এমন রসিদ ছাপিয়েই চলত টোল আদায়। নিজস্ব চিত্র।
বিগত কয়েক বছর ধরে বীরভূম জেলা পরিষদের নামে উঠছিল লক্ষ লক্ষ টাকার টাকা। বোলপুর শহর থেকে কিছুটা দূরে অবন সেতুর ঠিক মুখে এক ‘বেআইনি’ টোল বুথ বসিয়ে জেলা পরিষদের নামে টাকা তোলা চলছিল বলে সম্প্রতি অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে, জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারি এবং বোলপুর শহরের লাগাতার সিবিআইয়ের হানার পরে রাতারাতি উঠে গেল সেই টোল বুথ!
কেন হঠাৎ উঠে গেল সেই বুথ, তা নিয়েই এখন জোর জল্পনা। বোলপুর শহরের কিছুটা দূরেই রয়েছে ২বি জাতীয় সড়ক। সেই রাস্তা ধরে কলকাতা থেকে খুব সহজে বোলপুর, শান্তিনিকেতন, তারাপীঠ-সহ উত্তরবঙ্গে যাওয়া যায়। প্রতিদিন কয়েক হাজার ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে ওই রাস্তা দিয়ে। বীরভূম থেকে বর্ধমানের দিকে অবন সেতুর ঠিক মুখেই ঘেরোপাড়া এলাকায়, দীর্ঘদিন ধরে ছিল ওই টোল বুথটি। নীল-সাদা রং তার গায়ে। সেই কাউন্টার থেকেই জেলা পরিষদের নামে রসিদ ছাপিয়ে দিনের পর দিন বেআইনি ভাবে টোল আদায় চলত বলে অভিযোগ। যে সমস্ত গাড়ি শহরের ভিতরে প্রবেশ করছে কিংবা শহরের বাইরে যাচ্ছে, সেই সব গাড়ি পিছু ১০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত টোল নেওয়া হত বলে অভিযোগ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দৈনিক লক্ষ লক্ষ টাকা আয় হত ওই টোল বুথ থেকে—দাবি স্থানীয়দের।
সংবাদপত্রে সে খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে কিছুদিন টোল বুথটি বন্ধ থাকলেও পরে জায়গা পরিবর্তন করে সুরথেশ্বর শিব মন্দিরের কাছে বুথটি পুনরায় চালু করা হয়। নাম দেওয়া হয় ‘বীরভূম জেলা পরিষদ টোল প্লাজা’। মঙ্গলবার দেখা যায়, ওই টোল বুথ বন্ধ। এমনকি কাউন্টারের গায়ে লেখা ‘বীরভূম জেলা পরিষদ’-ও রাতারাতি মুছে ফেলা হয়েছে! বুথের ভিতরে নেই কোনও রসিদ।
এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, টোল বুথ বৈঠ হলে এ ভাবে গোপনে কেন সমস্ত কিছু গুটিয়ে ফেলা হল! কেনই বা জেলা পরিষদের নাম মোছা হল? সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষের দাবি, “এই টোল প্লাজাটি বেআইনি ভাবে শাসকদলের কর্মীদের মদতেই চলত। তাঁদের নিজেদের মধ্যে সেই টাকার ভাগ বাঁটোয়ারা হত। সিবিআই বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছে, তাই এখন তাঁরা ভয়ে সেটি তুলে দিতে বাধ্য হয়েছেন।” বিজেপি-র বোলপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অষ্টম মণ্ডল বলেন, “কেন্দ্রীয় দল যখন আসছে, তখন বাংলা সড়ক যোজনার বোর্ড তুলে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনার বোর্ড লাগানো হচ্ছে। সেই রকমই এই টোলটিও বেআইনি ভাবে চলত। লক্ষ লক্ষ টাকা তৃণমূল নেতাদের পকেটে যেত। এখন সিবিআইয়ের ভয়ে তা গুটিয়ে ফেলা হল।”
ওই টোল বুথ নিয়ে জেল প্রশাসনের কোনও আধিকারিক কিছু বলতে চাননি। জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরীকে এ দিন বার বার ফোন করা হলেও তাঁর নিরাপত্তারক্ষী ‘দাদা ব্যস্ত আছেন’ জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy