ভদ্রপুর গ্রামে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন জেলাশাসক বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা উপভোক্তাদের বাড়ি পরিদর্শন করতে গিয়ে অন্য ভূমিকায় দেখা গেল বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে। পাকা বাড়ির মালিকদের অনুরোধ করে ও বুঝিয়ে তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এলকাবাসীর একাংশ জানান, বুধবার নলহাটি ২ ব্লকে ভদ্রপুর গ্রামে সরেজমিনে আবাস যোজনার তদন্তে এসেছিলেন জেলাশাসক বিধান রায়। সঙ্গে ছিলেন জেলার অন্য আধিকারিকেরা এবং বিডিও (নলহাটি ২) হুমায়ুন চৌধুরী। জেলাশাসককে পেয়ে দুঃখের কথা শোনালেন আবাস যোজনায় নাম না থাকা বহু মানুষজন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘অন্য ভূমিকায় বহু বছর পরে দেখতে পেলাম জেলাশাসককে।’’
স্থানীয়েরা জানান, যে সমস্ত উপভোক্তার পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনায় নাম আছে, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জেলাশাসক প্রশ্ন করেন, আপনারা আবাস যোজনায় ঘর পাওয়ার যোগ্য কি? অধিকাংশ উপভোক্তা এক কথায় জানান না। তার পরে জেলাশাসক তাঁদের বুঝিয়ে বলেন, ‘‘আপনাদের প্ৰাকৃতিক বিপর্যয়ের সময় চিন্তা হয় না। কারণ, মাথার উপরে কংক্রিটের ছাদ রয়েছে। এক বার ভেবে দেখেছেন, আপনাদের পাড়ায় অনেকের মাটির বাড়িতে ছাউনি ঠিকঠাক নেই। তাঁদের জন্য চিন্তা হয় না? আপনার বাড়ির জন্য আবেদন না করলে পরবর্তীতে তাঁরা সুবিধে পেতে পারেন। তা হলে আপনার আবাস যোজনার বাড়ি নেবেন?’’ অনেকেই উত্তর দিয়েছেন, ‘‘আমার বদলে তাঁদের বাড়ি হলে কোনও অসুবিধে নেই।’’ প্রশাসনের এই ভূমিকায় খুশি দুঃস্থ বাসিন্দারা।
ভদ্রপুরের বাসিন্দা সমর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে এ দিন হাজির হন জেলাশাসক। সময়। বলেন, ‘‘তালিকা করার সময়ে আমার কাচা বাড়ি ছিল। নিজে পাকা বাড়ি করেছি। সমীক্ষার সময়ে নাম বাদ যায়। এ নিয়ে একটু হলেও ক্ষোভ ছিল। জেলাশাসক যে ভাবে বোঝালেন তাতে আর ক্ষোভ নেই।’’ আর এক উপভোক্তা মায়া মুখোপাধ্যায়ের ছেলে সরকারি চাকরি পেয়েছেন বছরখানেক হল। তাঁর বাড়িতেও হাজির হন জেলাশাসক। তিনি বলেন, ‘‘জেলাশাসকের অনুরোধে তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে রাজি হয়েছি। অন্যকে সুযোগ করে দেওয়া আমাদের কর্তব্য।’’
অনেক পঞ্চায়েত সদস্যের নাম তালিকায় থাকা প্রসঙ্গে জেলাশাসক বলেন, ‘‘সকল পঞ্চায়েত সদস্যর যে পাকা বাড়ি আছে এমন নয়। সমীক্ষায় যোগ্য হলে তাঁরা নিশ্চয় বাড়ি পাবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যে সমস্ত উপভোক্তার পাকা বাড়ি রয়েছে তাঁদের ঠিক মতো বুঝিয়ে বললে সমীক্ষার দরকার হবে না। তালিকায় নাম দেখে তাঁরা নিজেরাই বিডিও অফিসে গিয়ে তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাখ্যান করবেন। এই আশা জেলাবাসীর কাছে করাযেতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy