ফাইল চিত্র।
জোর করে নয়, এলাকার মানুষের আস্থা অর্জন করে তবে খনির কাজ এগোনোর কথা একাধিকবার বলেছে প্রশাসন। মহম্মদবাজারের প্রস্তাবিত খনি নিয়ে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের সরকারি প্যাকেজ ঘোষণার সময়েও তা বলা হয়েছে। এ বার খনি এলাকার আবেদনকারীকে চাকরির নিয়োগ পত্র দিয়ে সেই আস্থা আরও বাড়িয়ে নিতে তৎপর হচ্ছে জেলা প্রশাসন।
বীরভূম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আবেদন খতিয়ে দেখে খুব দ্রুত চাকরির নিয়োগ পত্র হাতে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যাঁদের আবেদনে ভুলক্রুটি রয়েছে বা তথ্য কম আছে সেগুলি খুঁটিয়ে সংশোধনের কাজ চলছে। নিয়োগপত্র কবে দেওয়া হবে স্পষ্ট করেননি জেলাশাসক বিধান রায়। তিনি শুধু বলেন, ‘‘এটুকু বলছি সম্পূর্ণ বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক ভাবে এগোচ্ছে।’’
খনি বিরোধী স্বরের মধ্যেও এই ঘোষণায় সাড়া মিলতে শুরু করে। সিউড়ি লাগোয়া বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে আবদারপুর অতিথি নিবাসে খনি গড়ার নোডাল এজেন্সির কার্যালয়ে এই পর্যন্ত ১১৬৭টি পরিবার আবেদন করেছে। চাকরির আবেদন পত্র পরিবারের কর্তার থেকে স্বঘোষণা পত্র, পরিবার ও জমি সংক্রান্ত তথ্যও জমা পড়ছে।
গত মাসের শেষ ভাগে সংবাদ মাধ্যমকে ডেকে প্রস্তাবিত খনি এলাকার জন্য তিন ধরনের আবেদন পত্র নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন জেলাশাসক। সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সুপার। তখন বলা হয়েছিল, একটি পরিবারের কোন সদস্য চাকরি করতে চান, সেই ব্যাপারে পরিবারের কর্তা একটি স্বঘোষণা পত্র দেবেন। যে সদস্যের কথা বলা হয়েছে, তিনি চাকরির জন্য আবেদন করবেন সরকারের কাছে। তৃতীয়ত, একটি পরিবারের সদস্য সংখ্যা, অর্থনৈতিক অবস্থা ও জমি বাড়ি সংক্রান্ত বিবরণের জন্য পৃথক ফর্ম থাকবে। সঙ্গে আহ্বান ছিল প্রস্তাবিত খনি এলাকায় মানুষ, যাঁরা সরকারি এই প্রকল্পে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন, তাঁদের জন্যই আবেদন পত্র।
স্থানীয় হিংলো পঞ্চায়েত ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যে অংশ থেকে প্রস্তাবিত খনির কাজে হাত পড়ার কথা, সেখানে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা কমবেশি সাড়ে পাঁচশো। সেই দেওয়ানগঞ্জ, হরিণশিঙায় আবেদন করেছেন ৪৬৮টি পরিবার। সেখানে শুধু সাধারণ নয়, বড় সংখ্যায় আদিবাসী ও সংখ্যালঘু পরিবার রয়েছে।
তাঁদের এক জন দেওয়ানগঞ্জের ছুতোর টুডু। চার সদস্যের পরিবারে কাঠা ছয়েক জমিতে বসবাস করেন। পেশা চাষাবাদ। ওঁর ছেলে জুনিয়র কন্সস্টেবল পদে আবেদন করে দিয়েছেন। কেন্দ্রপাহাড়ি গ্রামের পাথর শ্রমিক দেবাশিস রাউতও আবেদন করেছেন চাকরির জন্য। ছেলের জন্য চাকরির আবেদন জমা করেছেন দেওয়ানগঞ্জে শেখ সামাদ ও জলধর বাউড়িরা। তাঁদের কথায়, ‘‘আবেদন করেছি। কী হচ্ছে দেখি।’’
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সামান্য কিছু অংশে একটু আধটু ভুল বোঝাবুঝি থাকতে পারে। বাকিরা নিজেরাই এগিয়ে আসছেন। জোর করে বা ভয় দেখিয়ে কখনওই এত আবেদন জমা পড়ত না।’’ সম্মতি রয়েছে এলাকার বড় অংশের মানুষের, এটা জানার পরে চাকরির নিয়োগ পত্র দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ভাবনায় রয়েছে প্রায় আড়াইশোটি ভূমিহীন বা সরকারি বা ব্যক্তিগত জমিতে বসবাসকারী পরিবারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy