সামাজিক দূরত্ব নেই প্রতিষেধকের লাইনেও। ওন্দার সানতোড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
পুরুলিয়ায় প্রায় ২২ হাজার এবং বাঁকুড়ায় প্রায় ১২ হাজার মানুষকে করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে সোমবার। মঙ্গলবার দুই জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাও।
পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার জেলায় প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে ২২,৩১৬ জনকে। এত দিন জেলা সদরের মেডিক্যাল কলেজ, গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং কিছু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছিল। সোমবার জেলার পঞ্চায়েত স্তরে ওই কাজ শুরু হয়। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, এত দিন ব্লক সদর বা কিছু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া হলেও লোকজন তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না। ভোটকর্মী, পুলিশকর্মী বা প্রথম সারির কোভিড-যোদ্ধারা প্রতিষেধক নিলেও সাধারণ মানুষজনের মধ্যে দ্বিধা কাজ করছিল। অনেকে প্রতিষেধক দেওয়ার কেন্দ্রে গিয়ে সব দেখেশুনে পরে নেবেন বলে ফিরে গিয়েছিলেন। প্রতিষেধক নেওয়ার ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতর কাউকে বাধ্যও করতে পারে না। পুরুলিয়ার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা একেবারে পঞ্চায়েত স্তরে নামানো হয়েছে। সপ্তাহে দুদিন করে দেওয়া হবে। প্রথম দিনে প্রচুর মানুষ প্রতিষেধক নেওয়ায় আমরা সত্যিই আশাবাদী।’’
সাম্প্রতিক নিয়ম অনুযায়ী, ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সের লোকজন প্রতিষেধক পাবেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ মানুষকে প্রতিষেধকের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তাতে প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দিতে হবে। সোমবারের পরে, প্রতিষেধক নেওয়া ব্যক্তির সংখ্যা কম-বেশি এক লক্ষ ছেষট্টি হাজার। ইতিমধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
বাঁকুড়া জেলাতেও প্রতিষেধক নেওয়ার হার ক্রমশ বাড়ছে বলে দাবি স্বাস্থ্য-কর্তাদের। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে খবর, সোমবার মোট ১২,৬৯৪ জন করোনা প্রতিষেধক নিয়েছেন। প্রতিষেধক দেওয়ার কাজে গতি আনতে রুটিন করে জেলার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা জানান, এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নিয়েছেন ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৯৪ জন। তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২৬ হাজার ১৫০ জন।
পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলায় আক্রান্তের হার বেশি বাড়ছে পুরুলিয়া শহর আর নিতুড়িয়া ও কাশীপুরের মতো কিছু ব্লক এলাকায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর অবশ্য বলেন, ‘‘যে দু’-একটি ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা অন্য ব্লকের তুলনায় বেশি দেখাচ্ছে, সেখানে পরীক্ষাও বেশি হচ্ছে। এই মুহূর্তে জেলায় সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র পেতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। এই কারণেই আমরা পরীক্ষা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছি।’’ তিনি জানান, সোমবার জেলায় আক্রান্তের হার ছিল ২.৬ শতাংশ। মঙ্গলবার তা সামান্য বেড়ে হয়েছে ২.৬৫ শতাংশ।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলা সূত্রে খবর, সপ্তাহকয়েক আগেও জেলায় করোনা আক্রান্তের হার ছিল ০.৬ শতাংশ। সম্প্রতি সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.১৯ শতাংশে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলাকে আরটিপিসিআর যন্ত্রে রোজ ৭০০ জনের ও র্যাপিড কিটে দৈনিক ৪০০ জনের করোনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে করোনা পরীক্ষার জন্য সাধারণ মানুষের লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, “করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার প্রবণতা মানুষের মধ্যে বাড়ছে। তবে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব-বিধি মেনে চলা বা হাত পরিষ্কার রাখার মতো সাবধানতা সে ভাবে মেনে চলতে দেখা যাচ্ছে না। অবিলম্বে এ নিয়ে সবার সতর্ক হওয়া দরকার।”
দু’জেলাতেই
প্রতিষেধকে
উৎসাহ, দাবি
নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া
পুরুলিয়ায় প্রায় ২২ হাজার এবং বাঁকুড়ায় প্রায় ১২ হাজার মানুষকে করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে সোমবার। মঙ্গলবার দুই জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, বাড়ছে করোনা
আক্রান্তের সংখ্যাও।
পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার জেলা প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে ২২,৩১৬ জনকে। এত দিন জেলা সদরের মেডিক্যাল কলেজ, গ্রামীণ হাসপাতাল, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং কিছু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছিল। সোমবার জেলার পঞ্চায়েত স্তরে ওই কাজ শুরু হয়। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, এত দিন ব্লক সদর বা কিছু প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিষেধক দেওয়া হলেও লোকজন তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন না। ভোটকর্মী, পুলিশকর্মী বা প্রথম সারির কোভিড-যোদ্ধারা প্রতিষেধক নিলেও সাধারণ মানুষজনের মধ্যে দ্বিধা কাজ করছিল। অনেকে প্রতিষেধক দেওয়ার কেন্দ্রে গিয়ে সব দেখেশুনে পরে নেবেন বলে ফিরে গিয়েছিলেন। প্রতিষেধক নেওয়ার ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতর কাউকে বাধ্যও করতে পারে না। পুরুলিয়ার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বুদ্ধদেব মণ্ডল বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা একেবারে পঞ্চায়েত স্তরে নামানো হয়েছে। সপ্তাহে দুদিন করে দেওয়া হবে। প্রথম দিনে প্রচুর মানুষ প্রতিষেধক নেওয়ায় আমরা সত্যিই আশাবাদী।’’
সাম্প্রতিক নিয়ম অনুযায়ী, ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সের লোকজন প্রতিষেধক পাবেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পুরুলিয়ার মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ মানুষকে প্রতিষেধকের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তাতে প্রায় ১৩ লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দিতে হবে। সোমবারের পরে, প্রতিষেধক নেওয়া ব্যক্তির সংখ্যা কম-বেশি এক লক্ষ ছেষট্টি হাজার। ইতিমধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া গিয়েছে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্তারা।
বাঁকুড়া জেলাতেও প্রতিষেধক নেওয়ার হার ক্রমশ বাড়ছে বলে দাবি স্বাস্থ্য-কর্তাদের। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলা সূত্রে খবর, সোমবার মোট ১২,৬৯৪ জন করোনা প্রতিষেধক নিয়েছেন। প্রতিষেধক দেওয়ার কাজে গতি আনতে রুটিন করে জেলার উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার স্বাস্থ্য-কর্তারা জানান, এখনও পর্যন্ত প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নিয়েছেন ১ লক্ষ ৪৮ হাজার ১৯৪ জন। তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২৬ হাজার ১৫০ জন।
পুরুলিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলায় আক্রান্তের হার বেশি বাড়ছে পুরুলিয়া শহর আর নিতুড়িয়া ও কাশীপুরের মতো কিছু ব্লক এলাকায়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর অবশ্য বলেন, ‘‘যে দু’-একটি ব্লকে আক্রান্তের সংখ্যা অন্য ব্লকের তুলনায় বেশি দেখাচ্ছে, সেখানে পরীক্ষাও বেশি হচ্ছে। এই মুহূর্তে জেলায় সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র পেতে আরও খানিকটা সময় লাগবে। এই কারণেই আমরা পরীক্ষা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছি।’’ তিনি জানান, সোমবার জেলায় আক্রান্তের হার ছিল ২.৬ শতাংশ। মঙ্গলবার তা সামান্য বেড়ে হয়েছে ২.৬৫ শতাংশ।
বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলা সূত্রে খবর, সপ্তাহকয়েক আগেও জেলায় করোনা আক্রান্তের হার ছিল ০.৬ শতাংশ। সম্প্রতি সেটাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.১৯ শতাংশে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলাকে আরটিপিসিআর যন্ত্রে রোজ ৭০০ জনের ও র্যাপিড কিটে দৈনিক ৪০০ জনের করোনা পরীক্ষার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে করোনা পরীক্ষার জন্য সাধারণ মানুষের লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, “করোনার প্রতিষেধক নেওয়ার প্রবণতা মানুষের মধ্যে বাড়ছে। তবে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব-বিধি মেনে চলা বা হাত পরিষ্কার রাখার মতো সাবধানতা সে ভাবে মেনে চলতে দেখা যাচ্ছে না। অবিলম্বে এ নিয়ে সবার সতর্ক হওয়া দরকার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy