মুখোমুখি: গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলছেন তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। শনিবার নলহাটির পাখা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
প্রায় দু’মাস ধরে ‘দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি’তে নিজের লোকসভা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরছেন বীরভূমের তৃণমূল সংসদ শতাব্দী রায়। পানীয় জল, রাস্তা সহ-নানা দাবি, অভিযোগের পাশাপাশি, ‘ক্ষোভের’ মুখেও পড়তে হচ্ছিল তাঁকে। শনিবারও নলহাটি ১ ব্লকের বড়লা গ্রাম পঞ্চায়েতেও একই দৃশ্য দেখা গেল। যদিও শতাব্দীর দাবি, এ যাবৎ পাওয়া অভিযোগের ৭০ শতাংশের সমাধান হয়েছে।
‘দিদির দূত’ হয়ে এ দিন নলহািটর পাখা গ্রামে যান শতাব্দী। সেখানে শেখ বকুল নামে এক তৃণমূল কর্মী বলেন, ‘‘আপনারা ভোটের সময় আসছেন। তার পরে আর কিছু হচ্ছে না।’’ তাঁকে মৃদু ধমক দিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘‘বাজে কথা বলবে না। তোমার কথা শুনব না। তোমায় কথার কথার উত্তর দেব না।’’ কিন্তু একই সমস্যা নিয়ে সরব হন মহিলারাও। তাঁরাও জানান, লাইন পাতা হলেও জল আসেনি। নলকূপও খারাপ। পাশের গ্রাম জল পাচ্ছে। শতাব্দী তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘পাশের গ্রাম জল পাচ্ছে তোমরা পাচ্ছ না! ভোট দিয়েছিলে?’’ মহিলারা একসঙ্গে জানান, ভোট শতাব্দীকেই দিয়েছেন। পানীয় জলের সঙ্গে ভোটের প্রসঙ্গ টেনে কি তিনি বিতর্ক তৈরি করলেন? শতাব্দী উত্তর, ‘‘মজার ছলে বলা কথার অন্য মানে খুঁজবেন না।’’
তবে এমন অতীতেও হয়েছে। ১৩ জানুয়ারির হাঁসন বিধানসভার মেলেরডাঙা গ্রামে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তিনি। দাবি ছিল, মেলেরডাঙা থেকে মাড়গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ছ’কিলোমিটার রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি পালিত হয়নি। দু’মাসের মধ্যে সমস্যা মেটার কথা নয়, তা হয়ওনি। তবে সূত্রের খবর, রাস্তাটি না কি জেলা পরিষদ করবে।
২২ জানুয়ারি, সাঁইথিয়া বিধানসভার চরিচা যাওয়ার পথে মহম্মদবাজার পঞ্চায়েতের ফুল্লাইপুর গ্রামেও পানীয় জলের সমস্যা মেটানোর দাবি এবং আবাস নিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন সাংসদ। সে সমস্যাও এখনও মেটেনি।
২৭ জানুয়ারি এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি খয়রাশোলের বড়ারা এবং পারশুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতে যান শতাব্দী। সেখানে কাঁকরতলা থেকে শিরা ভায়া বিনোদপুর দু’কিলোমিটার পিচ রাস্তা পিচ রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন গ্রামবাসী। পারশুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের নবসন গ্রাম থেকে বিনুই ভেলেনি হয়ে জামালপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। দু’টি রাস্তাই নাকি সরকারের ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে ধরা হয়েছে। দরপত্রও ডাকা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি সাঁইথিয়া বিধানসভার পুরাতনগ্রাম পঞ্চায়েতের মকদমনগরে গিয়ে পানীয় জলের সঙ্কটের কথা শুনেছিলেন সাংসদ। সে সমস্যার সমাধান হয়নি।
সিপিএম ও বিজেপির অভিযোগ, শাসক দল সারা বছরে লুটের সঙ্গে যুক্ত। প্রকল্পের সুবিধা দিতে ভুলে গিয়েছে। তাই বিক্ষোভ হচ্ছে। যদিও শতাব্দী জানান, যেখানে জলের সমস্যার অভিযোগ পেয়েছেন, সেগুলি নিয়ে বিভাগীয় মন্ত্রী এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা মিটে যাবে। রাজ্য সরকারের পথশ্রী প্রকল্পে বহু রাস্তা ধরা হয়েছে। রাস্তার সমস্যাও মিটবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শুধু বীরভূম লোকসভা এলাকা নয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গোটা জেলায় ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে ২০০ বেশি রাস্তার কাজ হবে। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৮০ কোটি টাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy