সদর হাসপাতালের পুরনো ক্যাম্পাসে হচ্ছে অক্সিজেন প্লান্ট। নিজস্ব চিত্র
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে পুরুলিয়ায়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী গত কয়েকদিনে সব থেকে কম ‘অ্যাক্টিভ কেস’ এই জেলাতেই। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন শুরু করে দিয়েছে তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি। জোর দেওয়া হচ্ছে অক্সিজেনের যোগান ও শয্যা বাড়ানোয়। পুরুলিয়া মেডিক্যালে তৈরি হচ্ছে দু’টি ‘কোভিড পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড’। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার সোমবার বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন। সে কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো আমরা প্রস্তুত হচ্ছি।’’
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের রবিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, দু’টি ঢেউ মিলিয়ে পুরুলিয়ার মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৯,০৭০। মৃত্যু হয়েছে ১১২ জনের। প্রথম পর্বের তুলনায় দ্বিতীয় পর্বে পুরুলিয়ায় অনেক বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। প্রথম পর্বে, লকডাউন ঘোষণার দু’মাস পরেও আক্রান্তশূন্য ছিল জেলা। গত ডিসেম্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল সাত হাজারের নীচে। মৃত্যুর হয়েছিল ৪৭ জনের। চলতি বছরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জানুয়ারির গোড়া থেকে জুলাইয়ের ১২ তারিখ পর্যন্ত পুরুলিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২,১২৩। মৃত্যু হয়েছে ৬৫ জনের।
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, চলতি বছরের গোড়ায় পুরুলিয়ায় আক্রান্তের হার ছিল এক শতাংশের নীচে। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহের পরে, সংক্রমণের লেখচিত্র উর্ধ্বমুখী হতে শুরু করে। চলতি বছরে অধিকাংশ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এপ্রিল থেকে জুনের মাঝের সময়ে। পরিসংখ্যান বলছে, অন্য জেলার তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা দ্রুত সামলেছে পুরুলিয়া। তবে এই পর্বে পরিকাঠামোগত বেশি কিছু খামতি নজরে এসেছে।
দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিক্যাল কলেজের হাতোয়াড়া ক্যাম্পাস জেলার প্রধান কোভিড হাসপাতাল হিসেবে কাজ করছে। প্রতিদিন দুর্গাপুর থেকে সড়ক পথে অক্সিজেন সিলিন্ডার এনে পরিস্থিতি সামালানোর অভিজ্ঞতা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের। এখন মেডিক্যালের হাতোয়াড়া ক্যাম্পাসে এলএমও (লিকুইড মেডিক্যাল অক্সিজেন প্লান্ট) আর সদর হাসপাতালের পুরনো ক্যাম্পাসে পিএসএ (প্রেশার সুইং অ্যাডসর্পশন) অক্সিজেন প্ল্যান্ট তৈরির কাজ চলছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, পিএসএ প্লান্ট বাতাস থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে ভাঁড়ারে মজুত করে।
জেলাশাসক জানান, হাতোড়ায়া ক্যাম্পাসে ২২৫টি শয্যা ছিলই। আরও একশো শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিটির সঙ্গে অক্সিজেনের সংযোগ থাকবে। হাতোয়াড়া ক্যাম্পাসের সাত তলায় তৈরি হচ্ছে ‘কোভিড পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড’। সদর হাসপাতালের পুরনো ক্যাম্পাসে রোগীর পরিজনেদের জন্য একটি ভবন তৈরি হয়ে রয়েছে। সেটিকেও ‘কোভিড পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ড’ হিসাবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। পুরুলিয়া মেডিক্যালের সুপার সুকোমল বিষয়ী জানান, এ ছাড়াও চলছে নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (নিকু), পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু), এইচডিইউ (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) গড়ার কাজ।
প্রতিটি গ্রামীণ হাসপাতাল ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিড রোগীদের জন্য চারটি করে সাধারণ শয্যা বরাদ্দ ছিল। তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় তা রেখে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান, পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy