বিতর্কে কাজল শেখ। — ফাইল চিত্র।
কাজল শেখের একটা মন্তব্য জেলা তৃণমূলে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। জেল থেকেই দল চালাচ্ছেন অনুব্রত মণ্ডল, কার্যত এমনই দাবি করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন নানুর ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি কাজল। সদ্য দলের কোর কমিটির সদস্যপদ পেয়েও কমিটির বৈঠক না-হওয়ায় এবং তাঁকে ‘ব্রাত্য’ করে রাখা হচ্ছে মনে করে কাজল ক্ষুব্ধ বলে দল সূত্রে জানা যাচ্ছে।
নানুরের উচকরণ বাসস্ট্যান্ডে দলীয় রবিবার একটি কর্মসূচির পরে কাজল বলেন, ‘‘বিকাশ রায়চৌধুরী (সভাধিপতি) বলেছেন, উনি কেষ্টদার পরামর্শ মতো চলছেন। হয়তো বিকাশদার সঙ্গে কেষ্টদার সঙ্গে হয়তো ফোনে কথাবার্তা হচ্ছে। তাঁর ফোন চেক করলে বোঝা যাবে।’’ এই মন্তব্যে দলে কোর কমিটির মধ্যেই তাল কেটেছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। চর্চা চলছে, কাজলকে কেউ ইন্ধন দিচ্ছেন কি না, তা নিয়েও। প্রকাশ্যে জেলার শীর্ষ নেতারা এই নিয়ে বিশেষ কিছু বলছেন না। বিশেষ যেখানে গত ৩০ জানুয়ারি বোলপুরের রাঙাবিতানে জেলার বাছাই নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে কোর কমিটিতে কাজলকে নেওয়ার নির্দেশে দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চার বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, অভিজিৎ সিংহ, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দ্রনাথ সিংহের সঙ্গেই কোর কমিটিতে মমতার নির্দেশে জায়গা পান দুই সাংসদ অসিত মাল ও শতাব্দী রায় এবং জেলার রাজনীতিতে বরাবর অনুব্রতের বিরোধী শিবিরের বলে পরিচিত কাজল শেখ। কিন্তু, কোর কমিটির বৈঠক না-হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে শনিবার বোলপুরে জেলা কমিটির বৈঠক থেকে মাঝপথেই বেরিয়ে যান কাজল। এর পরেই রবিবারের ওই মন্তব্য! সে দিনই ময়ূরেশ্বরের সভায় বিকাশ রায়চৌধুরীকে আলিঙ্গন করে ছবি তুলতে দেখা গিয়েছে কাজলকে।কিন্তু, জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রতকে জড়িয়ে দলের কোর কমিটির এক সদস্যের এমন মন্তব্যকে ঘিরে অস্বস্তি কাটছে না। কোর কমিটির সদস্যদের একাংশ একে ‘দলবিরোধী’ বলেই মনে করছেন। এমন মন্তব্য দলকে বিপাকে ফেলবে বলেইতাঁদের মত।
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, সোমবার বিধানসভা অধিবেশনের পরে পরিস্থিতি জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন কোর কমিটির আহ্বায়ক, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ। কিন্তু, সেই সাক্ষাৎ নিয়ে বা কাজলের মন্তব্য নিয়ে এ দিন কিছু বলতে চাননি তিনি। বিকাশের বক্তব্য, ‘‘দলে আলোচনা হবে। এই বিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করছি না।’’ যদিও এ দিনই মাড়গ্রামে গিয়ে সাংসদ শতাব্দী বলেছেন, কাজল শেখের ‘সঠিক পথে’ যাওয়া উচিত। তাঁর কথায়, ‘‘বারবার রাগ হচ্ছে কেন? কী জন্য (কাজল) এটা করছেন এবং ওঁর কী সমস্যা আছে, সে ব্যাপারে ওঁর সঙ্গে কথা বলব।’’
অন্য দিকে, কাজলের মন্তব্য সমর্থন না-করলেও এই ঘটনা ঘটার নেপথ্যে কিছু কারণকে দুষেছেন আর এক নেতা। তিনি বলছেন, ‘‘নিজে জেলায় দল দেখবেন বলার পাশাপাশি কোর কমিটি সাত দিন পর পর নিজেদের মধ্যে বসে আলোচনা করবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন দলনেত্রী। সমস্যা হলে ফিরহাদ হাকিমকে জানাতে বলেছিলেন।কিন্তু বাস্তবে বিধানসভা অধিবেশনের দোহাই দিয়ে নেত্রী যাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে একবারও কোর কমিটির বৈঠক হল না। কাজলের হয়তো মনে হয়েছে তাঁকে দূরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। অন্য কারও নির্দেশই হয়তো চলছে দল।’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের আর এক শীর্ষ নেতাও বলেন, ‘‘যে-দিন থেকে অনুব্রত মণ্ডল জেলে গিয়েছেন, সে-দিন থেকে তাঁর কে কত কাছের লোক সেটা প্রমাণের একটা প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল জেলা নেতাদের একাংশের মধ্যে। কিন্তু, অনুব্রতের অনুপস্থিতিতে যাদের হাল ধরার কথা, সেই কোর কমিটির বৈঠক করা হয়নি মুখ্যমন্ত্রী বলে যাওয়ার পরেও। সদস্যরা তো প্রত্যেকেই সমান। ফলে, কারও ক্ষোভথাকতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy