে কোনও ক্রমে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
বাঁকুড়ার অন্যতম কৃষিপ্রধান অঞ্চল বিষ্ণুপুরের বাঁকাদহ এলাকা। ধান থেকে শুরু করে মাচা সবজি চাষের উপরই নির্ভরশীল এলাকার হাজার হাজার কৃষক। চলতি বছর নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টিতে এমনিতেই মার খেয়েছে সবজি চাষ। ‘ডেনা’র প্রভাবে গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় ভারী বৃষ্টি হওয়ায় এখন জমিতে কেটে রাখা পাকা ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। আর এরই মাঝে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো দিন দুই আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা পেরিয়ে এলাকায় ঢুকে পড়েছে ২২টি বুনো হাতির দল। দিনের বেলায় হাতির দলের গতিবিধি স্থানীয় জঙ্গলে সীমাবদ্ধ থাকলেও সূর্য ডুবতেই খাবারের খোঁজে হাতির দল নেমে আসছে জঙ্গল লাগোয়া ধান ও সবজির জমিতে। রাতভর একরের পর একর জমির ধান ও সবজি সাবাড় করে ভোরে ফের হাতির দল গা ঢাকা দিচ্ছে জঙ্গলে। এই অবস্থায় নিরুপায় হয়ে হাতির দলের মুখ থেকে নিজেদের জমির ফসল বাঁচাতে রাতভর জমি পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষকেরা। কিন্তু তাতেও ঠেকানো যাচ্ছে না ক্ষয়ক্ষতি। ইতিমধ্যেই বাঁকাদহ রেঞ্জের অন্তর্গত খড়িডোবা, বগডহরা, জামশোলা-সহ স্থানীয় চার-পাঁচটি গ্রামের কয়েকশো বিঘা জমির ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চালিয়েছে ওই হাতির দল। স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রফিকুল মণ্ডল বলেন, ‘‘এমনিতেই দানার বৃষ্টিতে ধান ও সবজি চাষে ব্যাপক লোকসান হতে বসেছে। তার উপর হাতির দলের তাণ্ডবে ফসল ঘরে তুলতে পারব কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে।’’ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক করিমুদ্দিন বায়েন বলেন, ‘‘প্রতিদিন লোকসানের বহর যে ভাবে বাড়ছে, তাতে আমরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারব না। সরকারি ভাবে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ না দিলে আমাদের পরিবার নিয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হবে।’’
বন দফতর অবশ্য ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে। বন দফতরের বাঁকাদহ রেঞ্জের রেঞ্জ আধিকারি তপোব্রত রায় বলেন, ‘‘দু’দিন আগেই হাতির দলটি বাঁকুড়া জেলায় প্রবেশ করেছে। আমরা বন দফতরের তরফে হাতিগুলির গতিবিধি জঙ্গল এলাকায় সীমাবদ্ধ রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। তার পরেও যাঁদের ফসলহানি হচ্ছে, তাঁদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেবে বন দফতর।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy