Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Congress

Congress: প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগে মামলায় প্রশ্ন কংগ্রেসের

ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দবাজার এলাকার বাসিন্দা সুভাষবাবু ঝালদা পুরসভার কর্মী।

অভিযোগকারী প্রত্যক্ষদর্শীর বাড়ির সামনে পুলিশের পাহারা। নিজস্ব চিত্র

অভিযোগকারী প্রত্যক্ষদর্শীর বাড়ির সামনে পুলিশের পাহারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া, ঝালদা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২২ ০৯:৩৬
Share: Save:

কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন হওয়ার পরে, নিজেকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে ঝালদায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সুভাষ গরাই নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি নিয়ে তার পরে অভিযোগ করেন নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু। সেটি প্রথম অভিযোগটির সঙ্গে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কিন্তু গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস।

পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর প্রশ্ন, ‘‘সুভাষ গরাই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, এ কথা ঠিকই। কিন্তু তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করার আগে, এক বারও তপন কান্দুর স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেননি। যাঁর স্বামীকে গুলি করে আততায়ীরা হত্যা করল, তাঁর সঙ্গে এক বারও কথা বলার প্রয়োজন মনে হল না!’’ সুভাষবাবুকে বারবার ফোন করা হলেও, পরিজনেরা দাবি করেন, তিনি বাড়িতে নেই। বুধবার বিকেলে তাঁর বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশি পাহারা রয়েছে। বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিযেছে, ঝালদার ২ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দবাজার এলাকার বাসিন্দা সুভাষবাবু ঝালদা পুরসভার কর্মী। এলাকায় তপনবাবুর ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত হলেও, রাজনৈতিক বৃত্তে তিনি পরিচিত মুখ নন। প্রায়ই বিকেলে আরও কয়েক জনের সঙ্গে তিনিও তপনবাবুর সঙ্গে হাঁটতে বেরোতেন। সুভাষবাবু পুলিশের কাছে অভিযোগে জানান, সে দিন বিকেল সওয়া ৫টা নাগাদ তাঁরা বাঘমুণ্ডি রোডে গোকুলনগর পেরিয়ে খেরিয়াবাঁধ এলাকা থেকে ফিরে আসছিলেন। সে সময়ে একটি কালো মোটরবাইকে অপরিচিত তিন জন তপন কান্দুর সামনে এসে দাঁড়ায়। এক জন তপন কান্দুকে তাক করে তিনটি গুলি করে। তার পরে, তারা বাঘমুণ্ডির দিকে পালিয়ে যায়। তপনবাবু মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁরা ভয়ে কাঁপছিলেন বলে
পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। প্রকৃত দুষ্কৃতীরা যাতে ধরা পড়ে ও চরম শাস্তি পায়, পুলিশের কাছে সে আর্জি জানিযেছেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, এই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু হয়েছে।

খুনের ঘটনাটি নিয়ে তপনবাবুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুও পুলিশের কাছে পৃথক একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেখানে তিনি ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষ, ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী দীপক কান্দু, দীপকের বাবা নরেন কান্দু-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। পুলিশ সুপারের কাছে পূর্ণিমাদেবী ওই অভিযোগে জানিয়েছেন, ভোটের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই ঝালদার আইসি সঞ্জীব ঘোষ তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য নানা ভাবে চাপ দিচ্ছিলেন। সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ভয় দেখানোর চেষ্টা হয়। এই বিষয়টি নিয়ে দলের জেলা সভাপতি নেপালবাবু হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন, দাবি করেছেন পূর্ণিমাদেবী। তিনি অভিযোগ করেছেন, সান্ধ্যভ্রমণ থেকে বাড়ি ফেরার পথে, পুলিশের নাকা চেকিং পোস্টের নাকের ডগায়, বীরসা মোড়-বাঘমুণ্ডি রাস্তায় গোকুলনগর গ্রামের কাছে তিন জন একটি মোটরবাইকে এসে তাঁর স্বামীকে গুলি করে। ঝালদা থেকে রাঁচিতে নিয়ে যাওয়ার পরে, চিকিৎসক তাঁর স্বামীকে মৃত ঘোষণা করেন। পর দিন ময়না-তদন্তের পরে, বিকেলে দেহ বাড়িতে আসে। তাই তাঁর অভিযোগ করতে দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পূর্ণিমাদেবী।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপালবাবুর দাবি, ‘‘পূর্ণিমাদেবী তাঁর অভিযোগটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করার অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ আগেই প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করেছে। যদিও পূর্ণিমাদেবীর অভিযোগের ভিত্তিতে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ না করলে আমরা আদালতে যাব।’’ বুধবার পূর্ণিমাদেবী বলেন, ‘‘শুনেছি, এই ঘটনায় একটি অভিযোগ হয়েছে। যিনি করেছেন, তিনি আমার স্বামীর পরিচিত। কিন্তু এ নিয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘১১ মার্চ রাতে আমার স্বামী বাড়ি ফেরার পরে, আমি জানতে পারি আইসি ওঁকে ডেকেছিলেন। তিনি আমাকে জানান, আইসি তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছেন। না হলে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছেন। আমরা কোন দল করব, সে নিয়ে আইসি কেন চাপ দেবেন? আমি সঙ্গত কারণেই আইসি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি।’’

জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগনের আশ্বাস, পূর্ণিমা কান্দুর অভিযোগের আগেই প্রত্যক্ষদর্শীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পূর্ণিমাদেবীর অভিযোগটি এই তদন্তের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy