Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
মিউকরমাইকোসিস
Mucormycosis

চিকিৎসায় পুরো ইএনটি ওয়ার্ড বরাদ্দ

করোনার দ্বিতীয়ে ঢেউয়ে যেখানে বেসামাল অবস্থা মানুষজনের, তখনই গেড়ে বসেছে ছত্রাকঘটিত মিউকরমাইকোসিসের আতঙ্কও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২১ ০৬:৩৩
Share: Save:

এক দিকে চলছে চিকিৎসা, অন্য দিকে গবেষণা। মিউকরমাইকোসিস থেকে রোগীকে বাঁচানোর পাশাপাশি এই রোগ কী ভাবে ছড়াচ্ছে তা জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাঁকুড়া মেডিক্যালের চিকিৎসকেরা।

করোনার দ্বিতীয়ে ঢেউয়ে যেখানে বেসামাল অবস্থা মানুষজনের, তখনই গেড়ে বসেছে ছত্রাকঘটিত মিউকরমাইকোসিসের আতঙ্কও। এই রোগের চিকিৎসায় রাজ্যে এসএসকেএম হাসপাতালকে ‘এপেক্স হাব’ করার পাশাপাশি, বাঁকুড়া মেডিক্যাল ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজকে ‘সাব-হাব’ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।

বাঁকুড়া মেডিক্যালের ‘নাক-কান-গলা’ বিভাগকেই আপাতত মিউকরমাইকোসিস ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। সেখানে কেবল কোভিড মুক্ত মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীদেরই রাখা হচ্ছে। কোভিড ও মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডেই রাখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত বাঁকুড়া মেডিক্যালে ন’জন রোগী মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে এক জনের সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে। আর এক জনের সংক্রমণ মাথায় ছড়িয়ে পড়ায় তাঁকে এসএসকেএমে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই মুহূর্তে বাঁকুড়া মেডিক্যালে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত সাত জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।

আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হচ্ছে কী ভাবে?

বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান জানান, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে মিউকরমাইকোসিসের চিকিৎসায় ১১ জনের একটি ‘মনিটর অ্যান্ড কন্ট্রোল টিম’ গড়া হয়েছে। ওই টিমের চেয়ারম্যান করা হয়েছে বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার তরুণ পাঠককে। আহ্বায়ক রয়েছেন নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ তথা মিউকরমাইকোসিসের রাজ্য বিশেষজ্ঞ দলের অন্যতম সদস্য মনোজ মুখোপাধ্যায়। মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্তদের ওয়ার্ডে ‘হাইডিপেন্ডেন্সি ইউনিট’ গড়া হয়েছে। এর ফলে, জরুরি ভিত্তিতে রোগীরা অক্সিজেন-সহ নানা সুবিধা পাচ্ছেন।

হাসপাতালের সুপার তরুণবাবু বলেন, “মিউকরমাইকোসিসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের শরীরে রোগ নির্ণয় যত দ্রুত সম্ভব করার চেষ্টা করছি। এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত শরীরের কোষ নষ্ট করতে থাকে। তাই যত দ্রুত রোগ নির্ণয় করা যাবে, ততই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। রোগীরা কী ভাবে ও কেন এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, সেটিও আমরা বিশেষ ভাবে খতিয়ে দেখছি।”

তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত বাঁকুড়া মেডিক্যালে মিউকরমাইকোসিসের উপসর্গ নিয়ে যাঁরা ভর্তি, তাঁরা উচ্চ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। সুপার বলেন, “সাধারণত আমাদের শরীরের রোগ ঠেকানোর ক্ষমতা বা ‘ইমিউনিটি পাওয়ার’ মারাত্মক ভাবে কমে গেলে মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এক দিকে ডায়াবিটিস ও অন্য দিকে করোনা— এই দু’য়ের ধাক্কায় কিছু মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রচণ্ড পরিমাণে কমে যাচ্ছে। ফলে, এই রোগ শরীরে সহজেই সংক্রমিত হচ্ছে।”

সুপার জানান, এই পরিস্থিতিতে ডায়াবিটিসের ঠিকমতো চিকিৎসা, জ্বরে আক্রান্তদের নাক বা গলা থেকে গাঢ় কালো জল বা কফ বেরোচ্ছে কি না, সে দিকে বেশি করে খেয়াল রাখতে হবে। এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত রোগ নির্ণয়ের জন্য শারীরিক পরীক্ষা করানো জরুরি।

অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “মিউকরমাইকোসিসের রোগীদের সর্বোচ্চ পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা। সংক্রমিত জায়গাগুলি দ্রুত অস্ত্রোপচার করে বাদ দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখার জন্য মনোবিদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Mucormycosis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy