Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Panchayat Election

পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী মিলবে তো! রিপোর্ট নিচ্ছে সিপিএম

বাম আমলে সিপিএমের গড় ছিল বাঁকুড়া। তবে জেলার পাত্রসায়র, জয়পুর, ইন্দাস-সহ বিষ্ণুপুর ও কোতুলপুর ব্লকের একাংশ বরাবরই রাজনৈতিক হানাহানির জন্য শিরোনামে এসেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২২ ০৮:০৩
Share: Save:

আগের তুলনায় সংগঠনের অবস্থা ভাল। মিটিং-মিছিলে লোকও হচ্ছে। কিন্তু বহু জায়গাতেই এখন ভোটে প্রার্থী দেওয়ার অবস্থা নেই সিপিএমের। দলের মতে, সেখানে রাজনৈতিক ‘সন্ত্রাস’ চালাচ্ছে তৃণমূল। সেই সব ‘সন্ত্রাস কবলিত’ এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দেওয়ার পরিস্থিতি গোড়াতেই তাই জরিপ করে নিতে চাইছে সিপিএম।

জানা যাচ্ছে, বাঁকুড়ায় ইতিমধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলার ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস কবলিত’ হিসেবে চিহ্নিত ব্লকগুলির নেতৃত্বের কাছ থেকে বিশেষ কিছু তথ্য লিখিত ভাবে চাওয়া হয়েছে জেলা নেতৃত্বের তরফে। ইতিমধ্যেই ওই সব ব্লকে গিয়ে এরিয়া কমিটির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন জেলা নেতারা। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি মানছেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা জুড়েই আমরা লড়াই করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ত্রাস কবলিত ব্লকগুলির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সেখানে লড়াইয়ের জন্য কর্মীদের সংগঠিত করার কাজ চলছে”।

বাম আমলে সিপিএমের গড় ছিল বাঁকুড়া। তবে জেলার পাত্রসায়র, জয়পুর, ইন্দাস-সহ বিষ্ণুপুর ও কোতুলপুর ব্লকের একাংশ বরাবরই রাজনৈতিক হানাহানির জন্য শিরোনামে এসেছে। ২০১১ সালে পালাবদলের পরে এই ব্লকগুলিতে একাধিক সিপিএম কর্মী খুন হয়েছেন। দলের দাবি, খুন ছাড়াও ওই ব্লকগুলি থেকে প্রায় ৩৭০ জন কর্মী ঘরছাড়া হয়েছিলেন। বহু দলীয় কার্যালয় ‘দখল’ হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি বদলেছে অনেকটাই। যদিও সিপিএমের দাবি, এখনও অন্তত চারটি কার্যালয় দখল হয়ে রয়েছে, পাঁচজন কর্মী গ্রামছাড়া হয়ে রয়েছেন।

গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই প্রধান বিরোধী দল হিসেবে জেলায় জমি হারানো শুরু করে সিপিএম। ওই ভোটে বিষ্ণুপুর মহকুমার অধীন ৬টি ব্লকে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের কোনও আসনে বিরোধী প্রার্থী ছিল না। সব বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে অবশ্য জেলার দুটি কেন্দ্রে জেতে বিজেপি। গত বিধানসভা নির্বাচনেও জেলার ১২টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮টিতেই জিতেছে বিজেপি। বিষ্ণুপুর মহকুমার আওতায় থাকা বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর, সোনামুখী ও ইন্দাস বিধানসভায় বিজেপির কাছে পরাজিত হয় তৃণমূল। যদিও নির্বাচনের কয়েক মাস পরই বিষ্ণুপুরের বিজেপি বিধায়ক তন্ময় ঘোষ তাঁর পুরনো দল তৃণমূলে ফিরে যান।

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাই ঘুরে দাঁড়ানোটাই সিপিএমের বড় চ্যালেঞ্জ। দলীয় সূত্রে খবর, ‘সন্ত্রাস কবলিত’ এলাকাগুলির বর্তমান পরিস্থিতি কী, সেখানে নির্বাচনে লড়ার মতো প্রার্থী মিলবে কিনা, দলীয় কার্যালয় খোলা যাচ্ছে কিনা, বুথগুলিতে দলের শক্তি কতটা, দলীয় কর্মসূচি চালানো যাবে কি না— এই সব রিপোর্ট লিখিত ভাবে জেলায় জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‘সন্ত্রাস কবলিত’ ব্লকগুলির জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপিও। বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ বলেন, “জেলায় ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য বিশেষ কমিটি গড়া হয়েছে। শীঘ্রই সেই কমিটি বৈঠকে বসবে। সন্ত্রাস কবলিত ব্লকগুলিতে আমরা নিজেরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যাব। রাজ্য নেতাদের নিয়ে ওই এলাকায় কর্মসূচি চালানো হবে।”

তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী বদলা নয়, বদলে বিশ্বাসী। তৃণমূলের আমলে সন্ত্রাস বলে কিছু নেই। বিরোধীদের ভোটে লড়ার মতো শক্তি না থাকলে তো আমাদের কিছু করার নেই।।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Election bankura CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy