খাদ্যপণ্য বিলি। নিজস্ব চিত্র
মানুষের পাশে থাকতে হয় বিপদের দিনে— এই বার্তা ছোট থেকেই ছেলের মনে গেঁথে দিতে চেয়েছিলেন বাবা-মা। তাই মঙ্গলবার ছেলের জন্মদিনে শতাধিক দিনমজুরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাঁদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হল। উদ্যোক্তা বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বাগীশপাড়ার এক দম্পতি।
বিষ্ণুপুরের একটি হাইস্কুলের পার্শ্বশিক্ষক অসীম বাগীশ বলেন, ‘‘প্রতি বছর ছেলের জন্মদিনে সন্ধ্যায় রঙিন আলোয় ঘর সাজিয়ে কেক কেটে আত্মীয়স্বজনদের নিয়ে আনন্দ করে খাওয়াদাওয়া করা হয়। এখন দেশের দুর্দিন। তাই এ বার জন্মদিনের অনুষ্ঠান বাতিল করে, সবাই মিলে রুজিহীন মানুষগুলোর পাশে থাকার পরিকল্পনা করি। ঠিক করি, জন্মদিন পালনের সমস্ত টাকায় ত্রাণ সামগ্রী কিনে তাঁদের হাতে তুলে দেব।’’
তিনি জানান, তিন দিন আগে থেকেই পাড়ায় পরিচারিকার কাজে আসা মানুষগুলির কাছে গিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছিলেন। এ ছাড়া, পাড়ায় যাঁরা নির্মাণ কাজ করেন, টোটো চালান, দিনমজুরি করেন তাঁদেরও আমন্ত্রণ করেন। অসীমবাবুর স্ত্রী কুহেলিদেবী বলেন, ‘‘আমাদের একমাত্র ছেলে অভ্রর জন্মদিনে পরে আবার হুল্লোড় করার সুযোগ আসবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে দুঃস্থ মানুষগুলির বেঁচে থাকার জন্য সাহায্যের বড় প্রয়োজন। এ ছাড়া, আর্তের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষাও এর মাধ্যমে ছেলেকে হাতে-কলমে শেখানোও দরকার ছিল।’’
ডিম, সয়াবিন, নানা রকম আনাজ প্যাকেট বন্দি করতে মা-বাবার সঙ্গে হাত লাগায় সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া অভ্রও। সে বলে, ‘‘মাকে বলেছি, আমি শুধু জন্মদিনের পায়েস পেলেই খুশি।’’
অসীমবাবু জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরত্ব বজায় রেখে মানুষগুলিকে খাদ্যদ্রবের প্যাকেট দিয়েছেন। বাড়ি ফেরার আগে দূর থেকেই তাঁর ছেলেকে আশীর্বাদ জানিয়েছেন সবাই। বাগীশ দম্পতির পড়শি সুকুমার অধিকারী বলেন, ‘‘ছেলের জন্মদিনের আনন্দ এ ভাবে সবার মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার উদ্যোগ খুবই ভাল। সবাই এ ভাবে দিনমজুর মানুষগুলির পাশে থাকলে, দুঃসময় ঠিক পার হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy