এই গাড়ি ঘিরেই বিতর্ক। রবিবার বিকেলে। নিজস্ব চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারীর সভাস্থলে দলীয় পতাকা লাগানো গাড়ি নিয়ে তৃণমূল নেতার ঢুকে পড়াকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা পাকাল পুরুলিয়ার কাশীপুরে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার বিকেলে কাশীপুরের হাটতলা মোড়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে গোলমালে জড়িয়ে পড়েন ওই তৃণমূল নেতা।
নন্দীগ্রামের সভার পরে কাশীপুরে ফের শুভেন্দুর সভায় গোলমাল বাধল। সে প্রসঙ্গ টেনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবু জনপ্রিয় নেতা। তাই তাঁকে বিজেপি নেতৃত্বের অধিকার দিয়েছে। তিনি জেলায় জেলায় ঘুরে সভা করছেন। যাঁরা তৃণমূলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বিজেপিতে আসতে চাইছেন, তাঁদের যোগদানও করাচ্ছেন। এই ভাবে উনি তৃণমূলের ভিত নড়িয়ে দিচ্ছেন। সেটা তৃণমূল নেতৃত্ব সহ্য করতে পারছেন না। তাই বার বার ওঁর কর্মসূচিতে ঝামেলা করা হচ্ছে, ওঁকে কালো পতাকা দেখানো হচ্ছে। এটা হচ্ছে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পূর্ব লক্ষণ।’’
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর দাবি, ‘‘কাশীপুরে কী ঘটেছে, জানি না। তবে তৃণমূল নয়, বিজেপি ভরাডুবির ভয় পাচ্ছে বলেই, এমন ভাবে নেমেছে, যেন নির্বাচন ঘাড়ের কাছে চলে এসেছে।’’
এ দিন কাশীপুরে শুভেন্দুর রোড শোয়ের শেষে সভা হয়। মঞ্চে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী, পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন সাংসদ নরহরি মাহাতো-সহ জেলা স্তরের একাধিক নেতা। বিকেল সাড়ে চারটের ঠিক পরেই সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো তখন বক্তব্য রাখছিলেন।
সে সময় কল্লোলির দিক থেকে তৃণমূল নেতার ওই গাড়ি হর্ন বাজাতে বাজাতে সরাসরি ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। গাড়িতে থাকা লোকজন বিজেপির কর্মীদের রাস্তা ছেড়ে দিতে বলে। কেউ কেউ উঠেও পড়লেও কয়েক জন গাড়িটিকেই ফিরে যেতে বলেন।
সে সময় তৃণমূলের আদ্রা শহর কমিটির সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে গাড়ি থেকে নেমে দলীয় পতাকা উঁচু করে তুলে ধরে তা নাড়াতে থাকেন।
অভিযোগ, এরপরেই ধনঞ্জয়বাবু ও তাঁর এক সহযাত্রীর সঙ্গে সভায় থাকা কয়েক জনের হাতাহাতি শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে কিছু লোকজন গাড়ি ঘিরে ধরেন। অভিযোগ, গাড়িতে ঢিল পড়ে, পতাকার লাঠি খুলে কেউ গাড়ির কাচের উপরে আঘাত করেন।
মঞ্চ থেকে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোকে বলতে শোনা যায়, ‘‘পুলিশকর্মী যাঁরা আছেন, আমাদের স্বেচ্ছা সেবকেরা যাঁরা আছেন, দয়া করে গাড়িটাকে বের করে দিন। রাস্তা করে দিন। কেউ বিশৃঙ্খলা করবেন না।’’ ঝামেলা চলার মাঝেই দ্রুত গাড়িতে উঠে যাত্রীরা সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
মাইক হাতে নিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এটা বিজেপির ঘোষিত কর্মসূচি। পুলিশের অনুমতি নেওয়া আছে। এই সভার মধ্যে স্থানীয় পুলিশের তো দেখা সাক্ষাৎ নেই।’’
এরপরেই তিনি পুলিশকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘এই মিটিংগুলো দেখে ওঁদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। বন্ধু ওঁদের উড়তে দিন। কতটা ওড়ে উড়তে দিন। আর কিছু দিনের মধ্যেই ‘মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট’ চালু হবে। ইলেকশন কমিশন নামবে। তখন কিন্তু পোলিং এজেন্ট দেওয়ার মতো লোক তৃণমূল প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির লোকেরা পাবেন না।’’ পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, যথেষ্ট সংখ্যায় তারা ছিল।
তৃণমূলের আদ্রা শহর কমিটির সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবের অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা পিকনিকে গিয়েছিলাম। বিজেপির সভা বেলা ১টায় হবে বলে খবর ছিল। বিকেলে সভা শেষ হয়ে গিয়েছে ভেবে মূল রাস্তা ধরে ফিরছিলাম। বিনা প্ররোচনায় বিজেপির লোকজন আমাদের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘ঝামেলা করে যে গতিতে ভিড়ের মধ্যে দিয়ে চালিয়ে গাড়িটা বেরিয়ে গেল, কাউকে পিষে দিতে পারত।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু বলেন, ‘‘কাশীপুরে কী ঘটেছে খোঁজ নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy