Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

‘নিদান ভাঙায় একঘরে’ পরিযায়ী শ্রমিক

যদিও অভিযোগ মানেননি গ্রাম ষোলোআনার অন্যতম সদস্য তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২০ ০৬:৫৯
Share: Save:

ছত্তীসগঢ় থেকে ফেরার পরে, পুরুলিয়ার এক পরিযায়ী শ্রমিককে ‘হোম কোয়রান্টিন’-এ থাকার পরামর্শ দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু কাশীপুর ব্লকের পাবড়াপাহাড়ি গ্রামের ষোলোআনার ‘আপত্তি’তে তাঁকে থাকতে হচ্ছিল স্থানীয় স্কুলের বারান্দায়। ঝড়বৃষ্টি শুরু হওয়ায় রবিবার ওই শ্রমিক বাড়ি চলে যান। সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে তাঁর অভিযোগ, সে জন্য গ্রামের ষোলোআনা তাঁর পরিবারকে সাময়িক ‘একঘরে’ করেছে।

যদিও অভিযোগ মানেননি গ্রাম ষোলোআনার অন্যতম সদস্য তথা স্থানীয় পঞ্চায়েতের তৃণমূলের উপপ্রধান। বিডিও (কাশীপুর) সুদেষ্ণা দে মৈত্রর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কী হয়েছে, খোঁজ নিচ্ছি। সমস্যা হয়ে থাকলে, মিটে যাবে।’’

বছর চল্লিশের নিত্যানন্দ মাহাতো ছত্তীসগঢ়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন। বাড়িতে আছেন বাবা-মা, বউ, ছেলে এবং কাকা-কাকিমা। জেলার আরও অনেকের সঙ্গে বাস ভাড়া করে গত ১৫ মে নিত্যানন্দ বাড়ি ফেরেন। ১৬ মে কাশীপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শারীরিক পরীক্ষার পরে, তাঁকে ১৪ দিন বাড়িতে থাকতে বলেন ডাক্তারেরা।

ওই শ্রমিকের দাবি, সে সময় গ্রামের ষোলোআনার কিছু লোক তাঁকে গ্রামের স্কুলে থাকতে বলেন। স্কুলের বারান্দায় থাকছিলেন তিনি। কিন্তু শনিবার ঝড়বৃষ্টি হওয়ায় বারান্দায় থাকতে অসুবিধে হচ্ছিল। তখন ষোলোআনার লোকেরা তাঁকে ক্লাসঘরে থাকতে বলেন। প্রধান শিক্ষকের অনুমতি ছাড়া, ক্লাসঘরে থাকা ঠিক হবে না ভেবে রবিবার তিনি বাড়ি চলে যান।

সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই শ্রমিকের অভিযোগ, ‘‘কেন আমি ষোলোআনার কথা না মেনে বাড়ি ফিরেছি, সে প্রশ্ন তুলে রবিবার রাতেই আমার পরিবারকে একঘরে করা হয়েছে। মুদির দোকান থেকে জিনিস নিতে দেওয়া হচ্ছে না। নিদান দেওয়া হয়েছে, ১৪ দিন আমাদের সঙ্গে কেউ, কোনও সম্পর্ক রাখবে না।’’

ঘটনার কথা তিনি ফোনে জানান বাঘমুণ্ডির বিধায়ক তথা জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোকে। নেপালবাবু বলেন, ‘‘ওই ভদ্রলোক আমাকেও বলেছেন, ওঁকে গ্রামের কিছু লোক একঘরে করেছে। এটা কাম্য নয়। প্রশাসনের দেখা দরকার।’’

পাবড়াপাহাড়ি গ্রামেই বাড়ি স্থানীয় আগরডি-চিত্রা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তৃণমূলের মন্মথ মাহাতোর। তিনি আবার ষোলোআনারও কর্তা। তাঁর দাবি, ‘‘বাড়িতে নিত্যানন্দবাবুর পক্ষে কোয়রান্টিন থাকায় সমস্যা আছে। পরিবার এবং গ্রামের সকলের স্বার্থে ওঁকে স্কুলে থাকতে বলা হয়েছিল। স্কুলের বারান্দায় থাকতে অসুবিধে হচ্ছিল বলে ক্লাসঘরে থাকতে বলা হয়। কিন্তু উনি বাড়ি চলে যান। তবে ওঁকে একঘরে করা হয়েছে বলে আমার জানা নেই।’’

যদিও কাশীপুরের তৃণমূল নেতা তথা পুরুলিয়া জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘ডাক্তারেরা যখন ১৪ দিন নিত্যনন্দবাবুকে বাড়িতে থাকতে বলেছেন, তখন উনি বাড়িতে থাকলে অসুবিধে হত বলে মনে হয় না। ওই ভদ্রলোকের কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সেটা দেখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Quarantine
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy