বিবাদের পরে। সোমবার জগদলপুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে রবিবার রাত থেকে তেতে রয়েছে ইলামবাজারে বিলাতি পঞ্চায়েতের জগদলপুর গ্রাম। স্থানীয় সূত্রের দাবি, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমালে রাতভর বোমা-গুলি চলেছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এটা গ্রাম্যবিবাদ।
স্থানীয় সূত্রে অবশ্য জানা যাচ্ছে, জগদলপুর গ্রামে তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সদস্য নাজির হোসেনের অনুগামীদের সঙ্গে প্রাক্তন বুথ সভাপতি শেখ মনোয়ারের বিবাদ দীর্ঘদিনের। শনিবার সন্ধ্যায় জগদলপুর গ্রামে বুথ কমিটি গঠনের জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ সভা ডাকা হয়েছিল। সেই সভা থেকেই বুথ সভাপতি নির্বাচন করা হত।
তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই সভায় নাজির-গোষ্ঠীর লোকজন উপস্থিত থাকলে এবং মানোয়ার গোষ্ঠীর লোকজনকে সেই সভায় অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়। অভিযোগ, সভা শেষের সময় মানোয়ার-গোষ্ঠীর লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে নাজিরের অনুগামীদের উপরে হামলা চালায়। গুরুতর আহত হন নাজির হোসেন ও শেখ ফজাই। তাঁদের ইলামবাজার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। ইলামবাজার থানার বড় পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। গ্রাম থেকে পুলিশ সরে যেতেই ফের রবিবার রাতে দুই শিবিরের সমর্থকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। গ্রামবাসীর দাবি, শীতের রাতে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পড়তে থাকে। সঙ্গে কয়েক রাউন্ড গুলিও চলে। ভাঙচুর চালানোর পাশাপশি বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাটও চালানো হয় বলে অভিযোগ।
সোমবারও গ্রামে থমথমে পরিবেশ। এ দিন গ্রামে ঢুকতেই দেখা গেল, রাস্তায় পড়ে রয়েছে পোড়া বোমার সুতলি, গুলির খোল। বেশ কয়েকটি বাড়িতে বোমার মারার দাগও স্পষ্ট। রাস্তার চারধারে পড়ে রয়েছে অজস্র ভাঙা ইটের টুকরো। গ্রামবাসীদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। চাপা উত্তেজনা থাকায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। রবিবার রাতের ঘটনার পর থেকেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লোকজন এলাকাছাড়া বলে জানা গিয়েছে।
এর আগেও বহুবার ইলামবাজারে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। শাসকদল যদিও তা মানতে নারাজ। ইলামবাজার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘ওখানে গ্রাম্য বিবাদের জেরে ঝামেলা হয়েছে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের যেন অবিলম্বে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশকে নিরপেক্ষ তদন্ত করা জন্য আবেদন জানিয়েছি।’’ যদিও জেলার বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই। তা ঢাকতে এখন গ্রাম্য বিবাদ বলে তৃণমূল থেকে প্রচার করা হচ্ছে। আমরাও পুলিশকে এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করার আবেদন জানাচ্ছি।’’
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও পক্ষের তরফ থেকে লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy