প্রতীকী ছবি।
নিরাময় সেফ হোমকে কোভিড হাসপাতালে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু হল। কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করতে হলে পরিকাঠামো কতখানি বদলের প্রয়োজন, তা খতিয়ে দেখতে জেলা স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক কর্তাদের উপস্থিতিতে সম্প্রতি পূ্র্ত দফতরের( সিভিল ও ইলেকট্রিক্যাল) ইঞ্জিনিয়ারদের একটি দল নিরাময় সেফ হোম পরিদর্শন করেছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কথায়, সঙ্কটজনক কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট) এবং এইচডিইউ (হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট) গড়তে হবে। সেজন্য ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সাপ্লাই লাইন-সহ পরিকাঠামোগত পরিবর্তন করতে হবে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টা কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ওখানেই চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা প্রয়োজন। ঠিক কী কী করতে হবে পূ্র্ত দফতরের আধিকারিকেরা সেটাই খতিয়ে দেখেছেন। আপাতত ঠিক হয়েছে নিরাময় যক্ষ্মা হাসপাতালের পরিত্যক্ত ভবনগুলি সংস্কার করে অন্তত ৩০-৩২টি আবাসন রেডি করে দেওয়া। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই পূর্ত দফতর পরিকল্পনা জানাবে। তা পাওয়ার পর কাজ শুরু হবে।’’
জেলায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়তে থাকায় জুন মাসে ফের বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় কোভিড হাসপাতাল গড়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে প্রশাসন। দুবরাজপুরের হেতমপুর পঞ্চায়েতের অধীনে, ২০১২ সালের নভেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা ৩৩০ শয্যা বিশিষ্ট নিরাময় যক্ষ্মা হাসপাতালটি চিহ্নিত করে প্রশাসন। সিদ্ধান্ত নেয়, জনবহুল এলাকা থেকে দূরে বন্ধ যক্ষ্মা হাসপাতালের পরিকাঠামো পুনরুদ্ধার করে হাসপাতালটির তিনটি ব্লককে কাজে লাগিয়ে প্রায় ১৬০ বা তারও বেশি শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল গড়া হবে। কিন্তু বহু ব্যয়ে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করা হলেও শেষ পর্যন্ত ১৫০ শয্যার সেফ হোমের মর্যাদা পায় ওই হাসপাতাল। উপসর্গহীন কিছু করোনা আক্রান্ত সেখানে ভর্তি থাকলেও বিশেষ কাজে লাগছিল না।
কিন্তু পুজো পরবর্তী সংক্রমণ বাড়তে পারে ধরে নিয়ে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য পরিকাঠামো বৃদ্ধির নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতরের থেকে পেতেই নিরাময় সেফ হোমকে কোভিড হাসপাতালের রূপান্তরিত করার আবেদন জমা দেয় বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা। এক লপ্তে সারা রাজ্যে ২০০০-এরও বেশি কোভিড হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধির অনুমোদনের তালিকায় ছিল নিরাময়ও। আপাতত ওই ১৫টি এইচডিইউ (হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিট) গড়ার অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু এই অনুমোদনকে কার্যত সুযোগ হিসাবেই দেখছেন জেলার চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘কোনও বেসরকারি হাসপাতালে ধার নিয়ে পরিকাঠামো বাড়ানো নয়, সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো বৃদ্ধি কোভিড পরিস্থিতিতে আক্রান্ত রোগীদের জন্য তো বটেই, কাজে লাগবে কোভিড পরবর্তী সময়েও।’’
বীরভূমে পুজো পরবর্তী সংক্রমণের ঢেউ এখনও তেমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে না পৌঁছলেও উপসর্গযুক্ত পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা (যাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো আবশ্যক হয়ে পড়েছে) বাড়ছে। যাঁদের অধিকাংশকেই অক্সিজেন দিতে হচ্ছে। সেটাই চিন্তার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ চিহ্নিত হননি এমন উপসর্গহীন প্রচুর সংখ্যক কোভিড রোগীরা সংক্রমণ ছড়িয়ে চলেছেন। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজার ছুঁয়ে ফেলেছে। এ ভাবে চলতে থাকলে বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় অধীনে থাকা ৯০ শয্যা বিশিষ্ট বোলপুর কোভিড হাসপাতাল ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় থাকা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট কোভিড হাসপাতাল ভর্তি হতে বিশেষ সময় লাগার কথা নয়। উদ্বেগ বাড়ছে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের নিয়েও। বীরভূম স্বাস্থ্য জেলায় এই মুহূর্তে শ’পাঁচেক কোভিড রোগী হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। যাঁদের কারও চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। সরকারি পরিষেবা মিললেও দুটি কোভিড হাসপাতালই বেসরকারি নার্সিং হোম বা হাসপাতাল ভাড়া নিয়ে চলছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের কথায়, ‘‘এই অবস্থায় যদি একটি সরকারি হাসপাতালকে উপযুক্ত পরিকাঠামো দিয়ে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত করা যায় সেটা ভবিষ্যতের ভরসা হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy