নতুনডিতে এই রাস্তাকে ঘিরেই গ্রামবাসীর অসন্তোষ। নিজস্ব চিত্র
রেললাইন পাতা হলে বন্ধ হয়ে যাবে গ্রামের রাস্তা। এই যুক্তিতে ডিভিসির রঘুনাথপুরের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য রেললাইন পাতার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন গ্রামবাসী। দাবি উঠেছিল একটি সেতুর। মঙ্গলবার নডুনডি গ্রামে গিয়ে সেই দাবিকে সমর্থন করলেন পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি।
বিধায়ক বলেন, ‘‘এলাকার বাসিন্দাদের দাবির যৌক্তিকতা আছে। আমরা তাঁদের সঙ্গে সহমত।’’
রঘুনাথপুরে ডিভিসির তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা আসে সড়কপথে। কিন্তু ট্রাক ও ডাম্পারে যে পরিমাণ কয়লা আসে, প্রয়োজন তার থেকে অনেক বেশি। তাই দ্রুত রেলপথ তৈরি করে মালগাড়িতে কয়লা আনতে চাইছে ডিভিসি। সেই লক্ষ্যেই পাতা হচ্ছে রেললাইন।
নতুনডির বাসিন্দাদের দাবি, রেললাইন পাতা হলে সমস্যায় পড়বেন দুই গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা। সমস্যা সমাধানে সেতু তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা। রেললাইন পাতার কাজও তাঁরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ককে। মঙ্গলবার এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলেন পূর্ণচন্দ্রবাবু। গ্রামবাসীর দাবিকে ‘যুক্তিসম্মত’ বললেও রেললাইন পাতার কাজ বন্ধ করে দেওয়াকে তিনি সমর্থন করেন না বলে জানান বিধায়ক। তাঁর আশ্বাস, প্রশাসন ও ডিভিসির সঙ্গে আলোচনা করে তিনি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। তাঁর সংযোজন, ‘‘কয়েক হাজার কোটি টাকা দিয়ে প্রকল্প তৈরি করছে ডিভিসি। সেখানে সামান্য একটা সেতু তৈরি করা ওদের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়।”
গ্রামবাসীর দাবি, নতুনডি পঞ্চায়েতের নতুনডি ও বটডাঙা দুই গ্রামের সংযোগকারী রাস্তার উপর দিয়ে রেললাইন গেলে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে বটডাঙার বাসিন্দাদের আসতে হবে নতুনডির প্রাথমিক স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, রেশন দোকান এবং ব্যাঙ্কে।
কারও মৃত্যু ঘটলে নতুনডির বাসিন্দারা ওই রাস্তা দিয়েই দেহ নিয়ে শ্মশানে যান। রেললাইন পাতা হলে শ্মশানে যাওয়ার জন্য ঘুরপথে যেতে হবে। তাতে সময় নষ্ট হবে। আবার রাস্তার পাশেই নতুনডি গ্রামের বহু বাসিন্দার ধান-জমি রয়েছে। রাস্তা বন্ধ হলে চাষ করতে যেতে অসুবিধা হবে।
স্থানীয় বাসিন্দা উকিল বাউরি, রবিলাল বাউরি, শম্ভু বাউরিদের বক্তব্য, ‘‘রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে যোগাযোগের সমস্যা হবে। সে কারণেই রেললাইনের উপরে একটা সেতুর দাবি জানিয়েছি ডিভিসির কাছে। কিন্তু ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করছেন না।”
মাস দেড়েক আগে ওই এলাকায় রেললাইন পাতার কাজ শুরু করেছিল ডিভিসি। তার পরেই ওঠে সেতু তৈরির দাবি। দাবি না মেটা পর্যন্ত তাঁরা কাজ করতে দেবেন না বলে জানিয়ে দেন গ্রামবাসী। বন্ধ করে দেওয়া হয় মাটি খোঁড়ার কাজ।
প্রশাসনের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে বৈঠক করলেও জট কাটেনি। ফলে, বন্ধ রেললাইন পাতার কাজ। রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর এক পদস্থ কর্তা জানান, রেললাইনের উপরে সেতু তৈরি করার সিদ্ধান্ত ডিভিসি নিতে পারে না। সে ক্ষেত্রে রেলের অনুমতি নিতে হয়।
নতুনডির অদূরে পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের উপরে একটা রোড ওভার ব্রিজ তৈরি করছে ডিভিসি। তা হলে রেললাইনের উপরে সেতু নির্মাণ হবে না কেন, প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসী। এ প্রসঙ্গে ডিভিসি-র ওই আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উপরেই সেতু তৈরি করা হয়। মহকুমাশাসক (রঘুনাথপুর) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর বলেন, ‘‘ডিভিসি জানিয়েছে, তাদের পক্ষে সেতু তৈরি সম্ভব নয়। আমরা পূর্ত দফতরকে দিয়ে সমীক্ষা করাব। যদি তারা সেতু তৈরি সম্ভব বলে রিপোর্ট দেয়, তবে ডিভিসিকে সে কাজের জন্য বলা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy