ঘটনাস্থলে: এই ফলকেই চাপা পড়ে মৃত্যু হয় শিশুটির। নিজস্ব চিত্র
রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের একটি সিমেন্টের ফলকের নীচে চাপা পড়ে মৃত্যু হল দু’বছরের শিশুর। মঙ্গলবার বিকেলে পুরুলিয়ার জয়পুর থানা এলাকার নারায়ণপুরের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মঙ্গলি মাহাতো এবং আর এক শিশু ফলকটির সামনে খেলছিল। তখনই সেটি ওই শিশুর উপরে ভেঙে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকের উপরকাহান পঞ্চায়েত নারায়ণপুর গ্রামের ঠুঠকুবাদ টোলায় একটি কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণ করবে। নির্মাণ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য লেখা ছিল ওই ফলকে। সাড়ে তিন ফুট উঁচু এবং প্রায় তিন ফুট চওড়া ফলকটি দিন পনেরো আগে বসানো হয়েছিল।
দুর্ঘটনার কোনও প্রত্যক্ষদর্শী নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে মঙ্গলির বাবা বাজারি মাহাতোর দাবি, ‘‘দুর্ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। মেয়ের সঙ্গে আরও এক শিশু ছিল। ফলকটির কাছেই ওরা খেলছিল। খেলার মাঝেই মেয়ের উপরে ফলকটি পড়ে যায়। ওর নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বেরচ্ছিল। স্থানীয় কয়েকজন ওকে পুরুলিয়া হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ওকে বাঁচানো যায়নি। হাসপাতালে পৌঁছনোর পরেই চিকিৎসকেরা মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। যদিও প্রশ্ন উঠেছে, নির্মাণের কয়েক দিনের মধ্যে কেন ভেঙে পড়ল ফলকটি। তবে কি নির্মাণে কোনও ত্রুটি ছিল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় পঞ্চায়েত রাস্তা নির্মাণের দায়িত্বে ছিল। রাস্তা নির্মাণের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা ফলকটি বসিয়েছিল।
চেষ্টা করেও এই ঘটনা সম্পর্কে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। যদিও বিডিও (জয়পুর) বিশ্বজিৎ দাস জানান, ওই ঘটনা সম্পর্কে রিপোর্ট তলব করবেন পঞ্চায়েতের থেকে। বিডিও-র প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাস্তা নির্মাণের বিবরণ লেখা সিমেন্টের ফলক চাপা পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর শুনেছি। খুবই মর্মান্তিক ঘটনা। গ্রাম পঞ্চায়েত ওই গ্রামে কংক্রিটের রাস্তা তৈরির দায়িত্বে ছিল। পঞ্চায়েতের থেকে রিপোর্ট চাইব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওই ঘটনার পরেই ব্লকের সমস্ত পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ওই ধরনের ফলক নির্মাণের সময় সতর্ক থাকতে হবে।’’
জেলা পরিষদের পূর্ত বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ হলধর মাহাতোর জানান, পঞ্চায়েত সমিতির থেকে ওই ঘটনা সম্পর্কে রিপোর্ট চাওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। শিশুটি ফলকের নীচে চাপা পড়ল কী ভাবে তা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির থেকে জানতে চাইব। এ ধরনের ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy