রাস ময়দানের সভায় মহম্মদ সেলিম। মঙ্গলবার। ছবি: সুজিত মাহাতো
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ‘পুরুলিয়ার কোটা’ কে দিয়েছিলেন, পুরুলিয়ায় এসে এই প্রশ্ন তুললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। একই সঙ্গে ওই নিয়োগকে ঘিরে জালিয়াতির অভিযোগ তুললেন তিনি।
এ দিন মালদহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে অভিযোগ করেন, তাঁর দল থেকে কয়েকটা ডাকাত, গর্দার বিদায় নিয়েছে। পুরুলিয়ার ছেলেমেয়ের চাকরির কোটা তারাই নিজের পকেটে ভরেছে।
মঙ্গলবার পুরুলিয়া শহরের রাস ময়দানের জনসভা থেকে সেলিম প্রশ্ন করেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বলেছেন, পুরুলিয়ার কোটা সব শুভেন্দু নিয়ে গিয়েছে। এটা উনি আজ জানলেন? পুরুলিয়ার কোটা কেন বললেন? তার মানে কোটা ভাগ করেছিলেন? তাহলে পরীক্ষায় জালিয়াতি ছিল? টেট, এসএসসি, কলেজ সার্ভিস কমিশনের অর্থ কী? কোটা কে দিয়েছিলেন, জবাব চাই।
ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের দাবি, ২০১৪-২০১৭ সালে পুরুলিয়া জেলায় তৃণমূলের তরফে দলের পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেই সময়ে ২০১৪ সালের প্রাথমিকের টেট নেওয়া হয় ২০১৫ সালে। পরের বছরে ফল প্রকাশিত হয়। ইন্টারভিউয়ের পরে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়। সে বার চাকরিপ্রার্থীদের একটা বড় অংশ বাইরের জেলার বাসিন্দা বলে অভিযোগে জেলা তৃণমূলের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। শহরের এক সভাঘরে মন্ত্রী মলয় ঘটকের উপস্থিতিতে এক জেলা নেতা জানিয়েছিলেন, বহিরাগতেরা নিয়োগ পাচ্ছেন, অথচ জেলার ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে। এ নিয়ে তাঁদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। পরে জেলার এক শীর্ষনেতাও দাবি করেন, অভিযোগের বিষয়টি তাঁরা রাজ্য নেতৃত্বের গোচরে আনলেও তখন তেমন আমল দেওয়া হয়নি। তখন অবশ্য কোনও নেতার নামে সরাসরি অভিযোগ ওঠেনি। পরে তৃণমূলের একাংশ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। শুভেন্দুও জেলায় এসে সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
এ দিন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘সে সময় এই বিষয়টি নিয়ে কেউ কেউ অভিযোগে সরব হয়েছিলেন। যদিও কারও নাম করে অভিযোগ ওঠেনি। সে সময় যাঁরা নেতৃত্বে ছিলেন, তাঁরা এই বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বের গোচরে এনেছিলেন বলে শুনেছিলাম।’’
অবাধ পঞ্চায়েত নির্বাচন ও মানুষের পঞ্চায়েত গড়ার দাবিতে এ দিন সভার ডাক দিয়েছিল সিপিএম। সেখানে সেলিম দাবি করেন, খেটে খাওয়া মানুষের অধিকারের দাবিতে যে লড়াই, তা লাল ঝান্ডা ছাড়া কল্পনাও করা যায় না। দলের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় দাবি করেন, ‘‘জেলা জুড়ে পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে আন্দোলন হয়েছে। এ দিনের সভায় ১২-১৫ হাজার কর্মী-সমর্থক এসেছিলেন।’’ সেলিমও বলেন, ‘‘গ্রাম জাগছে ঝান্ডা নিয়ে। বাংলার অনাগত ভবিষ্যৎ নাগপুর, দিল্লি বা কালীঘাট ঠিক করবে না, বাংলার মানুষই ঠিক করবেন। গ্রাম জাগলে তিনি যেই হোন কেউ পার পাবে না।’’ তিনি জানান, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতের ভোট পর্বে তাঁদের উপরে যে অত্যাচার হয়েছিল, এ বার তার হিসেব হবে।
বাজেট নিয়ে দেশবাসীর কোনও প্রত্যাশা নেই বলে দাবি করে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন সেলিম। তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে তিনি আঁতাঁতের অভিযোগ তোলেন। সেলিম বলেন, ‘‘একটা খেলা চলছে, যেমন নকল কুস্তি চলে। বিরাট লড়াই হয়, অথচ কারও আঘাত লাগে না। দেখুন লড়াই হচ্ছে, অথচ তৃণমূল, বিজেপি কেউ জেলে ঢুকছে না।’’ এ দিনের সভায় বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অমিয় পাত্র, দেবলীনা হেমব্রম, প্রাক্তন ছাত্র নেতা সুদীপ সেনগুপ্ত প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy