নিতুড়িয়া-দুবেশ্বরী সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।
করোনার প্রকোপে বাজেট কমিয়েছে পুরুলিয়ার বহু পুজো কমিটি। জেলায় ‘থিম’-ভিত্তিক পুজোর সংখ্যাও কমেছে। এই আবহেও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জেলায় বেশ কিছু ‘থিম’-কেন্দ্রিক পুজো হচ্ছে।
পুরুলিয়া, নিতুড়িয়া, ঝালদা, রঘুনাথপুরের ওই সব পুজো উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, বাজেট কম হলেও তাঁরা ‘থিম’-ভিত্তিক মণ্ডপ তৈরি করছেন। দেখা যাচ্ছে, অনেকেই পুজো কমিটি ‘থিম’ হিসেবে বেছে নিয়েছে করোনাকে।
পুরুলিয়া সদরের শশধর গঙ্গোপাধ্য়ায় রোড সর্বজনীনের থিম ‘সংহারিণী সর্বমঙ্গলা’। মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ওই পুজোর কর্মকর্তা পারমিতা মুখোপাধ্যায় জানান, করোনা- অতিমারির প্রকোপে বিপর্যস্ত জীবন। তিনি বলেন, ‘‘সকলেই চাইছেন, এই বিপদের ছায়া থেকে দেবী আমাদের রক্ষা করুন। এই বিষয়টিকেই থিম হিসেবে আমরা মণ্ডপসজ্জায় তুলে ধরেছি।”
কুলো, ঝাঁপি, মাদুর, আলপনা দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়েছেন তাঁরা। পুরুলিয়া শহরের শরৎ সেন কম্পাউন্ডের পুজোয় দেবী হচ্ছেন ‘অভয়দাত্রী’। তাঁর দশ হাতে অস্ত্রের পরিবর্তে রয়েছে ফুল। ফুলবর্ষণ করতে দেখা যাচ্ছে দেবীকে। কাশ্মীরের মহিলারা সাধারণত যে ধরনের পোশাক পরেন, সেই পোশাকই পরে রয়েছেন দেবী। পুজো কমিটির কর্মকর্তা শুক্লা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেবী অভয় দিন। হানাহানি, রক্তপাত বন্ধ হোক। এই বার্তাই দিতে চাইছি।”
পুরুলিয়া শহরের ধীবর সমিতি ‘থিম’ করেছে জেলার পটচিত্র ও পর্যটনকে। শিল্পী রাহুল দাস জানান, প্রতিমা তৈরি হয়েছে পটচিত্রের আদলে। কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, জেলায় বহু গ্রামে পটশিল্পী রয়েছেন। তাঁদের সম্মান জানাতেই এ ভাবে প্রতিমা তৈরি হয়েছে। মণ্ডপে উদ্যোক্তারা তুলে ধরেছেন পুরুলিয়ার ঐতিহাসিক ও পর্যটন স্থলগুলিকে। রেনি রোড সর্বজনীনের ‘থিম’ বৃক্ষরোপণ। মণ্ডপসজ্জায় তারা জনজীবনে করোনার প্রকোপ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
কমিটির কর্তা জিতেন ওঝা বলেন, ‘‘করোনায় অক্সিজেনের সঙ্কট আমরা দেখেছি। নির্বিচারে বৃক্ষনিধনও দেখেছি। বৃক্ষরোপণ অক্সিজেন সঙ্কট থেকে মুক্তি দিতে পারে— এই বার্তাই দিতে চাইছি।” হুচুকপাড়া সর্বজনীনের ‘থিম’ ‘বৃষ্টিভেজা পরিবেশ’। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, এ বার বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল পুরুলিয়া শহর। সে কথা মাথায় রেখে ‘থিম’ বাছা হয়েছে। মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে প্রচুর ছাতা।
জেলার মধ্যে বড় বাজেটের বেশি সংখ্যক পুজো হয় খনি অঞ্চল নিতুড়িয়ায়। তাদের মধ্য়ে নিতুড়িয়া-দুবেশ্বরী সর্বজনীনের ‘থিম’ হচ্ছে ‘দেবী দশভূজা দনুজদলনী, করোনাসুরের ত্রাস’। গুজরাতের জামনগরের লক্ষ্মীনারায়ণ মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। দেখানো হয়েছে, মন্দিরের ভিতরে দেবী বধ করছেন তিন অসুরকে। পুজো কমিটির কর্মকর্তা নবনী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তিন অসুর হচ্ছে করোনার তিনটি তরঙ্গ।”
ভামুরিয়া গ্রামের বাথানেশ্বর সর্বজনীনের ‘থিম’ ‘দেবীর আবাহনে, আনন্দরং লাগুক প্রাণে’। পুজো উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, মণ্ডপ তৈরিতে প্লাস্টিক বর্জন করা হয়েছে। বাঁশ ও কাপড় দিয়ে খোলামেলা মণ্ডপ গড়া হয়েছে। রঘুনাথপুর শহরের মিশন রোড সর্বজনীনের ‘থিম’ ‘শিবের তাণ্ডব নৃত্য’। সামঞ্জস্য রেখে মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে শিবের কাটআউট, ত্রিশূল ও শিবলিঙ্গ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy