প্রতীকী ছবি।
ছেলেধরার গুজবকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল পুরুলিয়ার আনাড়া। ওই ঘটনার জেরে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলাও চলে। মারধরে আহত হন কয়েকজন পুলিশ কর্মী ও এক বৃদ্ধ। ঘটনার তদন্তে নেমে গুজব ছড়ানোয় অভিযুক্ত ময়না মাঝি নামের প্রৌঢ়াকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হামলার অভিযোগে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ধরা হয় ১৭ জনকে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো-সহ আরও কয়েকটি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে পুলিশের উপরে হামলা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার মতো জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
তবে ধৃতদের মধ্যে কয়েকজন নাবালক হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়দের একাংশ। ধৃতদের শনিবার রঘুনাথপুর আদালতে হাজির করানো হয়। চার জনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। দু’জন নাবালককে হোমে পাঠানো হয়। ময়না-সহ বাকিদের জেল হাজত হয়েছে। তবে শনিবার নতুন করে আর গণ্ডগোল হয়নি। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই এলাকায় টহল দিয়েছে পুলিশ বাহিনী।
এ দিকে গত কয়েক দিনে পুরুলিয়া জেলার কয়েকটি এলাকায় ছেলেধরা নিয়ে গুজবের জেরে ঘটে গিয়েছে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা। পুলিশের সচেতনতা প্রচারের পরেও আনাড়ায় এত বড় মাপের ঘটনায় চিন্তিত জেলা পুলিশ। আপাতত গুজব ঠেকাতে আরও প্রচারের উপরে জোর দিতে চাইছেন পুলিশ-কর্তারা। একই সঙ্গে পুজোর সময়ে মণ্ডপগুলিতেও ছেলেধরা সংক্রান্ত গুজব বন্ধে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে মণ্ডপে পুলিশ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সচেতচনতা চালায়। এ বার ছেলেধরা সন্দেহে গুজব ছড়ানো বন্ধে বিশেষ প্রচার চালানো হবে পুজো মণ্ডপে।”
ছেলেধরা সন্দেহে শুক্রবার সকালে আনাড়ায় ঝাড়খণ্ডের বোকারোর মহম্মদ নিজাম নামের এক বৃদ্ধকে বেদম মারধর করে স্থানীয় কিছু লোকজন। আগুন দেওয়া হয় তাঁর গাড়িতে। আনাড়া ফাঁড়ির পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ আছড়ে পড়ে সেখানে। দফায় দফায় গোলমাল চলে দুপুর ৩টে পর্যন্ত। তারপরে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলে পুলিশের।
নিজাম শুক্রবার দাবি করেছিলেন, ময়নার অসুস্থ মেয়েকে ঝাড়ফুঁক করেছিলেন তাঁর ‘গুরু’। সে বাবদ বকেয়া টাকা নিতে এসেছিলেন তিনি। কম টাকা দেওয়া নিয়ে তাঁদের মধ্যে বচসার মধ্যে ময়না হঠাৎ চিৎকার করে তাঁর মেয়েকে ছেলেধরা তুলে নিয়ে যাচ্ছে বলে লোকজন জড়ো করেন। তার পরেই গোলমালের শুরু। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত তদন্তে তেমনই তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে। শুক্রবার রাতে ময়নাকে পাড়া থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তবে ধৃত সতেরো জনের মধ্যে কয়েকজন নাবালক থাকায় তারা গোলমালে আদৌ যুক্ত না, গণ্ডগোল দেখতে এসে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে, সে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। জেলা পুলিশের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, যাঁদের ধরা হয়েছে, তাঁরা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত এই মর্মে নির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার পরেই ধরা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy