Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
তৃণমূলে দ্বন্দ্ব

হাসপাতালেই মারপিটে জড়ালেন নেতা-কর্মীরা

বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই তাঁদের মাটি না ছাড়ার লড়াই চলছিল। কখনও-সখনও দুই যুযুধান প্রার্থীর অনুগামীদের মধ্যে হাতাহাতিও লাগছিল। তৃণমূলের শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে শেষ পর্যন্ত হারিয়ে ভোটে জেতেন কংগ্রেসের তুষারকান্তি ভট্টাচার্য।

বিষ্ণুপুর হাসপাতালে। ছবি: শুভ্র মিত্র।

বিষ্ণুপুর হাসপাতালে। ছবি: শুভ্র মিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৩
Share: Save:

বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই তাঁদের মাটি না ছাড়ার লড়াই চলছিল। কখনও-সখনও দুই যুযুধান প্রার্থীর অনুগামীদের মধ্যে হাতাহাতিও লাগছিল। তৃণমূলের শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে শেষ পর্যন্ত হারিয়ে ভোটে জেতেন কংগ্রেসের তুষারকান্তি ভট্টাচার্য। তিনি এখন তৃণমূলে নাম লেখানোয় শ্যাম-তুষার এখন এক দলে, কিন্তু লড়াই থেমে নেই।

শনিবার রাতে বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত তালড্যাংরা থানার ঢেমনামারা গ্রামে কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল দলেরই একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ শ্যামবাবুর অনুগামীরা তুষারবাবুর অনুগামী বলে পরিচিত ইরফান দালাল ও সাহেবজান মণ্ডলকে মারধর করেছেন। রবিবার সকালে তাঁদের বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি করতে এলে হাসপাতাল চত্বরেই দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে ফের মারপিট বাধে। তার আগে শহরের রাস্তাতেও মারপিট চলে। শাসকদলের কর্মীদের এই দফায় দফায় হামলায় ছুটির দিনে বিষ্ণুপুর শহরে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। বিশেষত হাসপাতাল চত্বরে সংর্ঘষের সমালোচনা করেছেন অনেকেই।

হাসপাতালে সংঘর্ষে শ্যামবাবুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ তুলেছেন বাঁকুড়া জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সিংহ ও দলের জেলা কমিটির সদস্য অরুণ সরকার। কয়েকজন পুলিশ কর্মী এলে তাঁদের সামনেই মারধর চলে। এরপর মোটরবাইকে চেপে একদল হামলাকারী পালায়। অন্যদিকে, রবীন্দ্র স্ট্যাচু এলাকায় তুষারবাবুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ তুলেছেন শ্যামবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিষ্ণুপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি শমীক পাল। দু’পক্ষেরই অন্তত পাঁচজন ভর্তি হন হাসপাতালে। এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) লাল্টু হালদার বলেন, ‘‘দু’পক্ষ থেকেই অভিযোগ এসেছে। কাউকেই ছেড়ে দেওয়া হবে না। তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’

মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি অভিজিৎ ও অরুণবাবুর অভিযোগ, ‘‘কেন আমরা জখমদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে এসেছি, তা জানতে চেয়ে শ্যামবাবুর অনুগামীরা মোটরবাইকে এসে প্রথমে রবীন্দ্র স্ট্যাচুতে চড়াও হয়। পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেও রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটায় ওরা। আমরা ১০ জনের বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।’’

এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর জরুরি বিভাগে ঢুকে হাসপাতালে ভর্তি হন শমীকবাবু। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘রবীন্দ্র স্ট্যাচু এলাকায় আমাকে মোটরবাইক থেকে নামিয়ে ঢেমনামারা গ্রামের কিছু লোক মারধর করেছে। পুলিশকে বিস্তারিত জানিয়েছি।’’

ঢেমনামারা গ্রাম থেকে এসে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ইরফান দালাল, সাহেবজান মণ্ডল জানান, ভোটে তাঁরা তুষারবাবুর হয়ে খেটেছিলেন বলে তাঁদের উপরে হামলা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘শনিবার মাঝরাতে লাঠি, রড নিয়ে জনা আটেক লোক হামলা চালায়।’’ ইরফানের আরও অভিযোগ, ‘‘আমার স্ত্রী পিয়ারজান বিবিকেও ওরা মারধর করেছেন। বাড়িতেই চিকিৎসা করাচ্ছি। পুলিশকেও ঘটনার কথা জানিয়েছি।’’

তুষারবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘মারাত্মক ঘটনা। হাসপাতালে জখমদের চিকিৎসা করাতে গিয়ে দলের জেলা নেতারাও মার খেল! আমি এসডিপিওকে জানিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’ তবে শ্যামবাবুর কাছে এ বিষয়ে জানার চেষ্টা করে বারবার ফোন বেজে গেলেও তিনি ধরেননি।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC clash
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy