Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
agriculture

জমিতেই পচছে বেগুন, কপাল চাপড়াচ্ছেন জেলার চাষি

বর্তমানে দাম বেড়ে হয়েছে কেজি প্রতি ১৪/১৬ টাকা। তবুও লোকসানের কবলে পড়েছেন প্রশান্তবাবুরা। কারণ, কুয়াশা এবং বৃষ্টির পর থেকেই বেগুনে পচন দেখা দিয়েছে। উৎপাদন কমে ৮/৯ কেজিতে এসে দাঁড়িয়েছে।

খেতেই পচে গিয়েছে বেগুন। নানুরে। ছবি: কল্যাণ আচার্য

খেতেই পচে গিয়েছে বেগুন। নানুরে। ছবি: কল্যাণ আচার্য

অর্ঘ্য ঘোষ  ময়ূরেশ্বর
ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৪০
Share: Save:

বেগুন চাষ করে কেউ ভেবেছিলেন দেনা শোধ করবেন। কারও ভাবনা ছিল বাড়ির চালের খড় নামিয়ে টিন দেওয়ার। তাঁদের সব আশায় জল ঢেলে দিয়েছে সাম্প্রতিক বৃষ্টি এবং কুয়াশা। উদ্বেগজনক হারে পচন দেখা দিয়েছে বেগুনে। তাই ওই সব চাষিরা এখন কপাল চাপড়াচ্ছেন।

জেলা উদ্যানপালন দফতর এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই জেলা জুড়ে ঝিরিঝিরে বৃষ্টি, কুয়াশা এবং মেঘলা আকাশ দেখা যাচ্ছে। ওই আবহাওয়ার কারণে বেগুনে ব্যাপক হারে পচন দেখা দিয়েছে। এর ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলার বেগুন চাষিরা। কাঠা প্রতি ৫০০/৬০০ টাকা খরচ করে আষাঢ়-ভাদ্র মাসে ৩ কাঠা জমিতে বেগুন চাষ করেছিলেন ময়ূরেশ্বরের ঢেকা গ্রামের প্রশান্ত বাগদি। প্রায় সমপরিমাণ জমিতে বেগুন চাষ করেছিলেন লাভপুরের দরবারপুরের মসলেম শেখ, নানুরের আলিগ্রামে গোরাচাঁদ মেটেরা। আশ্বিন মাস থেকে সপ্তাহে ২ দিন কাঠা প্রতি ১০/১৫ কেজি করে ফলন পাচ্ছিলেন তাঁরা। দাম মিলছিল কেজি প্রতি ১০/১২ টাকা।

বর্তমানে দাম বেড়ে হয়েছে কেজি প্রতি ১৪/১৬ টাকা। তবুও লোকসানের কবলে পড়েছেন প্রশান্তবাবুরা। কারণ, কুয়াশা এবং বৃষ্টির পর থেকেই বেগুনে পচন দেখা দিয়েছে। উৎপাদন কমে ৮/৯ কেজিতে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রশান্ত বাগদি, গোরাচাঁদ মেটেরা বলছেন, ‘‘আজ যে বেগুনটা ভাল দেখে আসছি, কাল সেই বেগুন তুলতে গিয়ে দেখছি পচে গিয়েছে। কষ্ট করে লাগানো বেগুন চোখের সামনে ওই ভাবে পচে যেতে দেখে কান্না পাচ্ছে।’’ মোসলেম শেখ জানান, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বেগুন চাষ করেছিলেন। প্রতি সপ্তাহে কিস্তি দিতে হয়। এত দিন বেগুন বিক্রি করেই কিস্তির টাকা মিটে যাচ্ছিল। কিন্তু, এখন আর সেটা হচ্ছে না। নির্ধারিত দিনে ব্যাঙ্কের এজেন্ট এসে ঘরে বসে থাকছে। বাধ্য হয়ে ধার করে কিস্তি মেটাচ্ছেন তিনি।
ময়ূরেশ্বরের বহড়ার সুনীল বাগদি বলেন, ‘‘খড়ের চালের বাড়িতে বাস করি। প্রতি বছর চাল ছাওয়াতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। ভেবেছিলাম এ বার খড়ের পরিবর্তে চালে টিন দেব। সেটা আর হল না।’’

বিশ্বভারতীর উদ্যানপালন দফতরের অধ্যাপক জয়দীপ মণ্ডল বলছেন, ‘‘লক্ষণ শুনে মনে
হচ্ছে ছত্রাক ঘটিত রোগের কারণেই বেগুনের পচন দেখা দিয়েছে। তবে সাধারণত সরাসরি বৃষ্টি বা কুয়াশার জন্য ওই ধরণের পচন দেখা দেয় না। আসলে এমন আবহাওয়ায় ছত্রাকের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে কৃষি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা উচিত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Birbhum Agriculture
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy