প্রতীকী চিত্র
শহরের মাত্র ৩৯ জন বাসিন্দা স্বেচ্ছায় কোভিড পরীক্ষা করিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যেই করোনা পজ়িটিভ ১৩ জন! বৃহস্পতিবার দুবরাজপুরের এই ছবিই বলে দিচ্ছে, এই পুর-শহরের করোনা সংক্রমণের অবস্থা ঠিক কোন জায়গায়। এখানেই শেষ নয়, অসুস্থ হয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি থাকা দুবরাজপুরের বৃদ্ধও এ দিন মারা গিয়েছেন। তার আগেই জানা গিয়েছে, তিনিও কোভিড পজ়িটিভ ছিলেন।
মঙ্গলবারও দুবরাজপুরের করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বোলপুর কোভিড হাসপাতাল থেকে দুর্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান। সব মিলিয়ে বীরভূম জেলার সার্বিক করোনা-চিত্র মোটের উপরে আশার আলো দেখালেও দুবরাজপুরের পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘দুবরাজপুর জেলার হটস্পট হচ্ছে কিনা, সেটা এবার ভাল ভাবে খতিয়ে দেখা দরকার।’’ এর জন্য আরও বেশি সংখ্যক পরীক্ষা করানো দরকার বলে তিনি জানাচ্ছেন।
সমস্যা অবশ্য এই পরীক্ষা করানো নিয়েই। প্রশাসনের দাবি, বারবার বলেও দুবরাজপুরের বাসিন্দাদের বড় অংশই র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের জন্য নিজেদের লালারসের নমুনা দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। শহরের এই যখন ছবি, তখন পরপর তিন দিন কোভিড টেস্টের শিবির করে কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। বিডিও (দুবরাজপুর) অনিরুদ্ধ রায় বলছেন, ‘‘দুবরাজপুরের ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ যাতে টেস্ট করিয়ে নেন, তার জন্য ক’দিন আগে ব্লক টাস্ক ফোর্সের সভায় প্রস্তাব পাশ করানো হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল, কোভিড টেস্ট না করালে শক্ত হবে প্রশাসন। কিন্তু পরীক্ষা করাতে বাসিন্দাদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।’
জেলায় করোনা
মোট আক্রান্ত : ৩,৪৭৭
•অ্যাক্টিভ রোগী: ৪৮৯
•এখনও পর্যন্ত সুস্থ: ২,৯৬২
বিডিও আরও জানিয়েছেন, ওই বৈঠকে পুরসভা বলেছিল মাইকিং করে কোভিড শিবিরে এসে পরীক্ষা করানোর কথা সকলকে জানাবে। কিন্তু প্রথম দু’দিন টেস্টের জন্য স্বেচ্ছায় যথাক্রমে শিবিরে হাজির হয়েছিলেন যথাক্রমে পাঁচ এবং চার জন। বহু চেষ্টার পর বৃহস্পতিবার ৩৯ জন এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যেই ১৩ জন পজ়িটিভ। কিছুটা হতাশা নিয়েই বিডিও-র মন্তব্য, ‘‘এর থেকে বরং গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে এক দিনে ১০০ জনের করোনা টেস্ট করানো যেত। কিন্তু শহরের পরিস্থিতিতে চোখ বন্ধ করেও থাকা যাচ্ছে না।’’
শহরের মানুষের মধ্যে করোনা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এবং পরীক্ষা করানোর আগ্রহ তৈরি না করাতে না পারায় পুরসভার ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। দুবরাজপুর পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন (যিনি ব্লক টাস্ক ফোর্সের মধ্যেও রয়েছেন) পীযূষ পাণ্ডে অবশ্য দায় নিতে চাইছেন না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এত প্রচার সত্বেও শহরের ঘিঞ্জি বাজারের ব্যবসায়ীদের এক জনও টেস্ট করাতে রাজি হচ্ছেন না।’’ অথচ দুবরাজপুর শহরে এ ভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর পিছনে এই বাজারে বড় ভূমিকা রয়েছে বলে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর মনে করছে। এই অবস্থায় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের করোনা টেস্ট করানোর জন্য শক্তি প্রয়োগকেই এক মাত্র রাস্তা হিসাবে দেখছে প্রশাসনের একাংশ। যদিও সেই শক্তি প্রয়োগ কোন পথে হবে, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। শহরের কিছু সচেতন মানুষ বলছেন, ‘‘এক দিনে ৩৯ জনের মধ্যে ১৩ জনের কোভিড ধরা পড়া এবং দুই করোনা আক্রান্তে মৃত্যু, ভয় সত্যিই বাড়িয়ে দিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy