Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

দুপুরের চিড় ভাঙল বিকেলে

শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে খাস সিউড়ি শহরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায়। অত্যন্ত ঘনজনবসতিপূর্ণ এই এলাকা। বাণিজ্যিক বহুতলটির পাশেই রয়েছে পেট্রল পাম্প।

বিপজ্জনক: তখন ঘড়িতে দুপুর ২টো, বহুতলের দেওয়ালে চিড় দেখে ছড়াল আতঙ্ক।

বিপজ্জনক: তখন ঘড়িতে দুপুর ২টো, বহুতলের দেওয়ালে চিড় দেখে ছড়াল আতঙ্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৪
Share: Save:

দুপুরে ফাটল দেখা দিতেই উদ্বেগ ছড়িয়েছিল। আশঙ্কা সত্যি করেই বিকেলের দিকে সেই ফাটল কয়েক গুণ চওড়া হল। বেশ খানিকটা অংশ ভেঙেও পড়ল। যে কোনও সময় পুরো বাড়ি ভেঙে পড়তে পারে— এই আশঙ্কায় বহুতলে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, বেসরকারি ব্যাঙ্ক, গয়না বিপণি-সহ সমস্ত দোকান বন্ধ করিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলেছে পুলিশ।

শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে খাস সিউড়ি শহরের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায়। অত্যন্ত ঘনজনবসতিপূর্ণ এই এলাকা। বাণিজ্যিক বহুতলটির পাশেই রয়েছে পেট্রল পাম্প। জেলা সদরে অন্যতম ব্যস্ত এলাকায় এই ধরনের ঘটনায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে শহর জুড়ে। বিকেলে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুবিমল পালের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী। আসেন মহকুমাশাসক(সিউড়ি) রাজীব মণ্ডল, সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই পুরসভার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকের নির্দেশ মেনে বহুতলটি পুরোপুরি খালি করার নোটিস জারি করা হয়েছে।’’

এ দিন দুপুরে খবর পাওয়া যায়, পেট্রল পাম্পের গা ঘেঁষে থাকা পাঁচতলা ওই বিল্ডিংয়ের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। ভয়ে তখন থেকেই পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করে দেয় ওই বহুতলে থাকা একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখা।

এর পরে ওই এলাকায় পৌছে দেখা যায়, বহুতলের মূল কাঠামোয় কোনও পরিবর্তন হয় নি, তবে বাইরের দেওয়ালে কিছুটা সরে গিয়েছে। দেওয়ালের বাইরের দিকে প্রায় ১/২ ইঞ্চি ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। খবর চাউর হতেই উৎকন্ঠা ছড়িয়ে পড়ে। কেননা ওই বহুতলের সামনেই সরকারি-বেসরকারি বাসস্ট্যান্ড, শহরের ব্যস্ত রাস্তা, হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহনের যাতায়াত। বহুতলে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্ক, এলআইসি অফিস, প্রচুর ছোট বড় দোকান, ডাক্তারের চেম্বার। বহুতলটির মালিক নিজেও থাকেন উপরের তলায়। বাড়ির দেওয়াল কোনও ভাবে পড়ে গেলে প্রাণহানির আশঙ্কাও রয়েছে। দুপুরেই পেট্রল পাম্পে জড়ো হন কয়েকশো মানুষ। সবাই উদ্বেগের সঙ্গে ওই ফাটল নিয়ে আলোচনা করতে শুরু করেন।

পরে খবর পেয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুনীল পাল এবং সিউড়ি থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। সেই সময় বহুতলের ব্যাঙ্কে কাজে আসা শেখ রফিক, সাইদুল বিবিরা বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কে যেতেই কর্মীরা বললেন, ‘তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যান। বিল্ডিং পড়ে যাবে’। আমরা প্রাণভয়ে ছুটে বেরিয়ে চলে আসি।’’ তবে ব্যাঙ্ক কেন বন্ধ, তার কোনও উত্তর দেননি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজারও মুখ খুলতে চাননি। তবে দুপুরে বহুতলের মালিক অরূপ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘বিল্ডিংয়ের ড্রেনের দিকে দেওয়াল কিছুটা সরে গিয়েছে। তবে আশঙ্কার কোন কারণ নেই। আমি মিস্ত্রি এবং ইঞ্জিনিয়ারকে ডেকেছি। আজ থেকেই কাজ শুরু হবে।’’ তাঁর আশ্বাস অবশ্য ধোপে টেকেনি। বিকেলেই ধসে যায় দেওয়ালের একটা বড় অংশ।

কেন এই ফাটল?

সুনীলবাবুর মতে, দেওয়ালের পাশে নর্দমার কারণে এক পাশের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তা ছাড়া দেওয়ালটি বিল্ডিংয়ের টাই-বিম থেকে ওঠেনি। পুরনো দেওয়ালের উপর থেকেই নতুন দেওয়ালটি তোলা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কলামগুলি (স্থম্ভ) তৈরি করা হয়েছে। ফলে দেওয়ালটি বাইরের দিকে হেলে গিয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ওই বহুতলটির বেশ খানিকটা অংশ অবৈধ দখল। সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তা চাওড়া ও কালভার্ট করার সময় প্রসঙ্গটি উঠেছিল। সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নথি দেখে বলতে হবে। তবে অভিযোগ সত্যি হলে ব্যবস্থা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Calamity Crack Office Building
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy