Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Pous Mela

কবি-ই ‘কোণঠাসা’ পৌষমেলার তোরণে

তোরণ ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। সমাজমাধ্যমে পৌষমেলার তোরণের ছবি পোস্ট করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অনেকে।

 বিকল্প পৌষমেলার তোরণ। ফাইল চিত্র

বিকল্প পৌষমেলার তোরণ। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৮
Share: Save:

বিশ্বভারতী পৌষমেলা না করায় প্রচুর সমালোচনা হয়েছে, বিতর্ক বেধেছে। এ বার বিকল্প পৌষমেলার আয়োজনেও আঁচ পড়ল বিতর্কের। বিকল্প পৌষমেলার তোরণে শাসক দল তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের ভিড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হারিয়ে গিয়েছেন বলে সমাজমাধ্যমে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বোলপুরে বিজেপির প্রচারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন এসেছিলেন, তখন সেই প্রচারের হোর্ডিংয়েও রবীন্দ্রনাথের ছবি কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এ বারও পৌষমেলা না করায় জেলা প্রশাসন, বোলপুর পুরসভা, বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ ও বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির যৌথ উদ্যোগে বোলপুর ডাকবাংলো মাঠে ২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় বিকল্প পৌষমেলা। মেলা দেখতে আসার জন্য স্বাগত জানিয়ে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ফ্লেক্স দিয়ে তোরণ তৈরি করে বোলপুর পুরসভা ও বীরভূম জেলা তৃণমূল কমিটি। সেখানে রবীন্দ্রনাথের ছবি ছোট করে ফ্লেক্সের উপরে লাগানো হলেও গোটা ফ্লেক্স জুড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট), রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিকাশ রায়চৌধুরীর মতো নেতাদের ছবি বড় আকারে দেওয়া হয়। সৌজন্যে কোথাও দেওয়া হয়েছে বীরভূম জেলা পরিষদ, কোথাও আবার বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির নাম।

এই তোরণ ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। সমাজমাধ্যমে পৌষমেলার তোরণের ছবি পোস্ট করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন অনেকে। এক জন কটাক্ষের সুরে লিখেছেন “পৌষমেলা। দেখে ভাল লাগলো যে রবীন্দ্রনাথের মতন তুচ্ছ মানুষও বাদ যাননি।” ঘটনায় আশ্রমিক থেকে শুরু করে পড়ুয়া, রবীন্দ্র অনুরাগী মানুষ সকলেই ক্ষুব্ধ। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, “এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। যত দিন যাচ্ছে শান্তিনিকেতন ধীরে ধীরে উচ্ছেদ হচ্ছে আর রাজনৈতিক নেতাদের প্রাধান্য বাড়ছে।”

২০২০ সালে বিজেপির প্রচারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বীরভূম সফর ঘিরে বোলপুর শান্তিনিকেতনে পোস্টার দেওয়াকে কেন্দ্র করেও একই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। অমিত শাহ ও অনুপম হাজরার বড় ছবির মাঝে ছিল রবীন্দ্রনাথের মুখের ছোট আকারের রেখাচিত্র। সেই সময় তৃণমূলের পক্ষ থেকে সমাজমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো হয়েছিল। এ বার তৃণমূলের হোর্ডিং নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

রাজ্যের মন্ত্রী তখা বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিংহ অবশ্য বলেন, “রবি ঠাকুর আমাদের সবার মাথার উপরে আছেন। রবীন্দ্রনাথকে কোথাও ছোট করা হয়নি। অনেক জায়গায় রবি ঠাকুরের ছবি দিয়ে বড় বড় ব্যানারও দেওয়া হয়েছিল। বিতর্ক ঠিক নয়। আমরা রবীন্দ্রনাথকে যথাযোগ্য সম্মান জানিয়েই মেলা করেছি।”

অন্য দিকে, রবীন্দ্রনাথ ও শান্তিনিকেতনকে ঘিরে কুরুচিকর মন্তব্যের অভিযোগ তুলে এক ইউটিউবারের বিরুদ্ধে শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন বোলপুর শান্তিনিকেতনের কিছু বাসিন্দা। অভিযোগকারীদের তরফে সোমনাথ ঘোষ, শিবম রায়রা বলেন, “রবীন্দ্রনাথ এবং শান্তিনিকেতন সম্পর্কে ওই ইউটিউবার যে ভাষা প্রয়োগ করেছেন তা আমরা শান্তিনিকেতনবাসী হিসেবে মেনে নিতে পারছি না। এর জন্য ওই ইউটিউবারকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে করা আপত্তিকর ভিডিয়ো মুছে ফেলতে হবে। তা না হলে আগামী দিনে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব।” বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয় বলে তিনি জানান।

অন্য বিষয়গুলি:

Pous Mela Shantiniketan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy