পসরা: বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বাহাদুরগঞ্জে শুক্রবার ক্রেতা-বিক্রেতা। ছবি: শুভ্র মিত্র।
সোমবার রথযাত্রা। দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ অনেকটা কমলেও করোনার চোখরাঙানি রয়েই গিয়েছে। জনজীবনে নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল হলেও পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে উৎসবের ব্যাপারে বেশ কিছু সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসন ও আয়োজক কমিটিগুলি।
পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোভিড-পরিস্থিতিতে ভিড় এড়াতে রথযাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়নি। পুরুলিয়া চকবাজারের রাধাগোবিন্দ জিউয়ের শতাব্দী প্রাচীন রথযাত্রা এ বারও স্থগিত থাকছে বলে ট্রাস্টের তরফে শচীদুলাল দত্ত জানান। বলরামপুরে আলাদা আলাদা রথে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা কালীতলা থেকে রথতলা পর্যন্ত যান। গত বছর একটি রথে তিনটি বিগ্রহকে নিয়ে যাওয়া হয়ে গিয়েছিল। এ বছর রথ সাজানো হয়ে গিয়েছিল বলে জানাচ্ছেন আয়োজকেরা।
কাশীপুরে রথযাত্রা কমিটির অন্যতম কর্তা মনোজ চেল জানান, প্রশাসনের নির্দেশ মেনে শুধু আচার মেনে পুজো হবে। মানবাজার থানার গড় পাথরমহড়া রাজবাড়ির শতাব্দী প্রাচীন রথ হাটতলায় মাসির বাড়িতে যায়। রাজবাড়ির প্রবীণ প্রতিনিধি দেবাশিস নারায়ণদেব বলেন, ‘‘কোভিড-বিধি মেনে বিগ্রহকে কোলে চড়িয়ে মাসির বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
ঝালদা সর্বজনীন রথ কমিটির পক্ষে শ্যামল কর্মকার ও পুরুলিয়ার জয়পুরের রথযাত্রা কমিটির অন্যতম কর্তা আনন্দময় ভাণ্ডারী জানান, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।
রথযাত্রা নিয়ে শুক্রবার একটি বৈঠক হয় বাঁকুড়া সদর থানায়। উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার আইসি দেবাশিস পাণ্ডা, বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দিলীপ আগরওয়াল প্রমুখ। দিলীপবাবু বলেন, “পথে রথ চালানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শহরের বড় রথ ও ছোট রথ কমিটি রথেই বিগ্রহ বসিয়ে পুজো করবে। কোভিড-বিধি মেনে কোথাও ভিড় না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মল্লরাজধানী বিষ্ণুপুরের কৃষ্ণগঞ্জ আটপাড়া ও মাধবগঞ্জ এগারোপাড়ার মধ্যে প্রতি বছর সৌজন্যমূলক প্রতিযোগিতা চলে। শুক্রবার সকালে বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসনিক ভবনে বৈঠক হয়। ছিলেন মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত, এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) কুতুবুদ্দিন খান, পুরপ্রশাসক দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিভিন্ন রথ কমিটির কর্মকর্তারা। প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার সকাল ৬ টা থেকে মাধবগঞ্জ এগারোপাড়ায় বাঁশের ব্যারিকেডের মধ্যে রথের উপর বিগ্রহ বসিয়ে রথ টানার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্য দিকে, কৃষ্ণগঞ্জ আটপাড়ায় সকাল ৯টা নাগাদ একই ভাবে রথতলা চত্বরে ব্যারিকেড গড়ে রথ টানা হবে।
মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমারবাবু বলেন, “সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, রাত ৯টার মধ্যে রথতলার ভিড় খালি করতে হবে। এ বিষয়ে রথ কমিটিগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, নিরাপত্তার জন্য কমিটিগুলিকে মন্দির চত্বর ও রথতলায় ঢোকার গেটে নজরদারি ক্যামেরা বসাতে বলা হয়েছে। মন্দিরে প্রবেশের প্রতিটি গেটে ‘থার্মাল গান’ দিয়ে ভক্তদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হবে। থাকবে স্যানিটাইজ়ার। মাস্ক ছাড়া, মন্দির প্রাঙ্গণে ঢোকা নিষিদ্ধ। কমিটির স্বেচ্ছাসেবকেরা পুলিশের সঙ্গে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করবেন। মন্দির চত্বরে খাবারের দোকান করা যাবে না।
মাধবগঞ্জ এগারোপাড়া কমিটির পক্ষে খোকন মহান্তি বলেন, “প্রশাসনের নির্দেশ মেনেই উৎসব হবে।” কৃষ্ণগঞ্জ আটপাড়া ষোলোআনা কমিটির সভাপতি রবিলোচন দে বলেন, “মন্দিরে নাম সঙ্কীর্তন হবে। রথ টানার সময় থাকবে ঢাক ও বাদ্যযন্ত্র। সব কিছুই হবে নিয়ম মেনে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy