Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Puja

মণ্ডপের কাছের দোকানিদের পরীক্ষা

কয়েকবছর আগেই বাঁকুড়া জেলাকে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর— দু’টি স্বাস্থ্য-জেলায় ভাগ করা হয়েছে।

জোরকদমে: বিষ্ণুপুরের কুন্দকুন্দা বাজারে মঙ্গলবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

জোরকদমে: বিষ্ণুপুরের কুন্দকুন্দা বাজারে মঙ্গলবার। ছবি: শুভ্র মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০১:৫৫
Share: Save:

পুজোতে করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে। এই পরিস্থিতিতে পুজো মণ্ডপের আশপাশে অস্থায়ী দোকান নিয়ে বসা ব্যবসায়ীদের করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিল বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলা।

বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন মঙ্গলবার বলেন, “পুজোতে সংক্রমণের হার রুখতেই পুজো মণ্ডপের কাছেপিঠে দোকান নিয়ে বসা লোকজনের করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা কিটে তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করানো হবে। এতে দ্রুত পরীক্ষার রিপোর্ট মিলবে। করোনা বাহক কেউ থাকলে, তাঁকে চিহ্নিত করে চিকিৎসা শুরু করা যাবে।”

তিনি জানান, মঙ্গলবার জেলার খাদ্য সুরক্ষা আধিকারিকদের সঙ্গে এ নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। সে বৈঠকেই ওই ব্যবসায়ীদের করোনা পরীক্ষার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। শ্যামলবাবু বলেন, “দফতরের এই সিদ্ধান্তের কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই ব্যবস্থায়ীদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।”

পুজো মণ্ডপের সামনে বসা অস্থায়ী দোকানদারেরা সংগঠিত নন। সে ক্ষেত্রে তাঁদের আগেভাগে কী ভাবে চিহ্নিত করা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শ্যামলবাবু বলেন, “প্রত্যেকটি পুজো কমিটিকেই ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করার ভার দেওয়া হবে। আমরা পুজো কমিটিগুলিকে জানাব, ব্যবসায়ীরা তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে এলে, এ নিয়ে সচেতন করতে। কারও করোনা নির্ণয় পরীক্ষার রিপোর্ট না থাকলে যেন দোকান খোলার অনুমতি না দেওয়া হয়, সে আবেদনও করছি।”

জেলার বড় পুজো কমিটিগুলির সামনেই নানা ধরনের খাবারের দোকান সাজিয়ে বসতে দেখা যায় বহু মানুষজনকে। ঠাকুর দেখার ফাঁকে সেখানে গিয়ে খাবারও খান দর্শনার্থীরা। বাঁকুড়া শহরের অন্যতম বড় পুজো লালবাজার সর্বজনীনের সম্পাদক পরেশ দাসমোদক জানান, পুজোর মণ্ডপকে কেন্দ্র করে লালবাজারেই অন্তত ৬০ জন ব্যবসায়ী অস্থায়ী দোকান গড়েন। ইতিমধ্যেই দোকান গড়ার জন্য পুজো কমিটির অনুমতি নেওয়াও শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। পরেশবাবু বলেন, “জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সিদ্ধান্তের কথা এখনও আমাদের জানানো হয়নি। তবে স্বাস্থ্য দফতর চাইলেই আমরা ওই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে করোনা পরীক্ষা করাতে বলব।”

কয়েকবছর আগেই বাঁকুড়া জেলাকে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর— দু’টি স্বাস্থ্য-জেলায় ভাগ করা হয়েছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার আওতায় জেলার ১৬টি ব্লক ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার আওতায় ছ’টি ব্লক রয়েছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্যজেলার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, “পুজো মণ্ডপের সামনে বসা অস্থায়ী দোকানিদের করোনা পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত খুবই ভাল। এতে সংক্রমণ বাড়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমানো যাবে। বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার সঙ্গে আলোচনা করব। এ ব্যাপারে আমরাও উদ্যোগী হব ভাবছি।”

যদিও বিভিন্ন মহলের দাবি, পুজোর আগে বাজারে কেনাকাটার ভিড় বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রেডিমেড ব্যবসায়ী ও দোকানের কর্মীদেরও করোনা পরীক্ষার দাবি উঠছে। ‘বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা বলেন, “স্বাস্থ্য দফতর রেডিমেড ব্যবসায়ীদের করোনা পরীক্ষা করাতে চাইলে আমরা সাহায্য করব।”

বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “রেডিমেড ব্যবসায়ীদের করোনা পরীক্ষার বিষয়টিও আমাদের আলোচনার মধ্যে রয়েছে। শীঘ্রই এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।” তিনি জানান, পুজোর আগে মানুষকে করোনা-সহ ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া ও টিবি নিয়ে সচেতন করতে জেলায় দু’টি ট্যাবলো প্রচার চালাচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja COVId-19 Test
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy