খাঁচাবন্দি হল অন্য হনুমান। খণ্ডগ্রামে। নিজস্ব চিত্র
ঘণ্টা পাঁচেকের স্বস্তি ফের বদলে গেল আতঙ্কে।
স্বস্তি মিলেছিল সোমবার দুপুরে দুবরাজপুরের খণ্ডগ্রামে ‘ত্রাস সৃষ্টিকারি’ হনুমান ধরা পড়ার খবরে।
দিন কয়েক ধরে খাঁচা পেতে অপেক্ষায় কাজ না হওয়ায় ওই হনুমান ধরতে এ দিন জাল, খাঁচা নিয়ে ওই গ্রামে যান বনকর্মী ও আধিকারিকেরা। লাঠি-বল্লম নিয়ে প্রস্তুত ছিলেন গ্রামের মানুষও। যৌথ অভিযানের মুখে পড়ে গ্রামের একটি গোয়ালঘরে ঢুকে পড়েছিল সে। জাল
ফেলে তাকে ধরে ফেলা হয়। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন বনবিভাগের আধিকারিক, স্থানীয় বাসিন্দারা।
কিন্তু সন্ধ্যার মুখেই স্বস্তি বদলায় আতঙ্কে। ফের এক শিক্ষক হনুমানের আক্রমণে জখম হন। কোন হনুমান ধরা পড়েছে তা নিয়ে ছড়ায় ধন্দ। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, এ দিন সকাল থেকে অনেক কসরতের পরে যে হনুমাটিকে ধরা হয়েছে, সেটি আদতে হানাদার হনুমান নয়। সেই খবরে ফের ছড়িয়েছে উৎকন্ঠা বেড়ে গিয়েছে। বিভ্রান্ত বন দফতরও।
বীরভূমের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলছেন, ‘‘গ্রামবাসীদের দেখিয়ে দেওয়া হনুমানই এ দিন ধরা হয়েছিল। কিন্তু সত্যিই যদি আতঙ্ক সৃষ্টিকারী হনুমান ধরা না পড়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে মঙ্গলবার ফের গ্রামে যাবেন বনকর্মীরা।’’
এলাকাবাসী জানান, এমনিতে গাছের আড়ালে বা বাড়ির ছাদে লুকিয়ে থাকে হনুমানটি। হঠাৎ সেখান থেকে নেমে এসে পথচলতি লোক থেকে বাড়ির মহিলা, শিশুকে কামড়ে-আঁচড়ে জখম করছিল। তার হামলায় জখমের সংখ্যা পঞ্চাশের বেশি। রবিবারও ৬ জনকে কামড়ে-আঁচড়ে রক্তাক্ত করেছিল সে।
মাসখানেক ধরে ওই হনুমানের উপদ্রবে আতঙ্কিত ছিলেন দুবরাজপুরের খণ্ডগ্রামের বাসিন্দারা। হাসপাতালেও জলাতঙ্কের টিকার অভাব দেখা দিয়েছিল। যে কোনও ভাবেই সেটিকে ধরতে মরিয়া ছিলেন সকলেই।
বন দফতরের দু’তিন ধরে খাঁচা পেতেছিল। কিন্তু অধরা ছিল হনুমান। তা নিয়ে ক্ষোভ ছিল এলাকাবাসীর। সোমবার হনুমান ধরতে গেলে প্রাথমিক ভাবে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন বনকর্মী, আধিকারিকেরা। দুবরাজপুর রেঞ্জের অন্তর্গত হলেও হনুমানটিকে ধরতে যান ইলামবাজার রেঞ্জের বনকর্মীরা।
এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ ইলিয়াস মণ্ডল, শেখ রিয়াজউদ্দিন, শেখ হবিব, শেখ রহমত জানান, বন দফতরের কর্মীরা সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ গ্রামে পৌঁছনোর আগে থেকেই লাঠি-বল্লম নিয়ে হনুমানটিকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিলেন সকলে। ছিলেন ইলামবাজারের বিট অফিসার সন্দীপ মণ্ডল এবং ইলামবাজার ও বোলপুর বিটের কয়েক জন বনকর্মী। সেই সময় দু’টি হনুমান মারপিট করতে করতে আসে। একটি হনুমান স্থানীয় বাসিন্দা হরিময় গড়াইয়ের গোয়ালঘরে ঢুকে পড়ে। সেটিই হানাদার হনুমান ভেবে জাল ফেলে ধরেন বনকর্মীরা। স্বস্তি পেয়েছিল গোটা গ্রাম। কিন্তু তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সন্ধ্যার মুখে ওই পাড়াতেই শেখ সালাউদ্দিন নামে এক শিক্ষককে মোটরবাইকে থেকে ফেলে কামড়ে-আঁচড়ে জখম করে ওই হনুমান। তার পরে ফের প্রশ্ন ছড়ায় গ্রামে— ‘কবে এই উপদ্রব শেষ হবে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy