সতর্ক: কাজে যোগ দেওয়ার আগে দস্তানা পরে নিচ্ছেন বাঁকুড়া শহরের সমবায় বিপণির কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
নোভেল করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় বাঁকুড়ার নার্সিংহোমগুলিতেও আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু হতে যাচ্ছে। শনিবার করোনা-সংক্রান্ত বিষয়ে বাঁকুড়া-পুরুলিয়া জেলার দায়িত্বপ্রার্ত মনিটরিং অফিসার তথা রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব এম ভি রাও-এর সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানাল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিনই পুরুলিয়াতেও রাও বৈঠক করেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বার জেলার সমস্ত ব্লকে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হবে।
বাঁকুড়ার সার্কিট হাউসে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ, জেলা পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্যজেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক যথাক্রমে শ্যামল সোরেন ও জগন্নাথ সরকার এবং বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান প্রমুখ।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বাঁকুড়া জেলায় কতগুলি আইসোলেশন ও কোয়রান্টিন সেন্টার গড়া হয়েছে, এই মুহূর্তে কেউ সেখানে ভর্তি রয়েছেন কি না তা জানতে চান অতিরিক্ত মুখ্য সচিব। জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে যথেষ্ট পরিমাণ ‘স্যানিটাইজ়ার’, ‘মাস্ক’ রয়েছে কি না সেই খবরও নেন তিনি।
বাঁকুড়ায় এখন করোনা-আক্রান্ত সন্দেহে কেউ হাসপাতালের আইসোলেশনে বা কোয়রান্টিনে নেই জানিয়ে বাঁকুড়া জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “সদ্য কানাডা, চিন, ব্রিটেনের মতো কয়েকটি করোনা-আক্রান্ত দেশ থেকে ঘুরে আসা ১৪ জনকে চিহ্নিত করে বাড়িতে রেখে পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছে। তাঁদের কারও মধ্যেই করোনা-আক্রান্তের উপসর্গ নেই।’’ তিনি জানান, বাঁকুড়ায় বিভিন্ন নার্সিংহোমের সঙ্গে আলোচনা করে তাদেরও আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি রাখতে বলা হয়েছে। তারা আশ্বাসও দিয়েছে। আগামী সোমবার জেলার নার্সিংহোমের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শ্যামলবাবু বলেন, “করোনা-আক্রান্ত রোগীদের পরিচর্যা কী ভাবে করতে হয়, কী ভাবে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করতে হয়, তা ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে নার্সিংহোমের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বোঝানো হবে।”
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া মেডিক্যাল এবং ছাতনা, বড়জোড়া, ওন্দার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ছাড়াও শালতোড়া, তালড্যাংরা ও সিমলাপাল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সেখানেও রোগীদের ভর্তি করা যাবে।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিমবাবু বলেন, “স্বাস্থ্য ভবনের কাছে আমরা হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার, মাস্ক-সহ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চেয়েছি। শীঘ্রই ওই জিনিসপত্রগুলি দেওয়া হবে বলে মনিটরিং অফিসার আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন।” তিনি জানান, জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বাঁকুড়া মেডিক্যালের আউটডোরে ফিভার ক্লিনিকের পরিকাঠামো বাড়ানো হয়েছে। জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা টিকিট কাউন্টার চালু করে লাইনে দাঁড়ানো লোকজনের মধ্যে যাতে এক মিটার দুরত্ব থাকে তার উপরেও নজরদারি চালানো হচ্ছে।
হুড়ার কন্যাশ্রী ভবনে রাও-এর সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত প্রমুখ। সম্প্রতি জেলার দু’প্রান্তে বাইরে থেকে আসা দুই যুবক জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছে শুনে তাঁদের কোনও অ্যাম্বুল্যান্স বা ছোটগাড়ি পুরুলিয়া মেডিক্যালে নিয়ে যেতে অস্বীকার করে। মাতৃযানে তাঁদের পাঠানো হয়। কিন্তু আগামী দিনে সংক্রমণ বাড়লে যাতে কাউকে গাড়ির অভাবে ভুগতে না হয়, সে জন্য এ দিনের বৈঠকে সমস্ত ব্লকেই অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জেলাশাসক বলেন, ‘‘প্রতিটি ব্লকে অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হবে। চালকদের ফোন নম্বর বিডিও এবং বিএমওএইচের কাছে থাকবে। এ দিন বৈঠকে প্রতিটি ব্লকের ‘কুইক রেসপন্স টিম’-কে আরও কার্যকরী করতে এবং সমন্বয় বাড়ানোর ব্যাপারে জোর দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ‘মাস্ক’ ও ‘গ্লাভস’ কতখানি প্রয়োজন, তা অতিরিক্ত মুখ্য সচিবকে বলা হয়েছে।’’ জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সৌমেন বেলথরিয়া এই পরিস্থিতিতে প্রতিটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সমস্ত ডাক্তারই যাতে উপস্থিত থাকেন, সেই প্রস্তাব দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy