Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Birsa Munda

মূর্তি বিরসারই, দাবি দিলীপের

বাঁকুড়ার মূর্তি-রাজনীতি নতুন করে উস্কে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৫০
Share: Save:

বাঁকুড়ার মূর্তি-রাজনীতি নতুন করে উস্কে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রবিবার ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া ব্লকের মহাপাল স্কুল মাঠে তিনি বলেন, ‘‘বিরসা মুন্ডাকে বলছেন শিকারি। দিদি আমাদের বিরসা মুন্ডাকে চেনাচ্ছেন। আমার বাড়ি থেকে বেরোলে এখানেও বিরসা চক আছে। ঝাড়গ্রামেও বিরসাচক, সিধো-কানহো চক আছে। আমাদের চেনাতে হবে না আদিবাসী মহাপুরুষদের। আমরা জানি। আমরা তো ভগবান বিরসা মুন্ডা বলি।’’

তিনি দাবি করেন, গত ৫ নভেম্বর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফরের সময়ে বাঁকুড়ার যেখানে বিরসা মুন্ডার ছবি রেখে তাঁরা মালা দেন, সেই জায়গাটার ‘বিরসা চক’ নামকরণ করেছিল তৃণমূলের পরিচালনাধীন জেলা পরিষদ। দিলীপের দাবি, ‘‘সেখানে বিরসা মুন্ডার ছোট মূর্তি ছিল। সেই মূর্তি সরিয়ে ওরাই বড় মূর্তি বসিয়েছে। তাঁকে আমরা সম্মান জানালাম। এখন ওরাই বলছে ওই মূর্তি বিরসার নয়, সেটি নাকি শিকারির মূর্তি। ওঁরা জানেন না আদিবাসী ভাইবোনেদের ‘সেন্টিমেন্ট’। জঙ্গলমহলের মানুষ আপনাদের কাছ থেকে কিছু চায় না। শুধু অপমান করেন কেন? এর জবাব দিতে হবে।’’

ঘটনা হল, দলীয় কর্মসূচিতে বাঁকুড়ায় এসেছিলেন শাহ। তাঁর দলের তরফে শহর লাগোয়া পোয়াবাগান এলাকায় একটি আদিবাসী পুরুষের আদলে গড়া মূর্তিকে বিরসা মুন্ডার মূর্তি দাবি করে সেখানে শাহকে দিয়ে মাল্যদানের ব্যবস্থা করা হয়। ওই দিন সকালেই একটি আদিবাসী সংগঠনের কর্তারা দাবি করেন, মূর্তিটি বিরসা মুন্ডার নয়। এরপরেই ওই মূর্তির সামনে বিরসা মুন্ডার ছবি রেখে সেখানে মাল্যদানের ব্যবস্থা করা হয়।

শাহের কর্মসূচির পরের দিনই তৃণমূলের জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে ওই মূর্তি গঙ্গাজল ও দুধ দিয়ে ‘শুদ্ধকরণ’ করা হয়। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেন, মূর্তিটি বিরসা মুন্ডার না হলেও শাহের স্পর্শে সেটি ‘অশুদ্ধ’ হয়েছিল বলেই আদিবাসী মানুষজন ‘শুদ্ধকরণ’ করেছেন। বিরসা মুন্ডার সুউচ্চ মূর্তি গড়ার কথা ঘোষণা করেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

এ দিকে তৃণমূলের ওই কর্মসূচিকে আদিবাসী সংস্কৃতির অপমান বলে দাবি করে বিজেপির জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে ফের ওই মূর্তিকে গোবর জল দিয়ে ‘শুদ্ধকরণ’ করা হয়। এরপরেই বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করে, দুধ-গঙ্গাজল দিয়ে শুদ্ধকরণের রীতি আদিবাসী প্রথায় নেই। তাই ঠিক পদ্ধতি মেনে মূর্তিটি শুদ্ধকরণ করা হল। বিরসা মুন্ডার মূর্তি নিয়ে বিতর্কে বিরক্ত হয়ে আদিবাসী সংগঠন পোস্টারও দেয়।

জেলা সফরে এসে মূর্তি-বিতর্ক নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে ছুটি ঘোষণাও করেন তিনি। এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় আদিবাসী সমাজ।

এ দিন ‘ভারত জাকাত মাজি পারগানা মহল’-এর বাঁকুড়া জেলা নেতা সনগিরি হেমব্রম দাবি করেন, ‘‘পোয়াবাগানের ওই মূর্তি বিরসা মুন্ডার নয়।’’ রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল সভাপতি শ্যামল সাঁতরা দাবি করেন, ‘‘পোয়াবাগানের ওই মূর্তি ভগবান বিরসা মুন্ডার নয়। এটা আমরা নই, আদিবাসী মানুষজন বলছেন। বিজেপির নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন আদিবাসী মানুষজন। আমরা তাঁদের সমর্থন করছি।’’

যদিও বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র দাবি করেন, ‘‘আদিবাসী মানুষের সমর্থন অনেক আগেই হারিয়েছে তৃণমূল। ভোটেই তা দেখতে পাবেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Birsa Munda Dilip ghosh BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy