Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2022

দেশভাগের জ্বালা ভোলায় বসাকবাড়ির পুজো

মুড়াডিহি কলোনিতে দু’শোর বেশি তাঁতি পরিবারের বাস। তাঁদের অধিকাংশই দেশভাগের পরে ছিন্নমূল হয়ে এসে এখানে বসতি স্থাপন করেন। এই পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম প্রয়াত বৃন্দাবন বসাকের পরিবার।

বসাকবাড়িতে প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

বসাকবাড়িতে প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

অর্ঘ্য ঘোষ
সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২৮
Share: Save:

যোগসূত্র ছিন্ন করে দিয়েছিল দেশ ভাগ। তবে আজও দু’বাংলাকে এক সূত্রে বেঁধে রেখেছে সাঁইথিয়া মুড়াডিহি কলোনির বসাকবাড়ির পুজো। ওই পুজোয় একাত্মতা খুঁজে পান দুই দেশে থাকা আত্মীয়রা।

সাঁইথিয়ার মুড়াডিহি কলোনিতে দু’শোর বেশি তাঁতি পরিবারের বাস। তাঁদের অধিকাংশই দেশভাগের পরে ছিন্নমূল হয়ে এসে এখানে বসতি স্থাপন করেন। এই পরিবারগুলির মধ্যে অন্যতম প্রয়াত বৃন্দাবন বসাকের পরিবার। তাঁদের বাড়ির পুজোটি এখনও দুই বাংলার মধ্যে যোগসূত্র রক্ষা করে চলেছে।

পরিবার সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রায় ১২০ বছর আগে বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ভাটরো গ্রামে বসাক পরিবারে পুজোর প্রচলন হয়। দেশ ভাগের কারণে বসাক পরিবারের সদস্যেরা দু’দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। পুজোও বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে গঙ্গা-পদ্মা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। পুজো বন্ধ হয়ে যাওয়ার আক্ষেপ ভুলতে পারেননি বসাক পরিবারের সদস্যরা।

বছর তিরিশেক আগে সাঁইথিয়ায় ফের পুজোটি চালু করেন প্রয়াত বৃন্দাবন বসাক। বর্তমানে পুজোটি হয়ে উঠেছে দুই বাংলায় ছড়িয়ে থাকা বসাক পরিবারের সদস্যের মিলনস্থল। বৃন্দাবনবাবুর ছেলে বিকাশচন্দ্র বসাক ও সুরজিৎ বসাক জানিয়েছেন, প্রায় প্রতি বছর এ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, বাংলাদেশ থেকেও আত্মীয়েরা পুজোয় অংশ নিতে আসেন। পুজোর ক’টা দিন স্মৃতিচারণ করেই কেটে যায়। একই অনুভূতি বাংলাদেশের গোবিন্দ বসাক, সুজন বসাকদেরও। তাঁরা বলেন, ‘‘পুজোয় এক সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য সারা বছর মুখিয়ে থাকি।’’

বাংলাদেশের পরিজনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য কলকাতা থেকে ছুটে আসেন দিলীপ বসাক, ডায়মন্ডহারবারের বিষ্ণুপদ বসাকেরা। তাঁরা বলেন, ‘‘শহরের পুজোর জাঁকজমক ছেড়েও আমরা সাঁইথিয়ায় পুজোয় অংশ নিতে আসি। পুজোর ক’টা দিন এক সঙ্গে কাটাতে পেরে দেশ ভাগের জ্বালা কিছুটা হলেও ভোলা যায়। আত্মিক যোগ খু্ঁজে পাই।’’

এই উদ্দেশ্যেই তাঁর স্বামী বাংলাদেশের বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুজোটি এ দেশে প্রচলন করেছিলেন বলে দাবি বৃন্দাবনবাবুর স্ত্রী মালতিদেবীর। বিয়ের পর বছর তিনেক তিনি বাংলাদেশের শ্বশুরবাড়িতে কাটিয়েছেন। দেখেছেন সেখানকার পুজোর রমরমা। বাংলাদেশের রীতি মেনে প্রতিমাতেও বিশেষত্ব রয়েছে। দেবীর বাঁ দিকে গণেশ এবং ডান দিকে কার্তিক। তিনি জানান, সেই রমরমা এখানকার পুজোয় নেই। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যখন আত্মীয়েরা আসেন, তখন সব ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়৷ সব বিভেদ রেখা মুছে যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2022 sainthia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy