Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

গড়াল না বাসের চাকা

নানা শর্তসাপেক্ষে বাস চলাচলের সরকারি ছাড়পত্র মিললেও, মঙ্গলবার কোনও বাসই পথে নামল না ‘গ্রিন জ়োন’ বলে ঘোষিত বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায়। 

সুনসান রইল পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র

সুনসান রইল পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ড। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৭:০৬
Share: Save:

কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চালালে লোকসানের আশঙ্কা করছেন বেসরকারি বাসের মালিকেরা। আবার নানা সমস্যার কথা তুলে কাজে যোগ দিতে রাজি নন বাসকর্মীরাও। এ দিকে, সরকারি বাস চালানোর ব্যাপারেও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

অগত্যা নানা শর্তসাপেক্ষে বাস চলাচলের সরকারি ছাড়পত্র মিললেও, মঙ্গলবার কোনও বাসই পথে নামল না ‘গ্রিন জ়োন’ বলে ঘোষিত বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায়।

বেসরকারি বাস মালিকেরা সরাসরি বলছেন, বাস চালানোর ক্ষেত্রে যে সব শর্ত আরোপ করা হয়েছে, তাতে লোকসানের মুখে পড়তে হবে তাঁদের। ‘বাঁকুড়া জেলা বাস মালিক উন্নয়ন সমিতি’র তরফে অঞ্জন মিত্র বলেন, “জেলার বাইরে বাস নিয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে। তা ছাড়া, কুড়ি জনের বেশি যাত্রী তোলা না গেলে, সমস্যায় পড়ব আমরা। বাসকর্মীরাও কাজে যোগ দিতে চাইছেন না। সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছি।”

পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্তের যুক্তি, ‘‘জেলার মধ্যে বাস নামালে, সব মিলিয়ে একশো কিলোমিটার গাড়ি চালানোর খরচ কম-বেশি ছ’হাজার টাকা। আবার যাত্রী তোলারও নিয়ম রয়েছে। তাতে লোকসান সামলাব কী ভাবে? হিসেব ধরে সমস্যার কথা আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি।’’

তাঁর প্রস্তাব, ভোটের ডিউটির মতো যদি প্রশাসন তাঁদের বাসগুলি নিয়ে চালায়, তা হলে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই।

যদিও এখন পথে নামতে বাসকর্মীরাও রাজি নন। সিটুর বাঁকুড়া বাস শ্রমিক ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক অশোক লোহার বলেন, “বাসকর্মীদের মধ্যেও করোনা-সংক্রমণের ভয় রয়েইছে। সেটা স্বাভাবিক। তা ছাড়া, ২০ জনের বেশি হয়ে গেলে কোনও যাত্রীকে বাসে উঠতে না দিলে তখন ক্ষোভের মুখে পড়বেন বাস কর্মীরাই। এই পরিস্থিতিতে বাসকর্মীরা কাজ না করার সিদ্ধন্ত নিয়েছেন।”

বেসরকারি বাস না চললেও সরকারি বাস কেন পথে নামছে না? প্রশ্ন তুলছেন জেলাবাসী। বাস না চলায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন গ্রামাঞ্চলের মানুষজন। গত সাত দিন ধরে বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শালতোড়ার বাসিন্দা সাহেব শিকদারের বাবা। সাহেব বলেন, “কোনও রকমে একটি গাড়ি ভাড়া করে অসুস্থ বাবাকে হাসপাতালে এনেছিলাম। কিন্তু বাস চলাচল না করায় কোনও আত্মীয়ই হাসপাতালে আসতে পারছেন না। দু’দিন পরে বাবাকে ছুটি দেবে। বাস না করলে, আবার মোটা টাকা খরচ করে গাড়ি ভাড়া করতে হবে।”

এই পরিস্থিতিতে জেলার বিভিন্ন মহল থেকে সরকারি বাস চালানোর দাবি উঠছে। বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অসীমকুমার বিশ্বাস বলেন, “এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষকের সঙ্গে কথা বলছি। বেসরকারি বাস মালিক ও কর্মীদের সমস্যাগুলি নিয়েও চিন্তাভাবনা করছি আমরা।”

এ দিকে, ঝাড়খণ্ড লাগোয়া পুরুলিয়া জেলায় সংক্রমণের ভয়ে এখন বাস চালানোয় আপত্তির কথা জানিয়েছেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো।

তাঁর মতে, ‘‘এখন বাস চালানো হলে তা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।’’ পুরুলিয়া জেলা পরিষদের পরিবহণ বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের হলধর মাহাতোর দাবি, ‘‘সতর্কতা নিয়েই নির্দিষ্ট দূরত্বের বিধি মেনে বাস চলাচল শুরু করতে আমরা উদ্যোগী হয়েছিলাম। বাস মালিক সমিতির প্রস্তাব প্রশাসন দেখছে।’’

পুরুলিয়া জেলা পরিবহণ আধিকারিক নীলেশ দে বলেন, ‘‘বাস মালিক সমিতির তোলা সমস্যার কথা আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। নির্দেশ এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Bus Purulia Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy