প্রতীকী ছবি।
লকডাউন ঘোষণা করার পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছেন অসংখ্য পরিযায়ী শ্রমিক। বীরভূমেরও কয়েক হাজার শ্রমিক আছেন তাঁদের মধ্যে। কিছু শ্রমিক ফিরলেও বড় অংশই এখনও ফিরতে পারেননি। তেমনই কিছু শ্রমিককে ফেরানোর দাবিতে এ বার পথ অবরোধ করলেন তাঁদের পরিবারের লোকেরা। অবরোধ তুলতে যাওয়া পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া এবং লাঠি হাতে তাড়া করার অভিযোগও উঠেছে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে।
সোমবার ঘটনাটি ঘটে ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের কনুটিয়া মাঠপাড়ায়। ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিভৃতবাসে রাখা নিয়ে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে, কনুটিয়া গ্রামে যা ঘটেছে, অর্থাৎ পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো দাবিতে বিক্ষোভ জেলায় এই প্রথম বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর। যদিও কুনুটিয়ার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কেবলমাত্র মাঠপাড়ার যে-সব পরিযায়ী শ্রমিক বাইরে রয়েছেন, তাঁদের পরিবারের লোকেরাই বিক্ষোভ দেখান।
কুনুটিয়া গ্রামটি কলেশ্বর পঞ্চায়েতের অধীন। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের লোকসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এলাকার হাজার দেড়েক মানুষ মুম্বই, কেরল-সহ বিভিন্ন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ২০০ জন মাঠপাড়ার বাসিন্দা। তাঁদের পাঠানো টাকায় পরিবারের লোকেদের সংসার চলে। মহরম, ইদ বা বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে বাড়ি ফেরেন ওই সব পরিযায়ী শ্রমিক। কিন্তু এ বার লকডাউনের জেরে তাঁরা ফিরতে পারেননি। রমজান মাসেও তাঁরা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে থাকতে পারছেন না।
এই অবস্থায় ইদের আগে তাঁদের ফেরানোর দাবিতে এ দিন মাঠপাড়ায় সকাল ৮টা থেকে শিবগ্রাম-ষাটপলশা সড়ক অবরোধ করেন দুই শতাধিক গ্রামবাসী। তাঁদের বড় সংখ্যকই মহিলা। পুলিশ দফায় দফায় অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ব্যর্থ হয়। অবরোধকারীরা জানিয়ে দেন, ইদের আগে পরিবারের লোকেদের ফেরানোর লিখিত প্রতিশ্রুতি ছাড়া অবরোধ তুলবেন না। এক সময় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন মহিলারা। অভিযোগ, এর পরেই পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া এবং লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের গাড়িতে লাঠির বাড়িও মারা হয়। বেলা ১১টা নাগাদ বড় পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ অবশ্য গাড়ি ভাঙচুর বা ঢিল ছোড়ার অভিযোগ মানেননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভুল খবর।’’
মাঠপাড়ার দুই মহিলা জানান, তাঁদের পরিবারের পুরুষেরা রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে মুম্বইয়ে আটকে রয়েছেন। লকডাউনে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় বাড়িতে টাকা পাঠাবেন কী, তাঁদেরই খাওয়া জুটছে না! মহিলাদের ক্ষোভ, ‘‘আমরা অনেকদিন ধরেই গ্রামের নেতাদের ওদের ফেরানোর কথা বলছি। কিন্তু কেউ কানে তোলেননি। সময়ে ফেরানো হলে ইদ নিরানন্দে কাটাতে হত না।’’
স্থানীয় বাসিন্দা ও তৃণমূল নেতা তথা ময়ুরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সাদিকুল শেখ বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য আমরা পরিবারের লোকেদের কাছে ভোটার ও আধার কার্ডের ফোটোকপি চেয়েছিলাম। কিন্তু নানা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে অনেকেই তা দেননি। কেউ কেউ আবার ফিরে ১৪ দিন নিভৃতবাসে থাকতেও রাজি হননি। তাই চেষ্টা সত্ত্বেও ওঁদের ফেরানোর ব্যাপারে প্রশাসনিক ভাবে কিছু করা যায়নি।’’ বিডিও অর্ণবপ্রসাদ মান্না জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy