প্রতীকী ছবি
কেউ রয়েছেন উত্তরপ্রদেশে, কেউ তেলঙ্গনায়, কেউ কেরল, মহারাষ্ট্র কিংবা তামিলনাড়ুতে। আচমকা ‘লকডাউন’ ঘোষণা হওয়ায় ভিন্ রাজ্যে আটক পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লকের বহু মানুষ। অনেকের মাথা গোঁজার আশ্রয় মিলেছে। কারও মেলেনি। ‘লকডাউন’ যত দীর্ঘ হচ্ছে, ততই টান পড়ছে তাঁদের রসদে।
এই অবস্থায় ভিন্ রাজ্যে আটক পুরুলিয়াবাসীর অন্ন-আশ্রয়ের সংস্থানে বাড়ি থেকে কাজ শুরু করেছেন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
তেলঙ্গনায় আটকে পড়া ঝালদা ২ ব্লকের উত্তম মাহাতোর কথায়, ‘‘আচমকা লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় স্টেশনেই আটকে পড়েছিলাম। বাঘমুণ্ডির কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো খবর পেয়েছিলেন। তিনি এখানকার থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করেন। পুলিশ আমাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে।’’ আড়শার হেরোডি গ্রামের ১০ জন আটকে পড়েছেন মুম্বইয়ে। তাঁদের অন্যতম সেলিম আনসারি নামে এক যুবক ফোনে বলেন, ‘‘শুধু আমরাই নই, এখানে পুরুলিয়ার আরও অনেকে রয়েছেন। ‘লকডাউন’ চলছে বলে সব বন্ধ। চাল-ডাল বেশি নেই। ফোনে নেপালবাবুকে জানিয়েছিলাম। তিনি এখানকার প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমাদের থাকার ও রেশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’’
পুরুলিয়ার জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপালবাবু বলেন, ‘‘সোশ্যাল মিডিয়াতে জানিয়েছিলাম, কেউ আটকে পড়লে আমাকে জানাতে। অনেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। জানা ছিল না, পুরুলিয়ার এত মানুষ ভিন্ রাজ্যে কাজ করেন। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আটকে পড়া লোকজনের জন্য সাহায্য চেয়েছি। সকলেরই যে খাবারের ব্যবস্থা হয়েছে তা নয়। অনেকেই ফোন করে জানাচ্ছেন, খাবার নেই।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লিখেছেন। কিন্তু এখনও সকলের কাছে প্রশাসন পৌঁছয়নি। বিষয়টি নিয়ে তাঁকে টুইট করেছি।’’
ভিন্ রাজ্যে আটকদের জন্য অর্থ পাঠাচ্ছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মহারাষ্ট্রের আকোলাতে আটকে পড়েছেন পুঞ্চার কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে তারাশঙ্কর পন্ডার কথায়, ‘‘ঠিকাদার প্রথমে চাল-ডাল পাঠিয়েছিলেন। সব শেষ হয়ে গিয়েছে। সুজয়বাবুকে ফোনে জানাই সে কথা। উনি আর্থিক সাহায্য পাঠিয়েছেন।’’ তেলঙ্গনার গেজিওল জেলার বেগমপেটে আটকে পড়েছেন কিছু পুরুলিয়াবাসী। তাঁদের মধ্যে সঞ্জিত পাত্র ফোনে জানালেন, সমস্যার কথা সুজয়বাবুকে জানানোয় আর্থিক সাহায্য পাঠিয়েছেন। সুজয়বাবু বলেন, ‘‘যতটা সম্ভব ওঁদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। তবে এ ভাবে তো দিনের পর দিন কাটানো সম্ভব নয়। মুখ্যমন্ত্রী অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি লিখে পরিযায়ী শ্রমিকদের খাওয়া ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছেন। ওঁদের কথা যাতে সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি।’’
সিপিএম ও বিজেপির নেতারাও আটকে থাকা শ্রমিকদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন। সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘আমাদের বর্ষীয়ান নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ভাল যোগাযোগ আছে। তাই দলের কর্মীদের কাছ থেকে কোথাও শ্রমিকদের আটকে থাকার খবর পেলেই বাসুদাকে জানানো হচ্ছে। তিনিই সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সাহায্য পৌঁছে দিচ্ছেন।’’ তিনি জানান, এ ভাবে কেরল, পুদুচেরি, তামিলনাড়ু, গুজরাট, ঝাড়খণ্ডে জেলার শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তাঁরা।
বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে হেল্পলাইন নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া হয়েছিল। যাঁরা যাঁরা যোগযোগ করছেন, দলীয়স্তরে, সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাহায্য করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এ ভাবে অন্তত ৪০টি শ্রমিকদের দলকে সাহায্য করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy