আবার স্বমহিমায় রামলাল। —নিজস্ব চিত্র।
পাঁচ বছরের অপেক্ষা। সিংহাসনচ্যুত হয়ে একা একা বনে বাদাড়ে ঘুরতে হয়েছে। ‘চালচোর’ বদনামও জুটেছে। ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় আবর লড়াই করে ক্ষমতায় ফিরেছে রামলাল। তার পরই বাঁকুড়ার জঙ্গলে সে স্বমহিমায়। এখন রামলালের প্রতিটি পদক্ষেপের উপর নজরদারি চালাচ্ছে বাঁকুড়ার বন দফতর।
গণতন্ত্রে পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচনে শাসক বদল হয়। অথবা পুনরায় জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরে। গণতন্ত্র বুনো হাতির দলে কার্যকর না হলেও মাঝেমধ্যে তাদেরও দলপতির বদল হয়। এ বার যেমন সময় লাগল প্রায় পাঁচ বছর। বছর পাঁচেক আগে পর্যন্ত দলমা থেকে বাঁকুড়ায় আসা হাতির দলের হর্তা-কর্তা-বিধাতা ছিল একটি হাতি। স্থানীয়রা তার নাম দিয়েছিলেন রামলাল। কিন্তু বছর পাঁচেক আগে দলমা থেকে আসা নবাগত এক বিশালাকার হাতির সঙ্গে লড়াইয়ে যুঝে উঠতে না পেরে ‘পদ’ যায় রামলালের। দলপতি হয়ে ওঠে সেই নবাগত। তার পর পাঁচ বছর তার নেতৃত্বেই ছিল দলমা থেকে বাঁকুড়ায় আসা হাতির দল। রামলাল ক্ষমতা হারিয়ে গত পাঁচ বছর সে ভাবে দলের কাছাকাছি ঘেঁষতেই পারেনি। দলছুট হয়ে কখনও বাঁকুড়া, কখনও পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জঙ্গলে-জঙ্গলে ঘুরেছে সে। খাবারের অভাব ঘটলে মাঝেমধ্যেই হানা দিয়েছে লোকালয়ে। কয়েক বার তো গৃহস্থের বাড়ির দেওয়াল ভেঙে ধান-চাল লুট করে খাওয়ায় ‘চালচোর’ তকমাও পেয়েছে রামলাল। কিন্তু পাঁচ বছর অপেক্ষার পর আবার স্বমহিমায় ফিরেছে সে। কী ভাবে?
বন দফতর সূত্রে খবর, মাস তিনেক আগে বাঁকুড়ার বড়জোড়ার জঙ্গলে তৎকালীন দলপতির সঙ্গে তুমুল লড়াই হয় রামলালের। বিপক্ষ আকারে বড় এবং শক্তিশালী হলেও রামলালের মরিয়া লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয় সে। একটি দাঁত হারিয়ে পিছু হটে পাঁচ বছর রাজত্ব করা দলপতি। বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, রামলালের কাছে হেরে একা একা বাঁকুড়া ছেড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে পালিয়ে গিয়েছে সে। অন্য দিকে, বড়জোড়ার জঙ্গলে আবার রাজ করছে রামলাল। বন দফতর জানাচ্ছে, প্রায় ৫০টি হাতির দলপতির ভূমিকায় থাকা রামলাল শুধু দলের প্রতিটি হাতির গতিবিধির উপর নজরে রাখছে তাই নয়, দায়িত্ব নিয়ে সম্পূর্ণ দলটির নিরাপত্তা এবং সুরক্ষাও দিচ্ছে। বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বিভিন্ন জঙ্গলে প্রায় ৬৮টি হাতি বেশ কয়েক মাস বাইরে থাকার পর এখন ফিরতে চাইছে বড়জোড়ায়। সে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে দলের নেতৃত্বে থাকা রামলালের ‘মর্জি’। স্বাভাবিক ভাবে সমগ্র দলটির উপর নজরদারি চালাচ্ছে বন দফতর।
বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের ডিএফও ওমর ইমাম বলেন, ‘‘দলের প্রতিটি হাতির উপরেই কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। তবে যে হেতু রামলাল এই মুহূর্তে গোটা দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাই তার গতিবিধি উপর বাড়তি নজর রাখা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy