Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
laxmi puja

Laxmi Puja 2021: হাতির হানা থেকে ফসল বাঁচাতে কোজাগরীতে গজলক্ষ্মীর পুজো করেন রামকানালি গ্রামের মানুষ

এই গ্রামে লক্ষ্মীদেবীর বাহন পেঁচা নয়, হাতি। পুজোতে লক্ষ্মীর পাশাপাশি আরাধনা করা হয় গজরাজকেও।

নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলিয়াতোড় শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২১ ২০:১৯
Share: Save:

কোজগরী লক্ষ্মী পুজোর সময় গজলক্ষ্মীর পুজো করেন বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় রেঞ্জের রামকানালি গ্রামের মানুষ। হাতির দলের হাত থেকে নিজেদের লক্ষ্মীরূপী ফসল বাঁচাতে ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোজাগরী পূর্ণিমায় গজলক্ষ্মীর পুজো করে আসছেন বাঁকুড়ার এই প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ ।

বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় রেঞ্জের জঙ্গলঘেরা গ্রাম রামকানালি। সব মিলিয়ে গ্রামে বসবাস প্রায় পঞ্চাশটি পরিবারের। সকলেই প্রায় কৃষিজীবী। গ্রামে দুর্গাপুজো হয় না। গ্রামের সবথেকে বড় উৎসব লক্ষ্মীপুজো । লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে কোজাগরী পূর্ণিমায় আত্মীয়-স্বজনে ভরে ওঠে গ্রামের প্রতিটি বাড়ি। রুজিরুটির প্রয়োজনে যাঁরা সারাবছর গ্রামের বাইরে থাকেন, তাঁরাও এসময় গ্রামে ফিরে আসেন। তিন-চার দিন ধরে চলে উৎসব । তবে এই গ্রামে প্রতিমা থেকে শুরু করে পুজোর রীতিনীতি আর পাঁচটা লক্ষ্মী পুজোর থেকে একেবারেই আলাদা।

এই গ্রামে লক্ষ্মীদেবীর বাহন পেঁচা নয়, হাতি। পুজোতে লক্ষ্মীর পাশাপাশি আরাধনা করা হয় গজরাজকেও। প্রতিমার এই বিচিত্র রূপের কারণেই একে গজলক্ষ্মীর পুজো বলে থাকেন এলাকার মানুষ । কিন্তু কেন এই ব্যাতিক্রমী পুজো?

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আজ থেকে ১২৩ বছর আগে যখন রামকানালি গ্রামে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সূচনা হয় তখন ওই গ্রামের চারিদিকে থাকা জঙ্গল আরও বেশি ঘন ছিল। সেই জঙ্গল থেকে মাঝেমধ্যেই গ্রামে হানা দিত হাতির দল । হাতির দলের হানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হত মাঠের ফসলের। আর তাই মাঠের ফসলকে নির্বিঘ্নে লক্ষ্মীরূপে নিজের খামারে তুলে আনতে গজরাজদের শান্ত করার প্রয়োজন ছিল। সে কারণেই আজ থেকে একশো তেইশ বছর আগে ধনদেবীর আরাধনার সঙ্গে গজরাজের পুজো শুরু হয় । কালক্রমে সেই লক্ষ্মীপুজোই গজলক্ষ্মী হিসাবে পরিচিতি পায় ।

রামকানালি গ্রামে গজলক্ষ্মী পুজো শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গিয়েছে । মানুষের প্রয়োজনে জঙ্গল ফিকে হলেও রামকানালি গ্রাম ও গ্রাম লাগোয়া ফসলের জমিতে হাতির উৎপাত বন্ধ হয়নি আজও। ফি-বছর খাবারের খোঁজে দল বেঁধে হাতি হানা দেয় গ্রাম লাগোয়া ফসলের জমিতে। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয় ব্যাপক । চলতি বছর রামকানালি গ্রামে গজলক্ষ্মীর পুজোর আয়োজনে যখন ব্যস্ত গ্রামের মানুষ, তখনও গ্রামের অদূরে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রায় আশিটি হাতির দল । তবু আজও কোজাগরী পুর্ণিমা এলেই রামকানালি গ্রামের মানুষ বিশ্বাসে ভর করে ভক্তিতে পুজো দিয়ে চলেন গজলক্ষ্মীর ।

স্থানীয় গ্রামবাসী প্রদীপ শিট বলেন, “আমাদের পুর্বসূরিরা বলতেন এই গজলক্ষ্মীর পুজো করলে হাতির উপদ্রব কমে। গ্রাম লাগোয়া ফসলের জমির ফসল হাতির হাত থেকে রক্ষা পায় । সেই বিশ্বাসে ভর করেই আজো আমরা গজলক্ষ্মীর পুজো চালিয়ে আসছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

laxmi puja bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy