ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত সান্টু শেখকে শেষ শ্রদ্ধা। বুধবার। ছবি: তন্ময় দত্ত tanmoydutta1568@gmail.com
ওড়িশার বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে ট্রেন দুর্ঘটনায় নিখোঁজ শ্রমিক সান্টু শেখের দেহ পাওয়া গেল ভুবনেশ্বরের একটি মর্গে। বুধবার দুপুরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে পাইকর থানার কনকপুর গ্রামের বাসিন্দা সান্টুর দেহ পরিজনদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সান্টু ছাড়াও কনকপুরের আরও দুই পরিযায়ী শ্রমিক সানাউল শেখ ও রাফিকুল শেখের মৃত্যু হয়েছে ওই দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার রাতে তাঁদের দেহ ফেরে গ্রামে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় করণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর থেকে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল সান্টুর। তাঁর খোঁজ পেতে উদ্বিগ্ন আত্মীয়রা বলেশ্বরের উদ্দেশে রওনা হয়। জেলাশাসক বিধান রায় সান্ছাটুর পরিবারের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে কথা বলেন। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বারও দেন।
গ্রাম সূত্রে জানা গিয়েছে, সানাউল ও রফিকুলের সঙ্গে করমণ্ডলে চেপে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতে যাচ্ছিলেন সান্টু। পরিজনদের দাবি, তাঁর দেহ সোমবার শনাক্ত করা হলেও অন্য কয়েক জন সেই দেহ তাঁদের আত্মীয়ের বলে দাবি করায় জটিলতা তৈরি হয়। উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণের জন্য সান্টুর আত্মীয়দের কাছে আরও নথি ও প্রমাণ দেখতে চায় রেল দফতর। পরে সান্টুর ভাই ও কয়েক জন ভুবনেশ্বরে গিয়ে তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার পরে দেহ তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সান্টুর ভাই কাজেম শেখ বলেন, ‘‘দাদার পায়ে ও হাতে কাটা চিহ্ন ছিল। সেটা দেখে চেনা গিয়েছে। তা ছাড়া, কয়েক দিন আগে একটি বিয়েতে যে জামাকাপড় পরে দাদা ছবি তুলেছিলেন, সেই জামা ও প্যান্ট ছিল গায়ে। আধিকারিকদের সেই ছবি দেখানোর পরে তাঁরা নিশ্চিত হয়ে দেহ আমাদের হাতে দিয়ে দেন। মঙ্গলবার রাতে দেহ নিয়ে জেলার উদ্দেশে রওনা দিই।’’
বুধবার বিকেলে সান্টুর দেহ গ্রামে নিয়ে আসা হয়। সাদা কাপড়ে স্বামীর মৃতদেহ দেখে জ্ঞান হারান সান্টুর স্ত্রী তেহেজা বিবি। সান্টুর মেয়েরা বাবার মুখ একবার দেখার জন্য কাঁদছিল। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এ দিন গ্রামে পৌঁছন মহকুমাশাসক (রামপুরহাট) সাদ্দাম নাভাস, বিডিও (মুরারই ২) মহম্মদ নাজির হোসেন, পাইকর থানার ওসি শেখ কবুল আলি ছাড়াও অনেকে।
তেহেজা বিবি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘‘মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে কফিনবন্দি হয়ে স্বামী ঘরে ফিরল। কেমন করে পাঁচ ছেলেমেয়েকে মানুষ করব। ছোটতেই তারা বাবাকে হারাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy