Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
১৯ মে থেকে আয়ুর্বেদ ক্লিনিকও

দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজে রোজ বসবেন চিকিৎসকেরা

বুধবার ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ২০২ তম এবং বিশ্বভারতীর যোগিক আর্ট এবং সায়েন্স বিভাগের তিন বছরের জন্মদিন উদ্‌যাপিত হয় হাসপাতালের আউটডোরে। সেখানেই বিষয়টি জানানো হয়।

বুধবার: হোমিওপ্যাথি ইউনিটে চলছে চিকিৎসা। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

বুধবার: হোমিওপ্যাথি ইউনিটে চলছে চিকিৎসা। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

বিশ্বভারতীর দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ মেমোরিয়াল হাসপাতালে এ বার থেকে সপ্তাহে তিন দিন নয়, প্রতিদিনই বসবেন চিকিৎসক।

আগামী ১৯ মে, রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে আয়ুর্বেদ ক্লিনিকও।

বুধবার ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ২০২ তম এবং বিশ্বভারতীর যোগিক আর্ট এবং সায়েন্স বিভাগের তিন বছরের জন্মদিন উদ্‌যাপিত হয় হাসপাতালের আউটডোরে। সেখানেই বিষয়টি জানানো হয়। এত দিন শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে চলা এই ঐতিহ্যময় হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে অ্যালোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার সুযোগ পেতেন বাগানপাড়া, বালিপাড়া, পিয়ার্সনপল্লি সহ আশেপাশের গ্রামের মানুষ। বিশেষ করে আদিবাসী সম্প্রদায়। এ বার থেকে তাঁরা আয়ুর্বেদ, যোগ ও নেচারোপ্যাথি, ইউনানি, সিদ্ধায় এই চার রকম পদ্ধতিতে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পাবেন। এই কথা জেনে খুশি তাঁরা। বলছেন, ‘‘রোজ ডাক্তার বসলে আমাদের খুব সুবিধা হবে।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন, দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ মেমোরিয়াল হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট কমিটির সম্পাদক কালিকারঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্মানীয় সম্পাদক অনিল কোনার। তাঁরা বলেন, ‘‘আগের মতোই শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের তত্ত্বাবধানে হোমিওপ্যাথি এবং অ্যালোপ্যাথি ইউনিট চলবে। যোগিক আর্ট ও সায়েন্স বিভাগের সঙ্গে কেন্দ্রের মিনিস্ট্রি অফ আয়ুষের

সহযোগিতায় অন্য ইউনিটগুলি চালু হবে।’’ এই উদ্দেশ্য নিয়ে হাসপাতাল তৈরির কথা ভেবেছিলেন মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীও।

বিনয়ভবন চত্বরে এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পিছনে বড় একটা ইতিহাস আছে। জানা যায়, সেই সময় শান্তিনিকেতনে হাসপাতাল বলতে ছিল শুধু পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতাল। রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শচীন্দ্রচন্দ্র মুখোপাধ্যায় তখন পিয়ার্সন মেমোরিয়ালের চিকিৎসক। ১৯৪৫ সালে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী এলেন শান্তিনিকেতনে। তিনি এই এলাকায় হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। নিজে

উদ্যোগী হয়ে হাসপাতাল তৈরির টাকা সংগ্রহ করতে শুরু করেন। সব মিলিয়ে ওই সময়ে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলেন তিনি। পুরো টাকাটা দিয়ে যান বিশ্বভারতীকে। ১৯৪৫ সালে হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হলেও ১৯৬২ সালে তৈরি হয় হাসপাতাল ভবনটি। তখন শচীন্দ্রচন্দ্রবাবুই প্রতি বুধবার এবং রবিবার রোগী দেখতেন এই হাসপাতালে। পরে

অর্থাভাবে এক সময় অ্যালোপ্যাথি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়। আরও পরে পল্লি সংগঠন বিভাগের তহবিল থেকে এক লক্ষ টাকা মঞ্জুর করে বিশ্বভারতী। সেই সুদের টাকা, অনুদানের টাকা এবং শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের মেলায় স্টলভাড়া দিয়ে যে পরিমাণ টাকা লাভ হয়, সেই টাকায় হাসপাতালের কাজ চলছিল। ২০১৩ সালে আবার অ্যালোপ্যাথি ইউনিট চালু হয়। মাঝে হাসপাতাল ভবনের

সংস্কারও করা হয়েছে। বর্তমানে সপ্তাহে তিন দিন বুধবার, শুক্রবার এবং শনিবার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক সুদীপকুমার নাগ বসেন। বুধবার এবং শুক্রবার এলোপ্যাথি চিকিৎসক সুরজিৎ সাহা বসেন।

যোগিক আর্ট এবং সায়েন্স বিভাগের প্রধান সমীরণ মণ্ডল জানান, আগামী রবিবার চিকিৎসক চঞ্চল কৈবর্ত্য আয়ুর্বেদ এবং লাইফস্টাইল ডিসিজের চিকিৎসা করবেন। মঙ্গলবার সুস্মিতা ভৌমিক ঘোষও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করবেন। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বাচ্চাদের জন্য যোগের উপরে ভিত্তি করে স্পেশ্যাল ক্লিনিক চলবে। এ ছাড়া মঙ্গলবার এবং বৃহস্পতিবার ইউনানি, সিদ্ধায়, যোগ এবং নেচারোপ্যাথির ক্লিনিক চালানোর জন্য আয়ুষের কাছে আবেদন জানানো হবে। বিভাগের পড়ুয়ারা ইন্টার্নশিপ করার সুযোগও পাবেন এই হাসপাতাল থেকেই। সমীরণবাবু বলেন, ‘‘উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কাছে আবেদন জানাতেই বিষয়টি নিয়ে উৎসাহী হয়েছিলেন। অনুমোদনও মিলে যায়। অধ্যক্ষ সাগরিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সহায়তা করেছেন। শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কাজ যেমন চলত তেমনই চলবে। আমরা শুধু বাকি দিনগুলো কাজে লাগাব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dinabandhu Andrews College Doctor Ayurvedic Clinic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE