পুরুলিয়া শহরের চাইবাসা রোডে পুলিশের টহল। নিজস্ব চিত্র
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার পুলিশের কাজ অনেকটাই সহজ করে দিল নিম্নচাপ। ভোর থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টির জেরে বৃহস্পতিবার বাড়ির বাইরে বেরনোর প্রবণতা অনেকটাই কম ছিল। ফলে, তৎপর থাকলেও লকডাউন বলবৎ করতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি পুলিশকে।
এ দিন পুরুলিয়া শহরের ঢোকার রাস্তাগুলির মোড়ে ছিল পুলিশের নাকা-চেকিং। শহরের স্বাস্থ্য় ভবন লাগোয়া মোড়ে ছিলেন ডিএসপি (ট্র্যাফিক) দুর্লভ সরকার। ঝাড়খণ্ড থেকে আসা গাড়িগুলিকে আটকেছিলেন তিনি। চালক ও আরোহীদের প্রায় সবাই দাবি করেছেন, এ রাজ্যে লকডাউন হচ্ছে বলে তাঁরা জানতেন না বলে চলে এসেছেন। নথি পরীক্ষার পরে, গাড়িগুলিকে ছাড়া হয়।
অন্য় দিকে, পুরুলিয়া শহরের হাটের মোড়ে ছিল পুলিশের জনা পনেরোর একটি দল। মূলত রাস্তা বেরনো শহরবাসীকে আটকেছেন তাঁরা। শার্ট-প্য়ান্ট পরা এক জন পুলিশের কাছে দাবি করেন, তিনি পুরোহিত। পি এন ঘোষ স্ট্রিটে এক জনের বাড়িতে পুজো করতে যাচ্ছেন। ব্যাগের ভিতরে ধুতি, পাঞ্জাবি আর ফুল দেখিয়ে ছাড় পেয়েছেন তিনি।
এ দিন পুরুলিয়া শহরের প্রায় সর্বত্রই দোকানপাট বন্ধ ছিল। তবে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কেতিকার ভিতরে একটি মুদির দোকান ও একটি তেলেভাজার দোকান খুলেছিল। সকালে দিব্য়ি বেচাকেনাও চলেছে। তেলেভাজার দোকানটির মালিক বলেন, ‘‘সকালে অনেকে জলখাবার কিনতে আসেন। তাই দোকান খুলেছিলাম। বেলায় বন্ধ করে দিয়েছি।’’
ঝালদা শহরের হোসেনডি আর কাঁটাডিতে কিছু দোকান খোলা ছিল। লোকজনকে জটলা করে বাজারে আড্ডা দিতে দেখা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা শেখ মোজাম্বির বলেন, ‘‘এক বন্ধু ফোন করেছিল, তাই বেরিয়েছি। চায়ের দোকান খোলা। একটু চা খেয়েই ঘরে ফিরে যাব।” তবে ওই এলাকার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত গিয়ে জটলা ভেঙে দিয়ে দোকানপাট বন্ধ করিয়েছে। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা বাদ দিলে আদ্রা, রঘুনাথপুর, মানবাজার-সহ জেলার বাকি সমস্ত জায়গায় এ দিন সার্বিক লকডাউন হয়েছে। বাইরে বেরোনো অধিকাংশ মানুষ ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। ‘প্রেসক্রিপশন’ দেখাতে পারলে, তবেই ছাড় মিলেছে।
বাঁকুড়া শহরের রাস্তায় পুলিশের টহল ছিল সারাদিন। দোকানপাট বন্ধ ছিল। বড় রাস্তায় অকারণে মানুষকে ঘুরতে দেখা যায়নি। তবে একটু বেলা গড়াতেই গলির ভিতরে আড্ডা চলেছে। সেখানে অনেকেরই মুখে ছিল না ‘মাস্ক’। বিষ্ণুপুর শহরের রাস্তায় পুলিশকে বিশেষ টহল দিতে দেখা যায়নি। তবে মোড়ে মোড়ে ট্র্যাফিক পুলিশ ছিল। পোকাবাঁধের উত্তর পাড়ে ভিড় চোখে পড়েছে। পাত্রসায়র, রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা, সিমলাপালের রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। ইন্দাসের পীরতলায় করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। খুব প্রয়োজনে যাঁরা বেরিয়েছেন, তাঁদের সেখানে পরীক্ষা করানো হয়েছে। কোতুলপুরের রাস্তায় পুলিশের তরফে বিলি করা হয়েছে ‘মাস্ক’।
পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগন জানান, লকডাউন অমান্য করায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘লকডাউনের আইন ভাঙায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy