Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বন্ধুদের মুখে পড়া শুনেই ৩৩৭

প্রায় একশো শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী দুবরাজপুরের বালিজুড়িমের সোমনাথ দাসের প্রাপ্ত নম্বর ৩৩৭। বালিজুড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় ভট্টাচার্য মনে করেন, ‘‘৬৬ শতাংশ নম্বর আহামরি কিছু নয়।

লড়াই: সোমনাথ। নিজস্ব চিত্র

লড়াই: সোমনাথ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৭ ০১:৫৫
Share: Save:

প্রায় একশো শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী দুবরাজপুরের বালিজুড়িমের সোমনাথ দাসের প্রাপ্ত নম্বর ৩৩৭। বালিজুড়ি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মলয় ভট্টাচার্য মনে করেন, ‘‘৬৬ শতাংশ নম্বর আহামরি কিছু নয়। কিন্তু ওর প্রতিবন্ধকতা, পরিবারের অবস্থা দেখলে এই ফল অসাধ্য বলে মানতেই হবে।’’

বালিজুড়ির দাসপাড়ায় সোমনাথদের পরিবারে চার জন সদস্য। বাবা কানাই দাস এবং ভাই গোপীনাথ জন্মান্ধ। সোমনাথ নিজেও দৃষ্টিহীন। শুধু একটা আলোর আভাস দেখতে দু’চোখে। বাকি সব ঝাপসা। পরিবার চলে সোমনাথের মা পূর্ণিমা দাসের পরিশ্রমে। কখনও ঘুঁটে দেওয়া, কখনও মাঠে কাজ। তারই মাঝে ইটভাটায় কাজ করে পরিবারের চার সদস্যের জন্য দু’বেলা দু’মুঠো অন্নসংস্থান করেন পূর্ণিমাদেবী। স্বামীর পাশাপাশি দুই সন্তান জন্মের পর থেকেই দৃষ্টিহীন হওয়ায় মন ভেঙে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু ছেলেরা লেখাপড়া শিখুক চাইতেন মা।

এক্ষেত্রে সুবিধে ছিল বালিজুড়ি গ্রামেই উচ্চবিদ্যালয় থাকা। চেয়েচিন্তে বই নিয়ে পড়েছে সোমনাথ। সাহায্য করেছেন স্কুল শিক্ষক, পড়শিরাও। ভাই গোপীনাথ অষ্টম শ্রেণির পর আর পড়াশোনা করতে পারেনি। কিন্তু মায়ের দুর্দশা, পরিবারের অবস্থা পাল্টাতে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হবে— এই সারসত্যটা বুঝে গিয়েছিল সোমনাথ। তাতেই মাটি কামড়ে পড়ে থাকা। কিন্তু পড়াশোনা সে করবে কী ভাবে। কানে শোনার জন্য দামী যন্ত্র কেনার সামর্থ্য তার ছিল না। সোমনাথের কথায়, ‘‘এই সময় পাশে পেয়েছিলাম পাড়ার ছেলেদের। যে যখন পেরেছে, এসে একবার করে আমার বইগুলো রিডিং পড়ে দিয়েছে। একটা সস্তার মোবাইল ফোনে সেটা রেকর্ড করেই যেটুকু প্রস্তুতি নিতে পেরেছি।’’ সোমনাথের ইচ্ছে, কলেজে ভর্তি হয়ে যে করেই হোক পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার। যাতে রোজগার করে পরিবারের কষ্ট কিছুটা কমাতে পারে।

এখানেই সব হিসেব গুলিয়ে যাচ্ছে তার। সবচেয়ে কাছের হেতমপুর কৃষ্ণচন্দ্র কলেজও বাড়ি থেকে ৮কিমি দূরে। প্রতিদিন সে কী ভাবে কলেজে যাবে? পড়াশোনা, থাকা, খাওয়ার খরচই বা জোগাবে কে?

অন্য বিষয়গুলি:

Differently abled Passed HS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy