Advertisement
৩০ ডিসেম্বর ২০২৪
Bankura

হাঁসদাবাড়ি যেন ভাঙা হাট

বিভীষণবাবু বলেন, “আমার দারিদ্রের কথা বিজেপি নেতারা জানেন। এখন যদি কিছু সুরাহা হয়, তা হলে মঙ্গল হয়।”

শামিয়ানা খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চতুর্ডিহি গ্রামে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

শামিয়ানা খুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। চতুর্ডিহি গ্রামে। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় 
শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২০ ০৩:৫২
Share: Save:

দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আগমনকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরেই সাজো-সাজো রব ছিল গ্রামে। কলতলা থেকে শুরু করে মুদির দোকান— সর্বত্রই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়েই আলোচনা। সপার্ষদ মন্ত্রী এলেন। থাকলেন আধ ঘণ্টারও বেশি। তবুও তাঁকে দেখার সাধ মিটল না বাঁকুড়া ১ ব্লকের চতুর্ডিহি গ্রামের বহু বাসিন্দারই। যা নিয়ে শুক্রবারও খেদ ঝরে পড়ল অনেকেরই গলায়য়।

বৃহস্পতিবার চতুর্ডিহি গ্রামের বাসিন্দা বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ সারেন শাহ। বিভীষণবাবুর পড়শি নিরুলা হেমব্রমের আক্ষপ, “কেন্দ্রের মন্ত্রীকে দেখব বলে কত আশা করেছিলাম। তবে মন্ত্রী যখন এলেন, তখন আমি মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়েছিলাম। তাঁর আসার খবর পেয়েই দৌড়ে গরু নিয়ে গ্রামে ফিরছিলাম। তবে মোড়ের মাথায় পুলিশ আটকে দিল। গ্রামে ঢুকতেই পারলাম না। আফশোস থেকেই গেল।”

বিভীষণবাবুর বাড়ির মূল দরজার ঠিক উল্টো দিকে থাকেন বৃদ্ধা চঞ্চলা মুর্মু। তাঁর আক্ষেপ, “একে চোখে কম দেখি। তার উপরে মন্ত্রী আসতেই যেই বাড়ির দরজা খুলেছি, পুলিশ দৌড়ে এসে আমাকে বাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে দিল। যতক্ষণ মন্ত্রী ছিলেন ততক্ষণ বেরোতেই দেয়নি।” ধানের গোলা তৈরির জন্য বিভীষণবাবুর বাড়ির অদূরে একটি ফাঁকা জায়গা পরিষ্কার করার কাজ করছিলেন স্বদেশি হাঁসদা, পুষ্পলতা হাঁসদা, মামণি হেমব্রমেরা। তাঁদের আক্ষেপ, “দূর থেকে কোনও ভাবে তাঁকে একটু দেখতে পেলাম। তাতে কি আর মন ভরে? ভেবেছিলাম, কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাব।”

এ দিন বিভীষণবাবু বাড়ির অবস্থা খানিকটা ভাঙা হাটের মতো। শাহের আগমনের জন্য বাড়ির উঠোনে বাঁশ বেঁধে শামিয়ানা টাঙানো হয়েছিল। এ দিন সে সব খোলা হচ্ছিল। বিভীষণবাবুর স্ত্রী মণিকাদেবী বলেন, “এই ক’দিন বাড়িতে যা হইহই কাণ্ড হল! আজ খুব ফাঁকা লাগছে।” তাঁর বড় মেয়ে রচনা ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। তিনি জানান, প্রতি মাসে ছ’হাজার টাকার ওষুধ লাগে রচনার। মণিকাদেবী বলেন, “আবার সেই গতানুগতিক জীবন শুরু হল। প্রতি মাসে মেয়ের ওষুধের টাকা জোগাড় করাটাই আমাদের প্রধান চিন্তা-ভাবনা। সে জন্য আবার দিনমজুরি শুরু করতে হবে।”

রচনা দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সে বলে, “উচ্চশিক্ষিত হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে আমার। তবে শারীরিক ভাবে আমি দুর্বল। বাবার আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়।” বিভীষণবাবু বলেন, “আমার দারিদ্রের কথা বিজেপি নেতারা জানেন। এখন যদি কিছু সুরাহা হয়, তা হলে মঙ্গল হয়।” তাঁর বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজনের দায়িত্বে থাকা বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের আশ্বাস, ‘‘শুধু বিভীষণবাবুই নয়, ওই গ্রামের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রা যাতে ভাল করা যায়, সে দিকে আমাদের নজর রয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bankura Amit Shah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy