সোমবার গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পৌষমেলার মাঠের গেট। মঙ্গলবার সেখান দিয়েই যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র>
সোমবার শান্তিনিকেতনের বিশাল সংখ্যক মানুষের জমায়েত করোনা-সংক্রমণ বাড়িয়ে দেবে না তো? সেই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মধ্যে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা বলছেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ রুখতে সবচেয়ে জরুরি হল জমায়েত এড়িয়ে চলা। পারস্পরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখা ও মুখে মাস্ক পরা। অতিমারী রুখতেই এই বিধি। সেই সতর্কতার কোনওটাই যদি মানা-না হয়ে থাকে, তা হলে ভয় অবশ্যই রয়েছে।’’
পাঁচিল দিয়ে পৌষমেলার মাঠ ঘেরাকে কেন্দ্র করে শনিবার থেকে যে অশান্তির সূত্রপাত হয়েছিল, সোমবার সেটাই জনরোষের চেহারা নিয়ে আছড়ে পড়ে শান্তিনিকেতনে। দমকল অফিস থেকে মেলার মাঠ পর্যন্ত হাজার চারেক মানুষের মিছিলে ছিলেন বোলপুর শহর ও লাগোয়া বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ।
ট্রাক্টরে করে লোকজন এসেছিলেন সুরুল, প্রান্তিক, রূপপুর রাইপুর, এমনকি কসবা অঞ্চল থেকেও। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিশাল ভিড়ে দূরত্ববিধি বজায় রাখার বালাই ছিল না। ভিড়ে মিশে থাকা অধিকাংশ মানুষের মুখেই মাস্ক ছিল না। সেটাই ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে।
বীরভূমে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা বারোশো ছাড়িয়ে গিয়েছে। এটা ঠিক যে এখনও জেলায় সুস্থতার হার উল্লেখযোগ্য ভাবে ভাল। তবে প্রায় প্রতিদিন যে ভাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপসর্গহীন আক্রান্তের খোঁজ মিলছে, সেটা মোটেও স্বস্তিদায়ক খবর নয়।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘যে মাঠ ঘিরে ফেলার প্রতিবাদে এত মানুষের জমায়েত হয়েছিল, তার ঠিক ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ৮ অগস্ট থেকে দিন কয়েকের মধ্যে আধিকারিক সহ প্রায় ২০ জন পুলিশ কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ কোভিড হাসপাতালে, কেউ সেফ হোমে বা বাড়িতে নিভৃতবাসে রয়েছেন। উপসর্গহীন এমন কোনও কোভিড পজেটিভ রোগী ওই জমায়েতে থেকে থাকলে (যেটা মোটেই অসম্ভব নয়) বহু মানুষ সংক্রমিত হতেই পারেন।’’
এ দিকে, টেস্টের সংখ্যা বাড়িয়ে নেওয়ার পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ধরে এগোতেই জেলার এমন বহু এলাকায় করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে, যে সব এলাকায় এর আগে কোনও আক্রান্তকে চিহ্নিত করা যায়নি। স্বাস্থ্যকর্তাদের মত, কোনও ভাবে উপসর্গহীন কোভিড পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে আসার জন্য সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। সংক্রমণের গতি বুঝতে এবং সেটাকে ঠেকাতে র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট এবং আরটিপিসিআর দু’ধরনের টেস্টের মাধ্যমে দিনে কমপক্ষে ১৫০০ নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কোনও কোনও দিন শুধু বীরভূম স্বাস্থ্য জেলা সেই লক্ষ্য ছাপিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু, তাতেও সোমবারের জমায়েত নিয়ে আশঙ্কা কাটছে না। এক স্বাস্থ্য কর্তা বলছেন, ‘‘সোমবার শান্তিনিকেতনে জমায়েতে কোন এলাকা থেকে কত মানুষে এসেছিলেন তাঁদের চিহ্নিত করে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা অসম্ভব।’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy