Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Corona Virus

তল্পিতল্পা গুটিয়ে বাড়ি-পথে

অনেকেই হস্টেল থেকে বেরিয়েও বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে না পেরে স্থানীয় হোটেলগুলিতে উঠেছেন।

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে  এ বার শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। আজ রবিবার থেকে হাট বন্ধ থাকছে। শনিবার অবশ্য হাটে ছিল উপচে পড়া ভিড়। নিজস্ব চিত্র

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে এ বার শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরির হাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। আজ রবিবার থেকে হাট বন্ধ থাকছে। শনিবার অবশ্য হাটে ছিল উপচে পড়া ভিড়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০০:০৯
Share: Save:

মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধান। ফাঁকা হস্টেল, সুনসান বিশ্বভারতী। ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকাংশই শনিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ঘর খালি করে চলে গিয়েছেন। হাতে গোনা যে ক’জন থেকে যেতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরাও চাইছেন একসঙ্গে থাকতে। কারণ, রাতবিরেতে ফাঁকা হস্টেল একা থাকার জন্য কতটা নিরাপদ প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। শুক্রবার সন্ধ্যায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সতর্কতা জারি করে বিশ্বভারতী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত পঠন-পাঠন, পরীক্ষা-সহ অন্যান্য সমস্ত পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি স্থগিত রাখতে হবে। একই সঙ্গে আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের হস্টেল খালি করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেই, শনিবার সকাল থেকে সমস্ত হস্টেলগুলিতে আবাসিকেরা নিজেদের ব্যাগ, বাক্স গুছিয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নেন। অনেকেই হস্টেল থেকে বেরিয়েও বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে না পেরে স্থানীয় হোটেলগুলিতে উঠেছেন। কেউ আবার কাছাকাছি থাকা সহপাঠীর বাড়িতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাঁদেরই একজন বলেন, “আমার বাড়ি বিহারে। হঠাৎ করে আজকের মধ্যে টিকিটের ব্যবস্থা করতে না পেরে হোটেলে উঠলাম। কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারির পর কিছুদিন সময় দিলে ভাল হত।’’

বিশ্বভারতী সূত্রে অবশ্য খবর, বিজ্ঞপ্তিতে হস্টেল ছাড়ার জন্য কোনও সময়সীমা নির্দিষ্ট করা হয়নি। কিন্তু এমনভাবে সতর্কতার কথা বলা হয় যে সকলে তাড়াহুড়ো শুরু করেন। অন্য রাজ্য বা দূর থেকে পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের এত তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য বিমান, ট্রেন বা বাসের টিকিটের ক্ষেত্রেও সমস্যা দেখা যায়। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করেই মৌখিকভাবে কয়েকটি হস্টেলে দু’দিনের সময় দেওয়া হয়, কয়েকটিতে আবার আবাসিকদের শনিবারের মধ্যেই ঘর ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় করোনা ভাইরাস নিয়ে বৈঠকের পরে ১২ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বেশিরভাগ হস্টেল খালি হয়ে যায়। বিশ্বভারতীর গেটে রিকশা, টোটো চালকদের ভিড় দেখা যায় আবাসিকদের স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তের ফলে হস্টেল ছেড়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থা করতে পারেননি তামিল বিভাগের ছাত্র শক্তি ঈশ্বরণের মতো বেশ কয়েকজন। জুপুরের পরে একদম ফাঁকা হয়ে যাওয়া ছাত্রাবাসে বসে শক্তি বলেন, “প্রথমে আমরা খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। আমার

বাড়ি তামিলনাড়ু। আচমকা ফেরার টিকিট পাওয়া সম্ভব নয় এখন যা পরিস্থিতি। বিষয়টি প্রক্টরের কানে যাওয়ায় তিনি জানান, বিভাগীয় প্রধানের সই করা আবেদনপত্র জমা দিতে হবে হস্টেলে থেকে যাওয়ার জন্য। এটা জানার পরেই ঠিক করেছি যতদিন টিকিট না পাচ্ছি ততদিন হস্টেলেই থাকব।”

প্রক্টর শঙ্কর মজুমদার বলেন, “বিদেশি পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকার নেবে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে যা নিয়ম হবে আমরাও তাই পালন করব। তার আগে পর্যন্ত ছাত্রীরা যে যে হোস্টেলে আছে সেখানেই থাকবে। প্রতিটি হস্টেলে জল, আলো এবং নিরাপত্তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা থাকবে।” তবে বিদেশি ছাত্রদের জন্য পৃথক হস্টেল থাকলেও, বিদেশি ছাত্রীরা বিভিন্ন হস্টেলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন। তাঁদের পক্ষে বড় বড় হস্টেলগুলিতে একাকী বা দু’একজন মিলে থাকায় নিরাপত্তার অভাবের প্রশ্ন থেকেই যায়।

অন্যদিকে, বিশ্বভারতী বন্ধের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরে ক্লাবমোড় থেকে সঙ্গীত ভবন পর্যন্ত রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Virus student Shantiniketan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy