পড়ায় মন। নিমাই পণ্ডিতের পাঠশালা। নিজস্ব চিত্র।
এক এক্কে এক, দুই এক্কে দুই/ নামতা পড়ে ছেলেরা সব পাঠশালার ওই ঘরে... এমনই এক পাঠশালা ভরসা জোগাচ্ছে বাঁকুড়া সীমানা ঘেঁষা পুরুলিয়ার পুঞ্চা থানার জনজাতি অধ্যুষিত ছোটোসাগেন গ্রামে। স্কুলের পরে স্কুলের মতো করেই পড়া বুঝিয়ে দেওয়া হয় এখানে। এ ভাবেই আদিবাসী-জনজাতি পড়ুয়াদের হাত ধরছে নিমাই পণ্ডিতের পাঠশালা।
ছোটোসাগেন গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন দু’জন শিক্ষক এবং ৩২ জন পড়ুয়া। পড়ুয়াদের বেশিরভাগই প্রথম প্রজন্মের শিক্ষার্থী। স্থানীয় বাসিন্দা শীতল সিং, হিমাংশু মাঝি জানালেন, গ্রামের ৭২টি পরিবার আদিবাসী জনজাতিভুক্ত। গৃহশিক্ষক রাখার আর্থিক ক্ষমতা তাঁদের নেই। বাড়িতে ছেলেমেয়েদের পড়া বুঝিয়ে দেওয়ারও তেমন কেউ নেই বললেই চলে। সেই পড়ুয়াদের জন্যই গ্রামের স্কুলে নিজের খরচে পাঠশালা অর্থাৎ একটি কোচিং সেন্টার খুলেছেন বাঁকুড়ার সিমলাপালের লক্ষ্মীসাগর গ্রামের নিমাই চক্রবর্তী। পাঠশালার দুই শিক্ষিকার সাম্মানিক ভাতার দায়িত্বও নিয়েছেন তিনি।
ছোটোসাগেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পার্থ রায়ের সঙ্গে একটি রক্তদান শিবিরে আলাপ হয় নিমাইয়ের। সেই সূত্রে বছর খানেক আগে তিনি গ্রামের স্কুলে এসেছিলেন। নিমাই বলেন, “পড়াশোনা কত সহজ করা যায় তা এই স্কুলে না এলে অজানাই থাকত। পড়ুয়াদের উন্নতির জন্যই পাঠশালা চালু করেছি।”
গ্রামের স্কুলের টিচার ইনচার্জ পার্থ রায় জানালেন, ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে স্কুল চত্বরে প্রত্যেক দিন সকালে পড়ুয়াদের ইংরেজি, অঙ্ক, বাংলা-সহ সব বিষয় আলাদা ভাবে পড়ানো হয়। সহ-শিক্ষক পথিক আচার্য বলেন, “পাঠশালায় পড়ুয়ারা আগের দিনের পড়া ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পায়। ওদের অভাবনীয় উন্নতি দেখতে পাচ্ছি।” মানবাজার ৩ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক নন্দদুলাল সিংহ জানান, ছোটোসাগেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠনপাঠনের মান ভাল। অবৈতনিক পাঠশালা চালু হওয়ায় পড়ুয়ারা উপকৃত হচ্ছে।
ছোটোসাগেন বাদেও পার্শ্ববর্তী গ্রামের পড়ুয়ারাও ভিড় জমাচ্ছে এই পাঠশালায়। শেখার উৎসাহ, শেখানোর অদম্য ইচ্ছে, এই নিয়েই এগোচ্ছে নিমাই পণ্ডিতের পাঠশালা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy