Advertisement
E-Paper

ভোট-পরবর্তী হামলার নালিশ শাসকের বিরুদ্ধে

বৃহস্পতিবার রাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির শাসকদলের দিকেই। বিজেপি-র দাবি, ভোট-পরবর্তী এই ‘হিংসা’র জন্য পুলিশ-প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ও।

বৃহস্পতিবার রাতে সিউড়ির চাংগুরিয়া গ্রামে পুলিশের পাহারা।

বৃহস্পতিবার রাতে সিউড়ির চাংগুরিয়া গ্রামে পুলিশের পাহারা। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২৩ ০৯:১০
Share
Save

পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে অশান্তির পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, তার জন্য দলের সর্বোচ্চ স্তর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। তার পরেও অশান্তি থামার লক্ষণ নেই। বীরভূমেও প্রায় প্রতিদিনই অশান্তির অভিযোগ সামনে আসছে।

বৃহস্পতিবার রাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির শাসকদলের দিকেই। বিজেপি-র দাবি, ভোট-পরবর্তী এই ‘হিংসা’র জন্য পুলিশ-প্রশাসনের ‘নিষ্ক্রিয়তা’ও। খয়রাশোল পঞ্চায়েতের ময়নাডাল গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। তৃণমূলের দুষ্কৃতী বাহিনীও সঙ্গে ছিল দাবি করে দলের মহিলা সমর্থকদের উপরে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের। একই অভিযোগ উঠেছে সিউড়ি ১ ব্লকের মল্লিকপুর পঞ্চায়েতের চাঙ্গুরিয়া গ্রামে। সেখানেও বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকার বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। জেলা পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য নেই।’’

৮ তারিখ, ভোটের দিনেও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ময়নাডাল গ্রাম। সেদিন ওই গ্রামে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর এবং পুলিশ আধিকারিকদের আটকে রাখার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজেই বৃহস্পতিবার পুলিশ গ্রামে গিয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তবে পুলিশের দাবি, সেখানে কাউকে আঘাত করা বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। যাঁদের খোঁজে গ্রামে যাওয়া হয়েছিল, তাঁরা পলাতক বলে জানা গিয়েছে।

যদিও এ দিন সকালে ময়নাডাল থেকে ব্যাগপত্র নিয়ে বহু মহিলা চলে আসেন সিউড়িতে, বিজেপি জেলা কার্যালয়ে। তাঁদের দাবি, লাগাতার হুমকি ও সন্ত্রাসের হাত থেকে বাঁচতেই দলীয় কার্যালয়ে আসার সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তারা। ময়নাডাল থেকে আসা তরুলতা মাল, কাকলি মাল বলেন, “আমাদের উপর লাগাতার অত্যাচার চলছে। ক্রমাগত ভয় দেখানো হচ্ছে। তৃণমূলের কথায় পুলিশ এসে ঘর ভাঙচুর করছে৷ আমরা গ্রামে একেবারেই নিরাপদ বোধ করছি না।”

অন্য দিকে, চাঙ্গুরিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার বিজেপির একটি পতাকা ছেঁড়া নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত হয়। বচসা ক্রমেই হাতাহাতির চেহারা নেয়। সিউড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি সাময়িক নিয়ন্ত্রণে আনলেও রাতে ফের দু’দলের গোলমাল বাধে। বিজেপি কর্মীদের ঘরে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের অভিয়োগ, বিজেপি কর্মীর লাঠির ঘায়ে তাদের এক কর্মীর কানের লতি ছিঁড়ে গিয়েছে। এর পরেই গ্রামে প্রায় সারারাত টহলদারি চালায় বিরাট পুলিশ বাহিনী। দু’পক্ষের ৪ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ধৃতদের শুক্রবার আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহার দাবি, “গোটা বীরভূম বারুদের স্তূপের উপরে বসে আছে। পুলিশের সঙ্গে তৃণমূলের যোগসাজশেই এই ঘটনা ঘটছে। আমরা কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। যে-ভাবে আমাদের তফসিলি জাতির কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন, সেই বিষয়ে আমরা এসসি কমিশনেরও দ্বারস্থ হব।” তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “শুভেন্দু অধিকারীর নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসাকে প্রতিষ্ঠা দেওয়ার জন্য এবং তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার জন্য বিজেপি ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যা প্রচার করছে। প্রশাসন সর্বতো ভাবে চেষ্টা করলেও বিজেপির এই লাগাতার অপপ্রচারে তারাও কিছুটা বিব্রত বোধ করছে৷ আমরা চাই, এই অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সমাজের শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষজন এগিয়ে আসুন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

West Bengal Panchayat Election 2023 Suri Post Poll Violence

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}