এই চালের বস্তা নিয়েই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
ত্রাণের চালের বস্তায় এফসিআই-এর স্টিকার সাঁটানো। অভিযোগ, তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে আসা সেই চাল বিলির জন্য যাচ্ছিল। মঙ্গলবার দুবরাজপুরের কখুটিয়া গ্রামে একটি অটোয় করে আসা এমনই ১৫ বস্তা চাল ‘হাতেনাতে’ ধরা পড়েছে বলে বিজেপি দাবি করার পরেই বিতর্ক চরমে উঠেছে।
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, দু’দিন আগে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল এফসিআই-এর চাল নিম্নমানের বলে তোপ দেগেছিলেন। অথচ সরকারি গুদাম থেকে সেই কেন্দ্রীয় সরকারের পাঠানো চালই তৃণমূলের নামে বিলি হচ্ছে। বিজেপির তরফে অভিযোগ হয়েছে ব্লক প্রশাসনের কাছেও। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের দাবি, বিজেপি রাজনীতি করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে শাসকদলের তরফে একটি অটোয় করে ১৫ বস্তা চাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের কুখুটিয়া গ্রামে। সেই সময় স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিজেপি-র দুবরাজপুর (এ) মণ্ডলের সভাপতি সাধন ধীবর চালের বস্তার উপরে ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার ছাপ দেখে সেই অটোটিকে থামান। সাধনবাবুর দাবি, ওই অটোয় তৃণমূলের দুই স্থানীয় নেতা ছিলেন। তাঁদের জিজ্ঞাসা করলে ওঁরা জানান, দুবরাজপুর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ভোলানাথ মিত্রের বাড়ি থেকে চালের বস্তা নিয়ে এসেছেন। এই চাল গ্রাম সংসদ এলাকায় বিলি হবে। সাধনবাবুর বক্তব্য, ‘‘বুঝতে পারি, তৃণমূল রেশন ব্যবস্থায় কারচুপি করেই সেই চাল ত্রাণ হিসেবে বিলি করার ফন্দি এঁটেছিল। সঙ্গে সঙ্গে ভিডিয়ো ফুটেজ-সহ দুবরাজপুরের বিডিওকে পাঠিয়ে তদন্ত করার আবেদন জানিয়েছি।’’
বিডিও (দুবরাজপুর) অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ‘‘অভিযোগ পাওয়ার পরেই মহকুমাশাসককে জানাই।’’ মুককুমাশাসক (সদর) রাজীব মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে বিডিও-র কাছে জেনেছি, ওই রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে বিলির জন্যই চাল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এটা সরকারি বিলি বণ্টনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তাই বস্তায় কোন ছাপ, সেটা গৌণ। তবে, এ ব্যাপারে কেউ নির্দিষ্ট অভিযোগ করলে নিশ্চয় তদন্ত হবে।’’
এফসিআইয়ের স্টিকার কেন, সে প্রশ্নের জবাবে ভোলানাথবাবুর দাবি, ‘‘বিভিন্ন চালকল থেকে আমরা কিছু চাল জোগাড় করেছি। দলের জেলা সভাপতি এলাকায় ত্রাণ দেওয়ার জন্য চাল পাঠিয়েছেন। আসার সময় বেশ কিছু বস্তা ফেটে যায়। সে জন্য রেশন ডিলার ও সারের দোকান থেকে বস্তা কেনা হয়েছিল। তাতে এফসিআইয়ের ছাপ ছিল কিনা, খেয়াল করিনি।’’ তাঁর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘আসলে নিজেদের কোনও কাজ নেই। তাই আমাদের ভাল কাজে বাগড়া দিচ্ছে বিজেপি।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘গণবন্টন ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করে, ডিলারদের ভয় দেখিয়ে কেন্দ্রের পাঠানো রেশন সামগ্রী লুট করে কী ভাবে ত্রাণের জন্য হাজার হাজার বস্তা চাল-ডাল জোগাড় করেছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি, সেটা হাতেনাতে ধরা পড়ল। আমরা অনেক আগে থেকে প্রশাসনকে বলছি, শাসকদল সাধারণ মানুষকে তাঁদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করছে। এখন সেটা ত্রাণ বলে বিলি করে নাম কেনার চেষ্টা করছে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলছেন, ‘‘এফসিআই কর্তৃপক্ষ এ ভাবে কাউকে চাল দিতে পারেন না। তাঁদের হিসেব দিতে হয়। তাই মুর্খের মতো কেউ যা খুশি অভিযোগ করলেই হবে না। যুক্তি লাগে।’’ তাঁর দাবি, শাসকদল মানুষের পাশে রয়েছে। আর বিজেপি ‘নোংরা রাজনীতি’ করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy