মন্ত্রীর সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র
দলের নির্দেশে আগেই জানিয়েছিলেন বুধবার তিনি পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। এ দিন দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো ও রঘুনাথপুরের বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউরিকে সঙ্গে নিয়ে মহকুমাশাসকের অফিসে গিয়ে রঘুনাথপুরের পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন ভবেশ চট্টোপাধ্যায়। এসডিও-র দায়িত্বে থাকা মহকুমা প্রশাসনের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সুদেষ্ণা দে মৈত্রের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। যদিও পরে তা পুরসভার কাছে পাঠিয়ে দেয় মহকুমা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী, পুরসভাতেই পদত্যাগপত্র দেওয়ার কথা পুরপ্রধানের। তাই দুপুরেই ওই পদত্যাগপত্র পুরসভায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সুদেষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, সাত দিনের মধ্যে পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য সভা ডাকার কথা পদত্যাগী পুরপ্রধানের। তিনি সভা না ডাকলে সেই সভা ডাকবেন উপপুরপ্রধান। বিষয়টি পুরসভাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’
পুরসভার মেয়াদ শেষের ছ’মাস আগে আচমকা পুরপ্রধান ভবেশের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন তৃণমূলের সাত কাউন্সিলর। এতে দলের ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসে পড়ায় তড়িঘড়ি পরের দিনই সমস্ত কাউন্সিলরকে নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূলের তরফে পুরুলিয়ার পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী মলয় ঘটক ও জেলা সভাপতি।
তাঁদে,র হস্তক্ষেপে অনাস্থা প্রত্যাহার করলেও বিক্ষুব্ধ সাত কাউন্সিলর ভবেশকে পুরপ্রধানের পদ থেকে সরানোর দাবিতে অনড় থাকেন। ১ নভেম্বর সবাইকে নিয়ে কলকাতায় ফের বৈঠকে বসেন জেলার দুই দলীয় পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও মলয় ঘটক। সেখানে দুই পর্যবেক্ষক পুরপ্রধানের পদ থেকে ভবেশবাবুকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দেন। তাঁরা জানান, ভবেশবাবুকে দলের ‘বড়’ দায়িত্ব দেওয়া হবে।
এ দিন এক প্রকার মিছিল করেই ভবেশের সঙ্গে গিয়েছিলেন তাঁর অনুগামীরা। পদত্যাগ করে ভবেশ যখন বেরোচ্ছেন, তখন তাঁর নাম ধরে স্লোগান দিতে শোনা যায় অনুগামীদের। তবে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের তোলা দুর্ব্যবহার করা, উন্নয়ন করতে না পারার মতো অভিযোগগুলি উড়িয়ে দিয়ে ভবেশবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যদি কাজ না করে থাকি, যদি কর্মীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে থাকি, তা হলে এত কর্মী-সমর্থক আমার সঙ্গে এলেন কেন?’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পদত্যাগপত্রে তিনি ইস্তফা দেওয়ার কারণ হিসেবে নিজের শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেছেন। ভবেশ দাবি করেন, ‘‘শারীরিক সমস্যার জন্য আগেই পুরপ্রধানের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে দলকে চিঠি দিয়েছিলাম। কিছুটা সুস্থ হয়ে ফের দলের কাজে পুরো সময় দেব।” জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘রঘুনাথপুর পুরসভায় দলের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তা মিটে গিয়েছে। ভবেশকে জেলায় যুব সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব দিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে।’’
এ দিকে, পরবর্তী পুরপ্রধান নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন ভবেশের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে আসা সাত কাউন্সিলর। তাঁদের অন্যতম প্রাক্তন পুরপ্রধান মদন বরাট বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভবেশ পুরপ্রধান পদের নির্বাচনের জন্য সভা না ডাকলে উপপুরপ্রধানই সে সভা ডাকবেন।” দলের একটি সূত্রের খবর, পরবর্তী পুরপ্রধানের পদের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন মদনবাবু। তিনি বলেন, ‘‘দল পুরপ্রধানের দায়িত্ব দিলে অবশ্যই তা পালন করতে প্রস্তুত আছি।” তবে কে শেষ পর্যন্ত পুরপ্রধান হবেন, তা এখনও স্থির হয়নি বলে দাবি করছেন জেলা সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে দলের মধ্যে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy