প্রলয় নায়েক। নিজস্ব চিত্র
দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত না-থাকলে ‘আঙুল বাঁকানোর’ হুঁশিয়ারি এবং বিপক্ষ রাজনৈতিক দলের শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকদের নামের তালিকা চেয়ে বিতর্কে জড়ালেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক। রবিবার সিউড়ি রবীন্দ্রসদনে আয়োজিত তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির বর্ধিত কর্মিসভা রুদ্ধদ্বার কক্ষে হলেও, ওই সভায় সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি তথা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির বক্তব্যের অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে এসেছে। তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার। ওই ক্লিপে থাকা বেশ কিছু বক্তব্যকে ঘিরেই আপত্তি তুলেছেন বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে যুক্তরা। প্রলয়বাবু অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে।
প্রলয়বাবু জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দায়িত্ব নেওয়ার আগে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি ছিলেন। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে এ দিন শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের বর্ধিত কর্মিসভা ডাকা হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র। ছিলেন শিক্ষক সমিতির জেলা কমিটির কর্মকর্তারা। মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা নেতৃত্ব ও জেলার ৩২টি চক্রের প্রতিটি থেকে আগত বাছাই শিক্ষক নেতারা। অডিও ক্লিপ অনুযায়ী, সংগঠন মজবুত করার বার্তা দিতে গিয়েই ‘বিতর্কিত’ কিছু মন্তব্য করে বসেন প্রলয়বাবু।
চক্র ধরে ধরে শিক্ষক সংগঠনের হাল হকিকতের খবর নিতে গিয়ে ময়ূরেশ্বর চক্র আসতেই প্রলয়বাবু বলে বসেন, ‘‘ময়ূরেশ্বর চক্রে সিপিএমের লোক যাঁরা বিজেপি করছেন, সেই সমস্ত শিক্ষক কোন স্কুলে রয়েছেন সামনের সপ্তাহে সেই তালিকা অরিন্দম বসুকে (তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি) দেবেন। ১৫ দিনের মধ্যে ড্রাফটিং করে দিচ্ছি।’’ এখানেই শেষ নয়। যোগ করেন, ‘‘চাওয়া পাওয়া নিয়ে ঐক্যমঞ্চ বা উস্থি কোনও কিছু চলবে না। বীরভূমে প্রাথমিক লেভেলে যত শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন, প্রত্যেককে একসঙ্গে থাকতে হবে। যাঁরা থাকবেন না, বা যাঁরা বেগরবাই করছেন জেলা কমিটিকে বলব সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকাও।’’
এই নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জেলা এবিপিটিএ-এর জেলা সম্পাদক আশিস বিশ্বাস, নেতা মতিউর রহমানরা। তাঁরা বলছেন, ‘‘সব সময়, সব ক্ষেত্রে বিরোধী শূন্য করতে হবে সেটা তো ওঁদের দলনেত্রীই বলে থাকেন। সেই দলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা এমন কথা বলবেন তাতে আশ্চর্য নই। তবে চেয়ারম্যান হিসেবে বলে থাকলে অত্যন্ত আপত্তিকর।’’ একই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপির শিক্ষক সেলের আহ্বায়ক মোহন সিংহ। তিনি বলছেন, ‘‘এক জন শিক্ষিক কোন সংগঠন করবেন, সেটা তিনিই ঠিক করবেন। এটা তাঁর অধিকার। সংগঠনের কাজ সকলকে কাছে ডাকা। এ ভাবে জোর করে হুমকি দিয়ে কাউকে দলে টানা যাবে না।’’ যদিও তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে বলে দাবি প্রলয়বাবুর। তিনি বলছেন, ‘‘প্রাথমিক বা বুনিয়াদি শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়ুয়াদের প্রতি যে দায়িত্ব এক জন শিক্ষকের থাকা উচিত, সেই দায়িত্ব অনেকেই পালন করছেন না। তার অনেক প্রমাণ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গ ধরে বলতে গিয়ে কিছু কথা উঠেছে। তৃণমূল বা বিরোধী সংগঠন বলে আলাদা কিছু বলা হয়নি। বলা হয়েছে মানসিকতার পরিবর্তন আনতে। আত্মসমালোচনা করতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy